বাঁধন প্রধান পঞ্চগড় প্রতিনিধি ফুলবাড়ি স্থলবন্দর রুটে ভারতীয় হাইকমিশন আবারো ভিসা প্রদান বন্ধ করেছে। ফলে বাংলাদেশের একমাত্র চতুর্দেশীয় স্থলবন্দর বাংলাবান্ধা ইমিগ্রেশন চেকপোষ্ট দিয়ে ভারত, নেপাল, ভুটানগামী হাজার হাজার মানুষ বিপাকে পড়েছেন। সম্প্রতি উত্তরবঙ্গের ৪ জেলার ব্যবসায়ি সহ বন্দর সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংগঠন লিখিত ভাবে এই ভিসা প্রদানের জন্য ভারতীয় হাইকমিশনকে অনুরোধ জানিয়েছেন। উত্তর বঙ্গের দিনাজপুর জেলার দিনাজপুর চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রি, ঠাকুরগাঁও জেলার চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রি, নীলফামারী জেলার চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রি, পঞ্চগড় জেলার চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রি, বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর আমদানি— রপ্তানী গ্রুপ লিখিত ভাবে ফুলবাড়ি—বাংলাবান্ধা রুটে ভিসা প্রদানের অনুরোধ জানিয়েছেন। ওই আবেদন সূত্রে জানা যায় বাংলাদেশের একমাত্র চতুর্দেশীয় অপার সম্ভাবনাময় স্থলবন্দর বাংলাবান্ধা ব্যবহার করে ভারতের ফুলবাড়ি রুট দিয়ে ব্যবসায়িরা নানা কাজে ভারত যাতায়াত করেন। ভারতের সঙ্গে বিপুল ব্যবসায়িক কার্যক্রমের সঙ্গে স্থানীয় কয়েক হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। ভিসা কার্যক্রম বন্ধ থাকায় অনেক মানুষই বেকার হয়ে পড়েছেন। এই এলাকার অসুস্থ রোগীদের অধিকাংশই ভারতীয় চিকিৎসকদের চিকিৎসা সেবা নিতে আগ্রহী। তারাও এই সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। অন্যদিকে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলা, আসাম, মেঘালয় সহ ভারতের বিভিন্ন এলাকায় উত্তর বঙ্গের এই জেলাগুলোর মানুষের নিকাত্নীয়রাও বসবাস করেন। তাদের সাথেও দেখা সাক্ষাত করার জন্য বাংলাদেশীরা এই রুটে গমনাগমন করেন। ভারতের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বাংলাদেশের অসংখ্য শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছেন। তারাও এই রুট ব্যাবহার করে যাতায়াতে স্বাচ্ছন্দ বোধ করে। এই রুট ব্যবহার করে ভারত,নেপাল, ভুটান, সিকিম, দার্জিলিং, কালিংপং সহ বিভিন্ন পর্যটন এলাকায় ভ্রমণ পিপাসুরা ভ্রমণ করেন। এতে ভারত,বাংলাদেশ উভয় দেশেরই রাজস্ব আয় হয়। ২০১৬ সালের ১৮ ফ্রেব্রুয়ারী বাংলাবান্ধা—ফুলবাড়ি রুটে প্রথম ভিসা কার্যক্রম শুরু হয়। পরে কোভিড ১৯ সমস্যায় ভারতের সকল রুটে ভিসা বন্ধ করে দেয়া হয়। দুই বছর বন্ধ থাকার পর এবছর ২৩ এপ্রিল আবার চালু করা হয় ভিসা কার্যক্রম। দীর্ঘদিন পর ভিসা দেয়া শুরু হলে বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরে উদ্দিপনা সৃষ্টি হয়। কিন্তু ১৫ থেকে ২০ দিন পর আবার ভিসা দেয়া বন্ধ হয়ে যায়। ফলে আবার নানা রকম সংকট দেখা দিয়েছে। ব্যবসায়ি, রোগী, শিক্ষার্থী ও পর্যটকরা বলছেন ভারত সরকার অন্যান্য রুট দিয়ে ভিসা প্রদান করে। কিন্তু ওই রুটগুলো দিয়ে যাতায়াত করলে তাদের সময় লাগে বেশি। অর্থও খরচ হয় বেশি পরিমানে। তাই তারা ফুলবাড়ি—বাংলাবান্ধা রুটে ভিসা প্রদানের অনুরোধ জানান। সংবাদকর্মীদের সংগঠন পঞ্চগড় প্রেসক্লাবের সভাপতি সাজ্জাদুর রহমান সাজ্জাদ কিডনী রোগে আক্রান্ত। সম্প্রতি চিকিৎসার জন্য চেন্নাই যাবেন তিনি। এজন্য ভারতীয় ভিসার আবেদন করলে তাকে চেংরাবান্ধা রুটে ভিসা দেয়া হয়। তিনি বলেন আমার বাড়ি পঞ্চগড়। বাংলাবান্ধা—ফুলবাড়ি রুটে ভিসা দিলে আমি ৬০ কিলোমিটারের মধ্যে ভারতের বাগডোগরা বিমানবন্দর দিয়ে চেন্নাই যেতে পারতাম। এখন আমাকে প্রায় ৩’শ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে বাগডোগরা যেতে হবে। এ জন্য সময় এবং অর্থ অনেক বেশি খরচ হয়ে যাবে। বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর আমদানী—রপ্তানীকারক গ্রুপের সাধারন সম্পাদক কুদরাতি খুদা মিলন বলেন, বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর দেশের একমাত্র চতুর্দেশীয় স্থলবন্দর। ব্যবসা, চিকিৎসা, ভ্রমণ এবং ভারতের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলাদেশী শিক্ষার্থীরা যাতায়াতের জন্য এই রুট ব্যবহার করে। কারণ খরচ কম। কিন্তু এখনো এই রুটে ভারতীয় ভিসা না দেয়ার কারণে আমরা নানা সংকটে পড়েছি । এই রুটে ভিসা প্রদানের জন্য ৪ টি জেলার ব্যবসায়িরা ভারতীয় দুতাবাসকে আবেদনের মাধ্যমে অনুরোধ জানিয়েছি। আশাকরি তারা আমাদের সংকটগুলো অনুধাবন করে ব্যবস্থা নেবেন। বাংলাবান্ধা ল্যান্ডপোর্ট ইমিগ্রেশন চেকপোষ্ট এর ইমিগ্রেশন পুলিশের অফিসার ইনচার্জ নজরুল ইসলাম জানান, আমাদের সবসময় তৈরী। এই ইমিগ্রেশন দিয়ে প্রতিদিন ২ থেকে ৩ হাজার যাত্রী যাতায়াতের ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু ভারতীয় দুতাবাস ভিসা না দেয়ায় হাজার হাজার মানুষ অসুবিধায় আছেন।
প্রকাশক ও সম্পাদক- রবিউল ইসলাম। প্রধান কার্যালয়ঃ ২২ পশ্চিম-ধানমন্ডি, শংকর, ঢাকা-১২০৯। মোবাইল: ০১৭১৫-২০৯৬২৪। ফোন: +৮৮০২৯৫৫১৬৯৬৩ । ই-মেইল: alochitokantho@gmail.com । স্বত্ব © ২০২১ আলোচিত কন্ঠ
Copyright © 2024 আলোচিত কণ্ঠ. All rights reserved.