মোঃ মজিবর রহমান শেখঃ সরকারের কৃষি প্রণোদনা ও ভর্তুকি কর্মসূচির আওতায় দেশের বৃহৎ সমলয়ে বোরো ধানের শস্য কর্তন, কৃষি যন্ত্র ও বীজ বিতরণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত ২৫ মে বৃহস্পতিবার ঠাকুরগাঁও জেলার রানীশংকৈল উপজেলার নেকমরদ ইউনিয়নের ভবানিপুর চামারদিঘি সংলগ্ন মাঠে আনুষ্ঠানিক ভাবে ধান কেটে বোরো ধানের শস্য কর্তনের শুভ উদ্বোধন করেন ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক মোঃ মাহবুবুর রহমান, ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক স্থানীয় কৃষকদের নিয়ে বোরো ধান কর্তন করে উৎসাহ প্রদান করেন। পরে ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক যান্ত্রিক উপায়ে বোরো ধান কর্তন মাঠ পরিদর্শন করেন। এ সময় ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক কৃষকদের পরামর্শ দিয়ে বলেন, রোরো ধান কর্তন আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে সম্ভব হবে। বাংলাদেশে নতুন জাত ও প্রথম বারের মতো ঠাকুরগাঁও জেলায় বিনা-২৫ চাষ ধান চাষ করা হয়েছে আজ এটির কর্তন করা হচ্ছে। চিকন প্রজাতির এ ধানে হেক্টর প্রতি ৬ মেট্রিক টণ ফলন পাওয়া গেছে, এবং সেই সাথে সমলয়ে বাস্তবায়িত হাইব্রিড জাতের সিরজেন্টা- ১২০৫ এরও শষ্য কর্তন অনুষ্টিত হয়েছে। এটি হেক্টর প্রতি ৯/১০ পাওয়া যায় মেট্রিক টণ ফলন পাওয়া গেছে। আমরা যে মিনিকেট এর কথা শুনতাম মিনিকেট মোটা চালকে কেটে চিকন করা হয়, আর এ চাল এতোটাই চিকন এটা কাটার দরকার নেই, সরাসরি আমরা ভাতের যে পুষ্টিগুন এ মাধ্যমে আমরা পেয়ে যাব।
তিনি আরও বলেন, সরকারের কৃষি প্রণোদনা ও ভর্তুকি কর্মসূচির আওতায় কৃষি পর্যায়ে নানামূখি কার্যক্রমে কৃষি অধিদপ্তরের সু-পরামর্শে আমাদের প্রান্তিক পর্যায়ের কৃষকেরা কৃষিক্ষেত্রে সুফল পাচ্ছেন এবং উৎপাদন বৃদ্ধির পাশাপাশি উৎপাদন খরচ কমে যাচ্ছে। এতে কৃষকগণ আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন।
রানীশংকৈল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের আয়োজনে ধান কর্তন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, ঠাকুরগাঁও জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মোঃ সিরাজুল ইসলাম, রানীশংকৈল উপজেলা চেয়ারম্যান শাহরিয়ার আজম, রানীশংকৈল উপজেলা নির্বাহী অফিসার সোহেল সুলতান জুলকার নাইন কবির, রানীশংকৈল উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ইন্দ্রোজিত শাহা, রানীশংকৈল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সঞ্জয় দেবনাথ সহ স্থানীয় কৃষক, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিক গণ, রানীশংকৈল উপজেলা প্রশাসন ও কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা। পরে ইউনিয়ন বীজ ব্যাংক থেকে ৩ শত ৫০ জন কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে ব্রি-৫১,৮৭,৯৩ এবং বিনা-১৭ ধানের বীজ ও বাড়ি-১৪,১৫,১৭ সরিষা বীজ বিতরণ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য যে, সরকারের ভূর্তুকির আওতায় রাইডিং টাইপ রাইস রোপন যন্ত্র আনুমানিক মূল্য ১৬ লক্ষ টাকা এতে সরকার ৫০ ভাগ ভূর্তুকির মাধ্যমে জেলা প্রশাসক মোঃ মাহবুবুর রহমান রশিদুল নামক এক কৃষকের হাতে কৃষি যন্ত্রটি তুলে দেন। এ যন্ত্রটি বিতরণের মাধ্যমে রানীশংকৈলের কৃষি যান্ত্রিকরনের নতুন একটি অধ্যায়ের শুভ সুচনা হলো। এতে সাধারণ কৃষকের শ্রমিক সংকট নিরশনের পাশাপাশি সময় মত ধান রোপন এবং উৎপাদন ব্যায় কমে আসবে। এটি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের কৃষিতে একটি উপহার দেশে ঠাকুরগাঁও জেলায় প্রথম দেওয়া হলো।
চলতি বোরো মৌসুমে জেলা কৃষি বিভাগের তথ্য মতে এ বছর ঠাকুরগাঁও জেলায় ৬০ হাজার ১৫০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষাবাদের লক্ষমাত্র থাকলেও অর্জিত হয়েছে ৬১ হাজার ৬৫০ হেক্টর জমিতে। ১৫শত হেক্টর বেশি জমিতে চাষাবাদ হয়েছে। এবং বেশ ভাল ফলন এবং ভাল দাম পেয়ে খুশি কৃষককেরা।