মোঃ কামাল হোসেন খাঁন,মেহেরপুর জেলা প্রতিনিধিঃ আম বাগান এলাকায় এখন মৌ মৌ গন্ধ। যে কারো প্রাণ জুড়িয়ে যাবে। মুকুল থেকে গাছে গুটি আসা শুরু না করলেও বাগান পরিচর্যায় এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন মেহেরপুরের বিভিন্ন এলাকার বাগান মালিক ও ব্যবসায়ীরা।
আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবারও আমের ভালো ফলনের আশা করছেন স্থানীয় কৃষি বিভাগ। সু-স্বাদু আর বাহারী জাতের আমের কথা উঠলেই চলে আসে মেহেরপুরের নাম। রাজশাহী ও চাপাইনবাবগঞ্জ জেলাকে আমের জন্য বিখ্যাত বলা হলেও ইতিমধ্যেই আম প্রধান অঞ্চল হিসাবে খ্যাতি অর্জন করেছে মেহেরপুর জেলা। গত কয়েক বছরে দেশ ও বিদেশে বেশ সুনাম অর্জন করেছে এ জেলার আম।
মেহেরপুরের কৃষকরা জানান, বিগত বছরের তুলনায় এবার আমের মুকুল খুব বেশি ভাল না হলেও মোটামুটি হয়েছে।
গত কয়েকদিনে সরেজমিনে জেলার মুজিবনগর আম্রকানন, আনন্দবাস, কেদারগঞ্জ, ভবেরপাড়া, নূরপুর, মহাজনপুর, আশরাফপুর, আমদহ, বারাদী, পিরোজপুর, সোনাপুর, বলিয়ারপুর, আমঝুপি, হিজুলী, গোভীপুর, হরিরামপুর, উজলপুর, কাথুলী, কুতুবপুর, শ্যামপুর, রামনগর, পশ্চিম মালশাদহ, চৌগাছা, চেংগাড়া, জোড়পুকুরিয়া, ধর্মচাকী, ভোমরদহ, হিজলবাড়ীয়া, হিন্দা, পলাশীপাড়া, তেঁতুলবাড়ীয়া, কাজীপুর, হাড়াভাঙ্গা, বেতবাড়ীয়া, চর গোয়ালগ্রাম, মটমুড়া, ভবানীপুর, হোগলবাড়িয়া, মহাম্মদপুর, সহড়াতলা, মাইলমারী, নওপাড়া, বামুন্দী, গোপালনগর, সাহারবাটী, গাঁড়াডোব, ধানখোলা ও জুগিরগোফাসহ কয়েকটি গ্রামের বাগান মালিক ও ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে তিনারা জানান, মাঘের শুরুতে আম গাছের ডালে ডালে মুকুল ফুটতে শুরু করে। তখন থেকেই আমরা মুকুলের পরিচর্যা শুরু করি। আঞ্চলিক ভাবে প্রবাদ রয়েছে, ‘আমের আনা মাছের পাই, টিকলে পরে কে কত খাই।’ তাঁদের মতে, গাছে গাছে যে পরিমাণ মুকুল এসেছে, তাতে ৫০℅ টিকে গেলেও আমের বাম্পার ফলন হবে। তবে গত বছরের তুলনায় এবার আম গাছে তুলনামূলক ভাবে মুকুল কম এসেছে। একটি গাছে মুকুল এসেছে ৪ টি গাছে আসেনি ঠিক এমন। একারণে মৌসুম শুরুর আগে থেকেই কিছুটা চিন্তিত রয়েছে আম চাষীরা। তারপরও প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে আশানুরূপ ফলন হবে বলে আশা করছেন তিনারা।
মটমুড়া গ্রামের আম চাষী আকবর আলী জানান, গাছে মুকুল আসার পর থেকে আম পাড়া পর্যন্ত ৫ থেকে ৬ বার কীটনাশক প্রয়োগ করতে হয়। তাতে হেক্টরে ৩৮ থেকে ৫০ হাজার টাকার বালাইনাশক লাগে।
মাইলমারী গ্রামের মোহাদ্দেস আলম জানান, দাদার আমলে ফজলি, ল্যাংড়া, গোপালভোগ আম দেখলেও এখন হিমসাগর, আম রুপালি, মল্লিকা, বিশ্বনাথ, সখিনা, বারি-৪, কাটিমন জাতের আমসহ হাইব্রিড জাতের বিভিন্ন নামে আমের চাষ হচ্ছে।
মেহেরপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শংকর কুমার মজুমদার জানান, জেলায় প্রায় ২ হাজার ৫'শ হেক্টর জমিতে আমের বাগান রয়েছে। বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে আম চাষ করলে এর উৎপাদন যেমন বাড়বে, তেমনি সঠিকভাবে সংরক্ষণ এবং পরিবহন, রপ্তানিসহ বাজারজাত করলে কৃষকরা ব্যাপক হারে লাভবান হবেন। তিনি আরও জানান, উন্নত পদ্ধতিতে আম চাষ ও রক্ষণাবেক্ষনের জন্য মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের নানা পরামর্শ দিচ্ছেন কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তাগণ।
প্রকাশক ও সম্পাদক- রবিউল ইসলাম। প্রধান কার্যালয়ঃ ২২ পশ্চিম-ধানমন্ডি, শংকর, ঢাকা-১২০৯। মোবাইল: ০১৭১৫-২০৯৬২৪। ফোন: +৮৮০২৯৫৫১৬৯৬৩ । ই-মেইল: alochitokantho@gmail.com । স্বত্ব © ২০২১ আলোচিত কন্ঠ
Copyright © 2024 আলোচিত কণ্ঠ. All rights reserved.