মোঃ মজিবর রহমান শেখঃ স্কুলের ভবনের ছাদ ফাটল দেখা দিয়েছে। কোথাও কোথাও পলেস্তারা খসে পড়ছে, বেরিয়ে পড়েছে রড।এমন অবস্থায় অনেকটা ঝুঁকির মধ্যেই পাঠদান চলছে ঠাকুরগাঁও জেলার হরিপুর উপজেলার ৬ নং- ভাতুরিয়া ইউনিয়নের অবস্থিত টেংরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। শিক্ষার্থীরা বলছে, বিদ্যালয় ভবনের এমন পরিস্থিতিতে অনেক সময় পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। শ্রেণিকক্ষের মধ্যে ছাদ থেকে পলেস্তারা খসে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের গায়ে পড়ছে। জরাজীর্ণ ভবনটি এখন শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ১৯৮৮ সালে হরিপুর উপজেলা টেংরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করা হয়। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে এটি হরিপুর উপজেলার মধ্যে ভালো ফলাফল ধরে রেখেছে। বিদ্যালয়ের জরাজীর্ণ ভবনে কয়েক বছর ধরে তাঁরা ঝুঁকি নিয়ে চালাচ্ছেন পাঠদান কার্যক্রম। দিন দিন ঝুঁকি আরও বাড়ছে। যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা দেখা দিচ্ছে। এ ছাড়া বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাওয়ায় স্থান সংকুলান হচ্ছে না। বর্তমানে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ১ ৫০ জন।
সরেজমিনে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের প্রতিটি কক্ষের ছাদের পলেস্তারা খসে পড়েছে। জং ধরা ছাদের রডগুলো বের হয়ে আছে। অনেক স্থানে দেয়ালে ফাটল ধরেছে। সামান্য বৃষ্টিতেই পানি চুইয়ে পড়ে ভবনের ভেতরে। এতে করে যেমন শঙ্কায় দিন পার করছে শিক্ষার্থীরা, তেমনি বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। জরাজীর্ণ ভবনটির পাশের ভবনে রয়েছে প্রধান শিক্ষক ও সহকারী প্রধান শিক্ষকের কার্যালয়। বিদ্যালয়ের শিক্ষক শাহাজালাল বলেন, বেশ কয়েক বছর ধরে ভবনটির অবস্থা খুবই নাজুক। যেকোনো সময় পুরো ভবন ধসে পড়তে পারে। এমন ভয়ের মধ্যেই চলতে হচ্ছে তাঁদের। সব সময় শিক্ষার্থীদের নিয়ে শঙ্কায় থাকতে হয়। এ ছাড়া আবাসন সংকট প্রকট হয়ে উঠেছে। নবম শ্রেণির এক ছাত্রী সুমি খাতুন বলে, ছাদ থেকে সিমেন্ট-বালু খসে পড়ায় ক্লাস করতে তাদের ভয় লাগে। সারাক্ষণ আতঙ্কে থাকে, কখন মাথার ওপর ধসে পড়ে পলেস্তারা। তারা ভয়ে ভয়ে ক্লাস করতে বাধ্য হয়। মাঝেমধ্যে ছাদ থেকে ময়লা পড়ে জামাকাপড় নষ্ট হয়ে যায় বলে জানায় ঐ শিক্ষার্থী বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহজালাল বলেন, ‘বিদ্যালয়ে যোগদানের প্রায় ৩৪ বছর অতিক্রম হয়েছে। ভবনের নাজুক অবস্থা দেখে হরিপুর উপজেলা শিক্ষা বিভাগে বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সদস্যদের নিয়ে লিখিত ও মৌখিকভাবে আবেদন করেছি। কিন্তু কোনো প্রতিকার পাইনি।
বিদ্যালয়ে এসে সব সময়ই চিন্তিত থাকি কখন না জানি বড় ধরনের দূর্ঘটনা ঘটে। ভবনের বিভিন্ন অংশে ফাটল দেখা দেয়ায় আতঙ্কে রয়েছে শিক্ষার্থীরা।
তিনি আরও বলেন ২০১৬ সালে হরিপুর উপজেলা প্রকৌশলী অফিস ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করেছে। আমাদের বিদ্যালয়ে একটি ভবন জরুরী দরকার।
বিদ্যালয়ের সভাপতি জাকির হোসেন বলেন, ‘আমি সভাপতি হয়ে ব্যর্থ হয়েছি তা বলব না, আমার পূর্বেও যারা ছিলেন তারা বহু চেষ্টা করেছেন। তারপরও ফলাফল আসেনি। এ বিষয়ে হরিপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আজিজার রহমান বলেন, ‘৪৭ নং- টেংরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আসলেই খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। এ ব্যাপারে চলমান প্রক্রিয়া রয়েছে।’
প্রকাশক ও সম্পাদক- রবিউল ইসলাম। প্রধান কার্যালয়ঃ ২২ পশ্চিম-ধানমন্ডি, শংকর, ঢাকা-১২০৯। মোবাইল: ০১৭১৫-২০৯৬২৪। ফোন: +৮৮০২৯৫৫১৬৯৬৩ । ই-মেইল: alochitokantho@gmail.com । স্বত্ব © ২০২১ আলোচিত কন্ঠ
Copyright © 2024 আলোচিত কণ্ঠ. All rights reserved.