মোঃ মজিবর রহমান শেখঃ ঠাকুরগাঁও জেলায় পতিত জমিতে বিভিন্ন সবজি চাষে সাফল্য পেয়েছেন নন্দি কুমার বর্মন। পৌর শহরের জমিদারপাড়ায় বাড়ির সামনের ফাঁকা জমিতে তিনি বিভিন্ন সবজি চাষ করে এলাকাবাসীকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। তার সবজি বাজানে উৎপাদনকৃত শাক-সবজি নিজের পরিবারের সদস্যদের চাহিদা মিটিয়ে আশ পাশের মানুষজনকে দিয়েছেন। এছাড়াও বাড়তি সবজি বিক্রি করে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার খবরও জানান তিনি। ২৮ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার
দেখা যায়, পৌর শহরের জমিদারপাড়া (সার্প) অফিসের সামনে ফাঁকা প্রায় ৮৫ শতক জমিতে তিনি সবজি চাষ করছেন। তাকে সবজি বাগানে পানি দিতে দেখা যায়। এছাড়াও বিভিন্ন আধুনিক যন্ত্রপাতি দিয়ে সবজি ক্ষেতের আগাছা পরিস্কার করতে দেখা যায় তাকে। সেখানে তিনি, লাল শাক, পালং শাক, নাপা শাক, বিভিন্ন ধরনের ঘাস, শসা চাষ করেছেন। ইতিমধ্যে লাল শাক, পালং শাক বেশ কয়েকবার তুলে নিজের খেয়েছেন, আশ পাশের মানুষ, আত্মীয়-স্বজনদের মাঝে বিলিয়েছেন এবং বাজারে বিক্রিও করেছেন। পৌর শহরের জমিদারপাড়া মহল্লার বাসিন্দা নন্দি কুমার বর্মন বলেন, জমিদারপাড়ায় শাকের বাগানের এখানকার প্রায় ৩ বিঘা (১৫০ শতক) জমি মরহুম তাহের জামাল চৌধুরীর। এখানে একটি বেসরকারী সংস্থাকে কিছু জমিতে ঘর তুলে ভাড়া দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও প্রায় ৮৫ শতক জমি দীর্ঘদিন ধরে ফাঁকা পরে ছিল। করোনা মহামারী শুরুর পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন বাড়ির এক ইঞ্চি জমিও অনাবাদী রাখা যাবে না। সেই ধারনা থেকেই এখানে সবজি বাগান করার সিদ্ধান্ত গ্রহন করি। পরে ফাঁকা জমিতে লাল, পালং, নাপা শাক, শসাসহ বিভিন্ন জাতের ঘাষ চাষ করি। আবাদও ভাল হয়; পরে শাক-সবজি নিজের পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে আত্মীয়-স্বজনদের দেওয়া হয়। তার পরও উদ্বৃত্ত শাক-সবজি বিক্রি করে আর্থিকভাবে লাভবান হয়েছি।
এ ব্যাপারে ঠাকুরগাঁও ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার নাঈম মিনহাজ কৌশিক বলেন, মেধাবী জাতি গঠনে পুষ্টির কোন বিকল্প নেই। শাক-সবজি আমাদের পুষ্টির চাহিদা অনেকাংশে পূরণ করে থাকে। এটি আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। শাক-সবজির পুষ্টি গুন মেধাবী প্রজন্ম গড়তে সহায়তা করে। তাই আমাদের বেশি করে শাক-সবজি খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। এ কারনে নন্দি কুমার বর্মনের পতিত জমিতে বিভিন্ন সবজি চাষের বিষয়টি সত্যিই প্রশংসনীয়। ঠাকুরগাঁও জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো: সিরাজুল ইসলাম বলেন, নন্দি কুমার বর্মনের পতিত জমিতে সবজি চাষের বিষয়টি যুগোপযোগী। তিনি চাইলে যে কোন ধরনের পরমর্শ ও সুবিধা কৃষি বিভাগ থেকে প্রদান করা হবে। চলতি শীতকালীন মৌসুমে ঠাকুরগাঁওয়ে ৭ হাজার ৮৯৫ হেক্টর জমিতে শীতকালীন শাক-সবজির উৎপাদনের ল্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। বর্তমানে প্রায় সব ধরনের শাক সবজি বাজারে রয়েছে; আরও কিছু সবজি আবাদ চলমান রয়েছে। আশা করা যায় এ বছরও সবজির ভাল ফলন হয়ে কৃষকেরা ন্যার্য্য মূল্য পাবেন।