মোঃ মজিবর রহমান শেখঃ আমার জীবনে ভাবিনি পায়ের তলায় মাটি হবে, আমাদের পাকা ঘর হবে। আমি ছিলাম মানুষের জমিতে। এখন আমাকে পাকা ঘর দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ শেখ মুজিবের মেয়ে শেখ হাসিনা আমাকে পাকা ঘর ও জমি দিয়ে আমার জীবনে আলো দিয়েছেন। এটি আমার পরিবারের সকলের জীবনও বাঁচিয়ে দিয়েছে। আমাকে আর মানুষের জমিতে ঘর করে থাকতে হবে না। বাবা ছিলেন ভারতের কোন এক জেলার বাসিন্দা। নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে চলে আসেন বর্তমান বাংলাদেশে। আট সন্তানের জনক বাবা কোন স্থানী ঠিকানা গড়তে পারেনি। সেই সুত্রে সন্তানরাও থেকে গেছেন ঠিকানাহীন। সাংবাদিকের সঙ্গে আলাপকালে কান্নাজড়িত কন্ঠে এসব বলেন ৭০ বছর পর তাদের প্রায় পৌনে এক শতাব্দীর দূঃখ শেষ হতে যাচ্ছে বর্তমান সরকারের হাত ধরে।
ঠাকুরগাঁও জেলার রাণীশংকৈল উপজেলার চতুর্থ পযার্য়ের আশ্রয়ণ প্রকল্পে আক্তার হোসেন তার বাড়ি বুঝে পাওয়ার পর বলেন, ৭০ বছর পর নিজের একটি ঠিকানা হলো। তিনি বলেন, টাকার অভাবে ছেলেদের স্কুলে দিতে পারিনি। দিন এনে দিন খেয়েছি। সেও অনেক আগের কথা। আমার পায়ের তলায় কোনো মাটি ছিল না। শুধু রাতে দুচোখের পানিতে বালিশ ভিজেছে। কবে হবে আমার পায়ের তলায় মাটি। কখনো স্বপ্নেও ভাবিনি পায়ের তলায় মাটি হবে। সেই আশা পূরণ করেছেন শেখের বেটি। আল্লাহর পরে শেখের বেটি। তিনি আমাকে ঘর দিয়েছেন, সঙ্গে দিয়েছেন জমি। তিনি আরও বলেন, আমার বাবা বেঁচে থাকতে কোনো দিন নিজের বাড়ি বানাতে পারেনি। ভারত থেকে পালিয়ে এসে এই এলাকার বিভিন্ন বাড়িতে কাজ করে গেছেন। যার বাসায় কাজ করত তার জমিতে আমাদের দয়া করে থাকতে দিত। অভাবের সংসারে বাবা কোনো দিন জমি কিনে বাড়ি কিনতে পারেনি। আমিও সারাটা জীবন অন্যের জমিতে বাড়ি করে ছিলাম। সারাটাজীবন অন্যের জমিতে বাস করতে গিয়ে নানা কথা শুনতে হয়েছে। অনেক খারাপ কথা বলার পরেও সহে যেতে হয়েছে। এখন যতই অভাবে থাকিনা কেন ঝড় বাদলের দিনে মাথার উপরে আশ্রয় হলো। আধা পাকা হওয়ায় আর বছরে বছরে ঠিক করতে হবে না। ঝড়ের দিনে চাল উরে যাওয়ার ভয় নাই। বর্তমান সরকার আমাদের জমি দিলেন, বাড়ি দিলেন। এ জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য নামাজের সময় দোয়া করি। রানীশংকৈল
উপজেলার রাতোর ইউনিয়নের আরজিতগাঁও এলাকার আশ্রয়ন প্রকল্পের ৪৮টি ঘরের মধ্যে একটি ঘর পেয়েছে এই অন্ধ দম্পতি। রানীশংকৈল
উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহরিয়ার রহমান বলেন, ইউনিয়ন পর্যায়ে একটি কমিটি রয়েছে। সেই কমিটির মাধ্যমে যাচাই বাছাই করে উপকার ভোগীদের তালিকা চুড়ান্ত করা হয়েছে। এ ছাড়াও রানীশংকৈল উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে প্রধান করে আরেকটি বাছাই কমিটি আছে। সেই কমিটি যাচাই বাছাই করে চুরান্ত তালিকা করা হয়। ভুমিহীনদের আবেদনের পেক্ষিতে যাচাই বাছাই করে ভুমিহীনদের এই প্রকল্পের আওতায় আনা হয়েছে। এ জন্য জনপ্রতিনিধি সহ স্থানী গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সহায়তা ও পরামর্শ প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে।
যার ফলে প্রকৃত উপকার ভোগীরা বের হয়ে এসেছে।
রানীশংকৈল উপজেলার চতুর্থ পযার্য়ের আশ্রয়ণ প্রকল্পের ২১০টি ঘর গত বৃহস্পতিবার উপকারভোগীদের বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এর আগে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত বুধবার তৃতীয় পর্যায়ের অবশিষ্ট এবং চতুর্থ পর্যায়ের নির্ধারিত উপকারভোগী পরিবারের কাছে সারাদেশের ন্যায় রাণীশংকৈল উপজেলার ২১০টি জমিসহ গৃহ হস্তান্তর কার্যক্রম ভিডিও কনফারেন্স এর মাধ্যমে উদ্বোধন করেন।
প্রকাশক ও সম্পাদক- রবিউল ইসলাম। প্রধান কার্যালয়ঃ ২২ পশ্চিম-ধানমন্ডি, শংকর, ঢাকা-১২০৯। মোবাইল: ০১৭১৫-২০৯৬২৪। ফোন: +৮৮০২৯৫৫১৬৯৬৩ । ই-মেইল: alochitokantho@gmail.com । স্বত্ব © ২০২১ আলোচিত কন্ঠ
Copyright © 2024 আলোচিত কণ্ঠ. All rights reserved.