মেহেরপুর জেলা প্রতিনিধি,মোঃ কামাল হোসেন খাঁনঃ চলতি মৌসুমে মেহেরপুরে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অধিক জমিতে ভুট্টা চাষ করেছেন কৃষকরা। বিগত বছরগুলোর চেয়ে এবার জেলায় ভুট্টার চাষ বৃদ্ধি পেয়েছে। অন্য ফসলের তুলনায় কম পরিশ্রম ও অধিক লাভজনক হওয়ায় মেহেরপুরের চাষিরা ঝুঁকে পড়েছেন ভুট্টা চাষে। এক সময় যেখানে ধান, গম, তামাক চাষ হতো এখন সেখানে চাষিরা ভুট্টার চাষ করেছেন। ভালো ফলন, ফসলের চাহিদা এবং ভুট্টা গাছ থেকে জ্বালানির চাহিদা পূরণ হওয়ায় মেহেরপুরের চাষিরা ভুট্টা চাষে মনোনিবেশ করেছেন।
কৃষি অফিসের সহযোগিতা, পরামর্শ ও আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার ভুট্টার ভালো ফলনেরও আশা করছেন মেহেরপুর জেলার চাষিরা। বর্তমান বাজার দামেও খুশি তারা। প্রতিটি গাছে ১-৩ টি করে ভুট্টার মোচা হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে বিঘা প্রতি জমিতে ৫৫-৬৫ মণ ফলনের আশা করছেন চাষিরা।
কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী মেহেরপুর জেলায় এবার ভুট্টা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ১৪ হাজার ৫’শ হেক্টর। কিন্তু চাষ হয়েছে ১৮ হাজার হেক্টর জমিতে। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৩ হাজার ৫’শ হেক্টর বেশি।
মেহেরপুর সদর, গাংনী ও মুজিবনগর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ভুট্টা চাষিদের সাথে আলাপকালে তিনারা জানান, কয়েক বছর গম আবাদে ফলন বিপর্যয় ঘটেছে। এছাড়া তামাক চাষের তুলনায়ও ভুট্টা চাষ খরচ ও পরিশ্রম বিবেচনায় সুবিধাজনক আবাদ। তাই ভুট্টা চাষে আগ্রহী হয়েছি।
মাইলমারী গ্রামের ব্যবসায়ী ইমরাজ বিশ্বাস জানান, ভুট্টার বর্তমান বাজার দাম প্রতি মণ ১ হাজার ৫’শ টাকা থেকে ১ হাজার ৭’শ টাকা। সেক্ষেত্রে ভরা মৌসুমে ৯’শ টাকা থেকে ১ হাজার ২’শ টাকা দরে বিক্রি করতে পারলে ভালো লাভবান হওয়া সম্ভব।
একই গ্রামের জিল্লুর রহমান জানান, ১০ কাঠা জমিতে ভুট্টার আবাদে খরচ হয়েছে ৮ হাজার টাকা। যেখানে ২৫/২৮ মণ ভুট্টা উৎপাদন হতে পারে।
কসবা ভাটপাড়া এলাকার তারিকুল ইসলাম জানান, আমাদের এলাকায় ব্যাপক পরিমাণে ভুট্টার আবাদ হয়েছে। পিয়াজের আবাদ করে তেমন মুনাফা না হওয়ায় অনেকেই ভুট্টা চাষ করছেন।
ভাটপাড়া গ্রামের মারুন রশিদ জানান, ভুট্টার আবাদে রোগবালাই ও লস নাই। তাছাড়া ভুট্টার বাজারমূল্য ভালো হওয়ায় অনেকেই ভুট্টা চাষে ঝুঁকেছেন।
মেহেরপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শঙ্কর কুমার মজুমদার জানান, এবার ভুট্টা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১ লক্ষ ৮০ হাজার মেঃ টন। আবহাওয়া অনুকূলে রয়েছে। যার ফলে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।