রাম বসাক,শাহজাদপুর,সিরাজগঞ্জঃ জনতা ব্যাংকের সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর শাখার গ্রাহকের বিপুল পরিমাণ টাকা আত্মসাৎকারী পিয়ন আওলাদ হোসেন রঞ্জুকে অভিযান চালিয়ে গোপালগঞ্জ থেকে গ্রেফতার করেছে শাহজাদপুর থানা পুলিশ।
মঙ্গলবার ১১ই জুলাই শাহজাদপুর থানার অফিসার ইনচার্জের কক্ষে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এই তথ্য জানান শাহজাদপুর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. কামরুজ্জামান। এসময় উপস্থিত ছিলেন, পরিদর্শক (তদন্ত) মো. সাজ্জাদুর রহমান ও পরিদর্শক (অপারেশন) আবু সাঈদ।
এসময় তিনি সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, রঞ্জুর প্রতারণা প্রকাশ হওয়ার আগেই সে গা ঢাকা দেয়। পরে তথ্য প্রযুক্তির সহযোগীতায় আমরা জানতে পারি তিনি গোপালগঞ্জে অবস্থান করছেন।
জেলা পুলিশ সুপার আরিফুর রহমানের নির্দেশনায় উপ-পরিদর্শক গোপাল কুমারের নেতৃত্বে উপ-পরিদর্শক সারফুল ইসলাম সহ শাহজাদপুর থানা পুলিশের একটি দল সোমবার ১০ জুলাই ভোর পৌনে ৬টায় গোপালগঞ্জ সদরের পূর্ব মিয়াপাড়া গ্রামের তার এক আত্মীয়ের বাড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করে। এসময় তার কাছ থেকে ২৪ হাজার টাকা ও একটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।
তিনি আরও জানান- আওলাদ হোসেন রঞ্জু শাহজাদপুর পৌর শহরের পারকোলা গ্রামের মৃত নুরুল আকন্দের ছেলে। ২০০৩ সালে এইচএসসি পাশ করে রাষ্ট্রায়ত্ব জনতা ব্যাংক শাহজাদপুর শাখায় পিয়ন কাম ঝাড়ুদার হিসেবে কাজ শুরু করেন। ২০০৭ সালে তার কাজের পাশাপাশি ডেচপাশের কাজ শুরু করেন। কেউ একাউন্ট খুলতে চাইলে তিনি সহযোগীতা করতেন।
তিনি আরও বলেন জিজ্ঞাসাবাদে আওলাদ হোসেন রঞ্জু জানায়, ২০১৬ সালের দিকে বিভিন্ন এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে ব্যাপক ঋণগ্রস্থ্য হয়ে পড়েন। সপ্তাহে তার কিস্তির পরিমাণ দারায় প্রায় ৩০ হাজার টাকা। এতো টাকার কিস্তি পরিশোধ করা তার পক্ষে সম্ভব না হওয়ায় তিনি ব্যাংকে লম্বা লাইন থাকলে পরিচিত গ্রাহকদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে পরে জমা দেয়ার কথা বলে আত্মসাৎ করতেন।
গত ৬ জুলাই জনতা ব্যাংকের শাহজাদপুর শাখার জনৈক গ্রাহক তার একাউন্ট থেকে টাকা উত্তোলন করতে এসে জানতে পারেন যে তার একাউন্টে কোন টাকা নেই। অথচ তিনি গত ২মে আওলাদ হোসেন রঞ্জুর মাধ্যমে পাচ লক্ষ টাকা তার একাউন্টে প্রদান করেন।
ঘটনাগুলো পর্যায়ক্রমে জানাজানি হলে রোববার (৯ জুলাই) জনতা ব্যাংক শাহজাদপুর শাখায় ভুক্তভোগী গ্রাহকেরা তাদের অ্যাকাউন্টে জমাকৃত টাকা দেখতে না পেয়ে ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কক্ষ ঘেরাও করে বিক্ষোভ করতে থাকেন। খবর পেয়ে শাহজাদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম মৃধার নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল ব্যাংকে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আনে।
উল্লেখ্য, গ্রাহকদের বিক্ষোভের সময় বিভিন্ন মাধ্যমে জানতে পারা যায় যে প্রতারণা করে প্রায় ৩-৫ কোটি টাকা রঞ্জু আত্মসাৎ করেন। সংবাদ সম্মেলনে আতিরিক্ত পুলিশ সুপার তথ্য দিয়ে জানান দায়ের করা অভিযোগে প্রতারণার শিকার ২৫ জনের সংখ্যা উল্লেখ করা হয়। টাকার পরিমাণ আনুমানিক ৪৫ লাখ টাকা বলে জানা যায়, তবে ব্যাংকের অডিটের পরে প্রকৃত টাকার পরিমাণ জানা যাবে।
প্রকাশক ও সম্পাদক- রবিউল ইসলাম। প্রধান কার্যালয়ঃ ২২ পশ্চিম-ধানমন্ডি, শংকর, ঢাকা-১২০৯। মোবাইল: ০১৭১৫-২০৯৬২৪। ফোন: +৮৮০২৯৫৫১৬৯৬৩ । ই-মেইল: alochitokantho@gmail.com । স্বত্ব © ২০২১ আলোচিত কন্ঠ
Copyright © 2024 আলোচিত কণ্ঠ. All rights reserved.