গুরুদাসপুর,নাটোর প্রতিনিধিঃ নাটোরের গুরুদাসপুর পৌরসদরের চাঁচকৈড় হাট গত বছর মাত্র ৯৭ লাখ টাকায় ইজারা দেওয়া হয়। এ বছর ওই হাটের ইজারামূল্য উঠেছে ২ কোটি ১ লাখ ৫০হাজার টাকা। যা গত বছরের দ্বিগুনেরও বেশি। দলীয় গ্রুপিংয়ের কারনে ইজারামুল্য বেড়েছে বলে দাবী করেছেন হাট সংশ্লিষ্ঠরা।
জানাগেছে, নাটোর জেলার পুরাতন ও অন্যতম বড় হাট গুরুদাসপুর পৌরসভার নিয়ন্ত্রনাধীন চাঁচকৈড় হাট বাজার পরিচালনার জন্য গত ২৫ জানুয়ারী দরপত্র আহবান করা হয়। বুধবার(০৬ ফেব্রুয়ারী) গুরুদাসপুর পৌরসভার মেয়র শাহনেওয়াজ আলীর সভাপতিত্বে তাঁর কার্যালয়ে দুপুর ৩ টায় সেই দরপত্র জনসম্মুখে উন্মুক্ত করা হয়। দুজন দরদাতা ওই দরে অংশ নেন। এর মধ্যে বর্তমান দরদাতা আনিসুর রহমান মোল্লার পক্ষে জামাল উদ্দিন ১ কোটি ৯০ লাখ দরকে পেছনে ফেলে নতুন দরদাতা রবিউল করিম ফকির ২ কোটি ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা সর্বোচ্চ দরদাতা হিসাবে নির্বাচিত হয়। বেশ ক’বছর ধরে গুরুদাসপুর উপজেলা আ.লীগ মুলত সংসদ সদস্য ও মেয়র সমর্থক দুগ্রুপে বিভক্ত। ক’বছর ধরে চাঁচকৈড় হাট বাজার পরিচালনা ও ইজারাদার ছিলেন পৌর মেয়র ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহনেওয়াজ আলী মোল্লার সমর্থকরা। সম্প্রতি উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে মেয়র শাহনেওয়াজ আলীকে বাদ দেয়া হয়েছে। চাঁচকৈড় হাটটিও তাঁর অনুগতদের হাত ছাড়া হলো। এতে সংসদ সদস্য অনুগতদের বিজয় হিসাবে দেখছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চাঁচকৈড় হাটের অনেক ব্যবসায়ীরা জানান, দ্বিগুনেরও বেশি দামে চাঁচকৈড় হটের নতুন ইজারাদার নির্বাচিত হয়েছে। টাকা উঠাতে গিয়ে তারা খাজনার হার বাড়িয়ে দেবেন ভেবে তারা শংকিত। এমনিতেই বর্তমানে ব্যবসায়ীক মন্দা চলছে। খাজনা বাড়লে তাদের জন্য হবে মরার ওপর খাড়ার ঘা সমতুল্য।
দরপত্রে বিজয়ী রবিউল করিমের সহযোগী মিল্টন উদ্দিন জানান, হাটের ইজারামুল্য বাড়লেও হাটুরে ও ব্যবসায়ীদের উপর এর কোন প্রভাব পড়বে না। ইতিপুর্বে একটি অসাধুচক্র কৌশলে হাটের ইজারামুল্য কমিয়ে সরকারী রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে বিশেষ সুবিধা নিয়ে আসছিলেন। এবছর তাদের উদ্দেশ্য সফল হয়নি। তিনি আরও জানান, সম্প্রতি তাদের রাজনৈতিক বিজয়ের মুকুটে নতুন আরও একটি পালক যুক্ত হলো।
বর্তমান ইজারাদার আনিসুর রহমান মোল্লা জানান, আমরা জুলম করে কারো কাছে খাজনা নেই নি। দ্বিগুন দরে হাটের ইজারা নেয়ার প্রভাব নতুন বছরের শুরুতেই ব্যবসায়ীরা বুঝতে পারবেন। টোল বৃদ্ধি পেলে হাটুরেদের উপর অর্থনৈতিক চাপ বৃদ্ধি পাবে,হাটের সুনাম ক্ষুন্ন হবে।
গুরুদাসপুর পৌর মেয়র শাহনেওয়াজ আলী মোল্লা জানান, এ বিষয়কে আমি ইতিবাচক হিসাবে দেখি। সরকারের রাজস্ব দ্বিগুন। হাটের ইজারা মূল্য একবার নির্ধারিত হয়ে গেলে আর হয়তো নিচে আসবে না। এতে পৌরসভা উপকৃত হবে।
হাট ইজারার দরপত্র উন্মুক্ত অনুষ্ঠানে উপজেলা প্রকৌশল শাখার কর্মকর্তা, পৌর সভার কর্মকর্তা কর্মচারী, সাংবাদিক, পুলিশ প্রসাশন ও এলাকার সুধীজন উপস্থিত ছিলেন।