লেখা:আজহারুল ইসলাম সাকী মানুষ হলো সমাজবদ্ধ জীব। ব্যক্তিমানুষের সব সার্থকতা সমাজকে কেন্দ্র করেই। সমাজে স্বীকৃতির ওপর নির্ভর করেই মানুষের সম্পূর্ণতা। কিন্তু মানুষ দল বেঁধে বাস করলেই তা সমাজ হয় না। প্রত্যেক মানুষ একে অপরের কল্যাণের কথা ভেবে সাধ্যমতো সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়ে নিয়ম ও শৃঙ্খলার অদৃশ্য বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে বাস করলে সেই জনগোষ্ঠীকে সমাজ বলে। এই সমাজকে বাঁচিয়ে রাখা এবং এগিয়ে নিয়ে যাওয়া ব্যক্তিমানুষের অন্যতম দায়বদ্ধতা। এক সমাজে ধনী, গরিব, সহায়–সম্বলহীন নানা রকম মানুষের বাস। শিক্ষিত, অশিক্ষিত সবাইকে নিয়েই সমাজ। সমাজে পিছিয়ে পড়া মানুষদের সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়াই হলো সমাজসেবা। কিন্তু কেমন আছেন পাশের বাড়ির মানুষটি? এমন প্রশ্ন করার মতো সময়ও আমাদের নেই। ক্রমেই আমরা যান্ত্রিক হয়ে যাচ্ছি। এতে সমাজে নেতিবাচকপ্রভাব পড়ছে। তাই আমাদের চিন্তার পরিবর্তন জরুরি।আমাদের সমাজের দিকে তাকালে প্রতিনিয়ত আমরা দেখতে পাই বিভিন্ন ধরনের বৈষম্য, যা অতি দুঃখের হলেও সত্য। আজকের আধুনিক বিশ্বের ছোঁয়া সত্ত্বেও আমরা সেকেলে সমাজব্যবস্থা হতে বেরিয়ে আসতে পারিনি। প্রাচীন সমাজব্যবস্থার কুসংস্কার, বৈষম্য ও অবমূল্যায়ন আমাদের কুরে কুরে খাচ্ছে। শ্রেণিবৈষম্যের দিকে তাকালে দেখা যায়, সমাজের একটি গরিব লোক শিক্ষিত, মেধাবী ও নেতৃত্ব দেওয়ার মতো যোগ্যতা রাখলেও আমাদের ধনতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থা এই লোককে সুযোগ না দিয়ে তাকে অবমূল্যায়ন করে পেছনে ফেলে রাখে, যা আমাদের জাতিকে অন্ধকারে ঠেলে দেয়। পক্ষান্তরে একজন সম্পদশালী ব্যক্তি মেধা ও নেতৃত্বের যোগ্যতা না থাকা সত্ত্বেও সমাজ তাকে নেতৃত্বের ভার দেয়, যা আমাদের সমাজব্যবস্থার জন্য হুমকিস্বরূপ। এই সমাজ নিয়ে আমাদেরই ভাবতে হবে। স্বপ্ন দেখতে হবে সমাজ নিয়ে। একটি সমাজে ধনী–গরিবনির্বিশেষে সব রকম মানুষের বাস। যাদের আর্থিক অবস্থা ভালো, তারা সব রকম সুযোগ–সুবিধা ভোগ করতে পারে, কিন্তু সমাজে যারা গরিব সহায়–সম্বলহীন তারা ভাগ্যের দোহাই দিয়ে দুঃখ কষ্টের কঠিন জীবনকেই মেনে নিতে বাধ্য হয়। স্বার্থকেন্দ্রিক বেঁচে থাকার মধ্যে কোনো সুখ নেই। এতে নিজেকে ও নিজের পরিবারকে ঘিরে আত্মকেন্দ্রিকতার এক সংকীর্ণ গণ্ডি গড়ে ওঠে। প্রকৃত সুখ রয়েছে সমাজের জন্য, দেশের জন্য নিঃস্বার্থভাবে কিছু করে বাঁচার মধ্যে। একজন মানুষ সঠিক শিক্ষা গ্রহণ না করলে তার প্রভাব সমাজের ওপর পড়ে। সে কারণে আমাদের সঠিক শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে। একটি কথা মনে রাখা ভালো, সমাজ নিয়ে ভাবনার বয়স লাগে না, প্রয়োজন চিন্তা ও মানসিকতা। শুধু নিজেকে নিয়েই ব্যস্ত থাকলে সমাজের কোনো পরিবর্তন আসবে না। ভাবতে হবে চারপাশের মানুষ নিয়ে। পরিবর্তন ছাড়া সমাজকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। তাই আমাদের সবার মধ্যে সামাজিক মূল্যবোধ জাগাতে হবে। সামাজিক মূল্যবোধই পারে সমাজের রূপ বদলে দিতে। লেখক: আজহারুল ইসলাম সাকী শিক্ষার্থী ব্যবস্থাপনা বিভাগ, শ্যামনগর সরকারি মহসিন ডিগ্রি কলেজ সাতক্ষীরা, খুলনা, বাংলাদেশ
প্রকাশক ও সম্পাদক- রবিউল ইসলাম। প্রধান কার্যালয়ঃ ২২ পশ্চিম-ধানমন্ডি, শংকর, ঢাকা-১২০৯। মোবাইল: ০১৭১৫-২০৯৬২৪। ফোন: +৮৮০২৯৫৫১৬৯৬৩ । ই-মেইল: alochitokantho@gmail.com । স্বত্ব © ২০২১ আলোচিত কন্ঠ
Copyright © 2024 আলোচিত কণ্ঠ. All rights reserved.