বিলালুর রহমান,জৈন্তাপুর উপজেলা প্রতিনিধিঃ উত্তর-পূর্ব সিলেটের জৈন্তাপুর, গোয়াইনঘাট, কানাইঘাট ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার সমন্বয়ে গঠিত জৈন্তিয়া ১৭ পরগনা সালিশ সমন্বয় কমিটির আহবানে সিলেট তামাবিল জাফলং, সিলেট কানাইঘাট, সিলেট গোয়াইনঘাট সড়কে যাত্রীবাহী বাস-মিনিবাস বর্জন কর্মসূচি অব্যাহত রাখতে সর্বস্থরের জনগণের প্রতি আহবান জানানো হয়েছে। ১৭ পরগনার পূর্বের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বাস বয়কট কর্মসূচি অব্যাহত রাখার ঘোষনা দেয়া হয়। জৈন্তাপুরে পরগনার নেতৃবৃন্দ স্থানীয় সাংবাদিকদের এক প্রেস ব্রিফিং ১৭ পরগনার পূর্বের সিদ্ধান্তের কথা পুনরায় জানান।
সিলেট জেলা বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির সভাপতি ময়নুল হক-কে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়া সহ তিন’টি দাবীতে সিলেট তামাবিল সড়কে বাস-মিনিবাস গাড়ি বর্জন কর্মসুচি অব্যাহত রাখতে সর্বস্থরের জৈন্তিয়া বাসির প্রতি আহবান করা হয়।
বুধবার (১২ জুলাই) বিকেলে ৩টায় জৈন্তাপুর উপজেলা সদরে এক প্রেস ব্রিফিং-য়ে জৈন্তিয়া ১৭পরগনা সালিশ সমন্বয় কমিটির সভাপতি আবু জাফর আবুল মৌলা চৌধুরী বলেন, আমাদের পূর্বের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বৃহস্পতিবার বিকেলে ৩টায় জৈন্তাপুরে ১৭ পরগণা শালিশ সমন্বয় কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হবে। সেখান আমাদের চলমান আন্দোলন সহ বিভিন্ন বিষয়ে চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরবর্তী কর্মসূচী ঘোষণা করা হবে। তিনি চলমান বাস-মিনিবাস বর্জন কর্মসুচি অব্যাহত রাখতে সকলের প্রতি আহবান জানিয়েছেন।
এদিকে জৈন্তাপুর উপজেলা নিবার্হী অফিসার আল-বশিরুল ইসলাম, জৈন্তাপুর মডেল থানার অফিসার (ইনচার্জ) ওমর ফারুক প্রশাসনের পক্ষে ঘটনায় বিষয়ে সমাধান করতে উভয় পক্ষের সাথে পৃথক ভাবে বৈঠক করেন। তিনি ঘটনায় বিষয়ে উভয় পক্ষের সাথে আলোচন করেন।
এদিকে পরিবহন নেতা মইনুল হক সামাজিক যোগযােগ মাধ্যমে এক ভিডিও বার্তায় জৈন্তাপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কামাল আহমদ,জৈন্তিয়া ১৭ পরগনার নেতৃবৃন্দ-কে নিয়ে কটুক্তির প্রতিবাদে জৈন্তিয়া কেন্দ্রীয় ছাত্র পরিষদ, জৈন্তিয়া ডিগ্রি কলেজ ,শাহজালাল ( রা:) ডিগ্রি কলেজ, জৈন্তাপুর ছাত্র কল্যাণ পরিষদ সহ বিভিন্ন সংগঠন প্রতিবাদ সভা ও মানববন্ধন কর্মসুচি পালন করে ঘটনার নিন্দা জানান। উপজেলা সদরে ছাত্র কল্যাণ পরিষদ এই মানববন্ধন কর্মসুচি পালন করেন। এদিকে বিকেল তামাবিল মহাসড়কে বিচ্ছিন্ন ভাবে কয়েক’টি যাত্রীবাহী বাস চলাচল করলেও সাধারণ জনগণ ১৭ পরগণার সিদ্ধান্তকে সমর্থন করে বাস বর্জন পালন করছেন।
প্রেসব্রিফিং-য়ে এসময় উপস্থিত ছিলেন জৈন্তাপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কামাল আহমদ, কানাইঘাট পৌরসভার মেয়র লুৎফুর রহমান, জৈন্তাপুর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীন, গোয়াইনঘাট উপজেলা পরিষদের ভাইস-চেয়ারম্যান মাওলানা কয়েছ আহমদ, জৈন্তাপুর ইমরান আহমদ সরকারী মহিলা কলেজের সহকারী অধ্যাপক শাহেদ আহমদ, চিকনাগুল ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান এবিএম জাকারিয়া, বড়চতুল ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মাওলানা আবুল হোসাইন চতুলী, মাস্টার নাজিম উদ্দিন আলমাস, হাজী এনায়েত উল্লাহ, মাওলানা কবির আহমেদ, মাসহুদ আজহার, জৈন্তাপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি নূরুল ইসলাম সাবেক সভাপতি ফয়েজ আহমদ, সমাজসেবী আবদুল মতিন শাহিন, উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক আনোয়ার হোসেন, যুগ্ম আহবায়ক মো: কুতুব উদ্দিন, কয়ছর আহমদ ও প্রবাসী তোফায়েল আহমেদ সহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।
অন্যদিকে সিলেটের জেলা প্রশাসক মহোদয়ের আহবানে গত ১১ জুলাই রাতে পরিবহন নেতৃবৃন্দের সাথে বৈঠকে সিলেট বিভাগে পরিবহন ধর্মঘট প্রত্যাহার বিষয়ে আলোচনা করা হয়। সেখানে ডিসি অফিসে জৈন্তাপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কামাল আহমদ উপস্থিত ছিলেন একজন জনপ্রতিনিধি হিসাবে। বৈঠকে ১৭ পরগনার চলমান আন্দোলন বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয় নাই বলে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কামাল আহমদ নিশ্চিত করেছেন।
অন্যদিকে রাতে দরবস্ত বাজারে চলমান বাস বর্জন আন্দোলন কর্মসুচি অব্যাহত রাখতে ও কৌশল প্রণয়নে জৈন্তাপুর উপজেলার ৬টি ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান ও সাবেক চেয়ারম্যানগণ ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এক যৌথ সভায় মিলিত হন।
এতে উপস্থিত ছিলেন জৈন্তাপুর উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস-চেয়ারম্যান মুহিবুল হক মুহিব, দরবস্ত ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান বাহারুল আলম বাহার, নিজপাট ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো: ইন্তাজ আলী,জৈন্তাপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ফখরুল ইসলাম, চারিকাটা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সুলতান করিম, ফতেপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান রফিক আহমদ, চিকনাগুল ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান কামরুজ্জমান চৌধুরী, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হানিফ মোহাম্মদ, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান শাহ আলম চৌধুরী তোফায়েল সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
উল্লেখ্য: গত ৭ জুলাই শুক্রবার রাতে সিলেট তামাবিল মহাসড়কের দরবস্ত এলাকায় মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় ৫ জন নিহত হওয়ার ঘটনা-কে কেন্দ্র করে জৈন্তিয়া ১৭ পরগনা ও সিলেট বাস মালিক সমিতি ও শ্রমিকদের মধ্যে এই বিরোধ দেখা দেয়।