আনোয়ার হোসেন,লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি ॥ ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসূমে মা ইলিশ রক্ষার্থে ২২ দিন ইলিশ ধরায় নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। বুধবার (১১ অক্টোবর) মধ্যরাত থেকে ২২ দিনের জন্য নিষিদ্ধ হচ্ছে ইলিশ ধরা। যা অব্যাহত থাকবে আগামী ২ নভেম্বর পর্যন্ত। এ সময় মাছ ধরা, পরিবহন, বিপণন ও সংরক্ষণ নিষিদ্ধ থাকবে। এতে বেকার হয়ে পড়বেন জেলার ২ লাখের অধিক জেলে। যে কারণে অভাব-অনটন আর অনিশ্চয়তার মুখে পড়বেন তারা। তবে নিষেধাজ্ঞার সময়ে পুনর্বাসনের জন্য প্রত্যেক জেলেকে ২৫ কেজি করে চাল দেয়া হবে। সেই চাল নির্ধারিত সময়ে বিতরণের দাবি জেলেদের। লক্ষ্মীপুর জেলার বিভিন্ন মাছ ঘাট ঘুরে দেখা গেছে, যেহেতু ২২ দিনের জন্য মাছ ধরা বন্ধ থাকবে, তাই ঘাটে অবস্থান করছে নৌকা-ট্রলার। কেউ কেউ আবার নিষেধাজ্ঞার আগে শেষবারের মতো নদীতে যাচ্ছেন মাছ ধরতে। তবে তাদের ফিরতে হয়েছে রাত ১২টার আগেই। কেউ কেউ আবার আগে থেকেই জাল, নৌকাসহ মাছ ধরার সব উপকরণ তুলে এনেছেন ঘাটে। সরকারের নিষেধাজ্ঞা মানতে রাজি থাকলেও পরিবার-পরিজন নিয়ে কীভাবে দিন কাটাবেন, সে চিন্তার ছাপ রয়েছে জেলেদের চোখে মুখে। তাই নির্ধারিত সময়ে পুনর্বাসনের চাল দ্রুত বিতরণের দাবি জেলেদের। কমলনগর উপজেলার জেলে কামাল হোসেন বলেন, মাছ ধরা বন্ধ হচ্ছে, তাই জাল নৌকা তীরে এনে রেখেছি। নিষেধাজ্ঞা সময়ে সরকার জেলেদের জন্য যে চাল দেবে, তা দ্রুত বিতরণের দাবি জানাই। অপর জেলে নান্টু মাঝি বলেন, এ মৌসূমে তেমন মাছ ধরা পড়েনি, তাই সব ঋণ পরিশোধ করতে পারিনি। এখন মাছ ধরা বন্ধ হচ্ছে, এতে আমরা সংকটে পড়ব। জেলে বেলাল বলেন, ইলিশ ধরা ২২ দিন নিষেধ, এসময় এনজিওর কিস্তির টাকা আদায় যদি বন্ধ থাকত, তাহলে কিছুটা হলেও ভালো থাকতে পারতাম। আরো জানা গেছে, নিবন্ধিত হয়েও অনেকের ভাগ্যে জুটবে না পুনর্বাসনের চাল, আর তাই অনেক জেলেকেই ধার-দেনা করে দিন কাটাতে হবে। জেলেরা বলছেন, এবার ভরা মৌসূমে ইলিশ কম থাকায় অনেকেই দেনার দায়ে জর্জরিত। এরই মধ্যে আবার ইলিশ ধরায় নিষেধাজ্ঞা চলে আশায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন তারা। এ ব্যপারে একাধিক জেলে জানান, আয় বন্ধ হয়ে গেছে, সংসার চালানো কষ্ট হয়ে যাবে। তাই সব জেলেকে চাল দেওয়ার দাবি জানাই। তবে মৎস্য বিভাগ বলছে, মা ইলিশ রক্ষায় কঠোর অভিযান চালানো হবে। আর জেলেদের সংকট দূর করতে নিবন্ধিত জেলেদের দেওয়া হবে ২৫ কেজি করে চাল। জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আমিরুল ইসলাম বলেন, ইলিশ অভিযান সফল হলে নদীতে ইলিশের উৎপাদন বেড়ে যাবে। তাই অভিযান সফল করতে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। এদিকে নৌ-পুলিশ বলছে মা ইলিশ রক্ষায় শক্ত অভিযান চালাবে । নিষেধাজ্ঞায় ইলিশসহ কোনো মাছ যাতে কেউ ধরতে না পারে, সেজন্য সার্বক্ষণিক তারা টহলে থাকবে। চাঁদপুরের মহনা থেকে রামগতি এলাকা পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকবে। কারণ নদীর এসব পয়েন্ট ইলিশের অন্যতম বিচরণ ক্ষেত্র। নিষিদ্ধ সময়ে এসব পয়েন্টে ইলিশসহ সব ধরনের মাছ ধরা নিষেধ।
প্রকাশক ও সম্পাদক- রবিউল ইসলাম। প্রধান কার্যালয়ঃ ২২ পশ্চিম-ধানমন্ডি, শংকর, ঢাকা-১২০৯। মোবাইল: ০১৭১৫-২০৯৬২৪। ফোন: +৮৮০২৯৫৫১৬৯৬৩ । ই-মেইল: alochitokantho@gmail.com । স্বত্ব © ২০২১ আলোচিত কন্ঠ
Copyright © 2024 আলোচিত কণ্ঠ. All rights reserved.