মাসুম বিল্লাহ,বগুড়াঃ আসন্ন ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে বগুড়ার শেরপুরে গরু, ছাগল, মহিষ ও ভেড়ার খামারীরা ব্যাস্ত সময় পাড় করছেন। ক্রেতাদের কাছে কোরবানীর পশু আকর্শনীয় করে তুলতে যা যা করনীয় তাই করছেন খামারীরা। তবে গরু বিক্রি নিয়ে খামারিরা শঙ্কায় আছেন, তেমনি দুশ্চিন্তায় রয়েছেন ক্রেতারাও। কারণ হিসেবে এ বছর গো-খাদ্যের দাম অত্যাধিকভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় কোরবানি পশু পৃস্তুুতকরনে ব্যয় বেশী হয়েছে। খামারীরা প্রাকৃতিক উপায়ে গরু মোটাতাজাকরণ করছেন বলে জানায় প্রাণী সম্পদ দপ্তর। প্রাণী সম্পদ দপ্তর অনলাইন পশু কোরবানীরহাট হওয়াতে একটু সুবিধাও হয়েছে। ঈদ উল আযহা উৎসব শুরু হবে, এখন পুরোদমে শেরপুরের কোরবানির হাট শুরু হয়েছে।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর সূত্র জানায়, বর্তমানে উপজেলার প্রায় ৬ হাজার মানুষ এ পেশায় জড়িত রয়েছেন। খামারি ছাড়াও উপজেলার সাধারণ কৃষকরা বাড়তি আয়ের জন্য ঈদকে ঘিরে বাড়িতে ১/২ টি করে গরু লালন পালন করে এ সময় বিক্রয় করেন। এবার উপজেলায় কোরবানির পশুর লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ৫৭ হাজার ৯২২। তবে খামারি ও প্রান্তিক কৃষক মিলে এবার প্রায় ৭০ হাজার ১৬২টি পশু প্রস্তুত করেছেন। এতে প্রায় ১২ হাজার ২৪০টি অতিরিক্ত রয়েছে।
এর মধ্যে ১৮ হাজার ৮৩৫টি ষাঁড়, বলদ ৬ হাজার ৮৩৬টি, গাভী ৪ হাজার ৫৭২টি, মহিষ ১১৪টি, ছাগল ৩৬ হাজার ৬৭৩টি, ভেড়া ৩ হাজার ১৩২টি প্রস্তুত রয়েছে। এই সব পশু প্রায় ৩শ ৬৫ কোটি টাকা লেনদেন হবে ।
প্রাণী সম্পদ সুত্রে আরো জানা যায়, কোরবানী পশু ক্রয় বিক্রয়ের জন্য শেরপুর পৌর শহরের বারোদুয়ারী, উপজেলার ভবানীপুর ইউনিয়নের ভবানীপুর ও ছোনকা, বিশালপুর ইউনিয়নের জামাইল, কুসুম্বী ইউনিয়নের বেলঘড়িয়া, খামারকান্দি ইউনিয়নের খামারকান্দিসহ উপজেলার ১০ ইউনিয়নের ১ পৌরসভায় ১১টি স্থায়ী অস্থায়ী হাট বাজার রয়েছে। এ সকল হাটে নিয়মিত পশু ক্রয় বিক্রয় চলছে।
সরে জমিনে মির্জাপুর ইউনিয়নের ‘মেসার্স শামীম ডেইরি এন্ড ক্যাটল ফার্ম’ এ গিয়ে দেখা যায়, স্বত্ত্বাধিকারী জাহাঙ্গীর আলমের খামারে রয়েছে ৫০টি দেশী বিদেশি জাতের গরু। পাঁচজন শ্রমিক রয়েছেন যারা গরু পরিচর্যায় নিয়োজিত। কুরবানী উপলক্ষ্যে প্রতি বছর দেশী এবং বিদেশী জাতের গরু পালন করেন জাহাঙ্গীর আলম। সেখানে শাহীওয়াল, নেপাল, হরিয়ানা, অস্ট্রেলিয়ান ক্রস এবং শাহীওয়াল ক্রস জাতের গরু রয়েছে।
জাহাঙ্গীর আলম জানান, ২ থেকে ৫ লাখ টাকা দামের গরু রয়েছে। তিনি তার খামারের গরুগুলোকে সুষম খাবারের মাধ্যমে মোটাতাজা করেছেন। কোন রকম ইনজেকশন বা ফিড খাওয়াননি। সুষম খাবারগুলোর মধ্যে ভূষি, ভুট্টা, গম, বুট, কালোজিরার মিক্সার পাউডার এবং ধানের কুড়া, ঘাস, খড় খাবার হিসেবে দেন।
জাহাঙ্গীর আলম আরোও বলেন, গরুকে যদি সুষম খাবার দেয়া হয় এবং গরু যদি সুস্থ থাকে তাহলে কোন ইনজেকশন বা ফিড খাওয়ার দরকার পড়ে না মোটাতাজা করণের জন্য। গরুর সঠিক পরিচর্যা এবং সুষম খাবার দিলে গরু আপনাআপনি বেড়ে ওঠে। আমি গরুগুলো খামার থেকেই বিক্রি করতে চাই। তবে খামারে যদি বিক্রি না হয় তবে হাটে উঠাবো।
শেরপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. রায়হান পিএএ জানান, লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ৫৭ হাজার ৯২২। তবে খামারি ও প্রান্তিক কৃষক মিলে এবার প্রায় ৭০ হাজার ১৬২টি পশু প্রস্তুত করেছেন। এতে প্রায় ১২ হাজার ২৪০টি পশু উদ্বৃত্ত থাকবে। এই সব পশু প্রায় ৩শ ৬৫ কোটি টাকা লেনদেন হবে । এছাড়াও কোরবানী পশুর সুস্থতা নিশ্চিত করার জন্য উপজেলার ছোট বড় সকল হাটে প্রাণিসম্পদ অফিসের ১১টি মেডিকেল টিম সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষন করছেন।