মোঃ সাইফুর রহমান সজীবঃ বরগুনার আমতলীতে আলোচিত তানজিলা হত্যা রহস্য পুলিশ উদঘাটন করেছে। অপহরণকারী হৃদয় খাঁনের মুক্তিপণ দাবি করা মোবাইলের সূত্র ধরেই এ রহস্য উদঘাটন করা হয়।
অপহরণকারী হৃদয় খাঁন ও জাহিদুল খাঁন মাদরাসাছাত্রী তানজিলাকে অপহরণ শেষে ধর্ষণ করে। পরে তানজিলার বাবার কাছে ১৫ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। ওই দাবিকৃত টাকা না পেয়েই অপহরণকারীরা তাকে হত্যা করেছে। আসামি হৃদয় খাঁন ও জাহিদুল খাঁন পুলিশের কাছে এ হত্যা রহস্য স্বীকার করেছে। এ ঘটনায় জড়িত ঘাতকদের কঠোর শাস্তি দাবিতে আজ সকালে সদর ইউনিয়ন পরিষদ প্রাঙ্গণে এলাকাবাসী মানববন্ধন করে।
বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শাখাওয়াত হোসেন তপু আমতলীর আলোচিত মাদরাসাছাত্রী হত্যার মূল রহস্য উদঘাটনের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
পুলিশের কাছে আসামিদের স্বীকারোক্তি সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার পুঁজাখোলা গ্রামের তোফাজ্জেল খাঁনে মাদরাসায় ষষ্ঠ শ্রেণীতে পড়ুয়া কন্যা তানজিলাকে সোমবার সকালে বাড়ির সামনে থেকে চাচাতো ভাই হৃদয় খাঁন ও জাহিদুল খাঁন অপহরণ করে নিয়ে যায়। পরে একটি বাড়িতে রেখে তারা অপরূতাকে ধর্ষণ করে। ওইদিন রাতেই অপহৃতার বাবা তোফাজ্জেল খাঁনের কাছে হৃদয় খাঁন তার মোবাইল থেকে ১৫ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। বাবা তোফাজ্জেল খাঁন মুক্তিপণ দিতে বিলম্ব করে।
পরে তারা তানজিলাকে হাত-পা বেঁধে গলায় স্কার্ফ পেচিয়ে হত্যা করে। ঘাতকরা হত্যা করেই খ্যান্ত হয়নি তানজিলার মরদেহ পুজাখোলা খালের চরে হোগলপাতার খেতে কাঁদা মাটির মধ্যে লুকিয়ে রাখে। আমতলী থানার ওসি কাজী সাখাওয়াত হোসেন তপু এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এ ঘটনায় মঙ্গলবার তানজিলার বাবা তোফাজ্জেল খাঁন আমতলী থানায় সাধারণ ডায়েরী করেন। মোবাইল ফোনের সুত্র ধরে পুলিশ হৃদয় খাঁনকে আটক করে। পরে তার দেয়া তথ্যমতে অপহরণের দুইদিন পরে তানজিলার বাড়ির সামনে খালের চরে হোগলপাতার খেতের মধ্য থেকে বুধবার দুপুরে তার হাত-পা বাঁধা গলায় স্কাফ পেচানো মরদেহ পুলিশ উদ্ধার করে।
এ ঘটনায় বুধবার রাতে তানজিলার বাবা তোফাজ্জেল খান বাদী হয়ে ঘাতক হৃদয় খাঁন এবং জাহিদুল খাঁনসহ আরো অজ্ঞাত ৩ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে পুলিশ গ্রেফতারকৃত দুই আসামিকে আমতলী সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করেছে। আদালতে বিচারক মো. আরিফুর রহমানের কাছে আসামিরা ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্ধি দেন। পরে ওইদিন বিকেলে তাদের জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।
মাদরাসা ছাত্রীর বাবা তোফাজ্জেল খাঁন বলেন, অপহরণকারী হৃদয় ও জাহিদুলের পায়ে পরে আমার মেয়ের জীবন ভিক্ষা চেয়েছি। কিন্তু ওরা আমার মেয়েকে বাঁচতে দিল না। আমার মেয়েকে নির্মম নির্যাতন শেষে হত্যা করেছে। আমি এ ঘটনায় ওদের কঠোর বিচার দাবী করছি।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) মোজাম্মেল হক রেজা বলেন, আমতলীতে মাদরাসা ছাত্রী হত্যায় গত বুধবার রাতে আমতলী থানায় হৃদয় খাঁন, জাহিদুল খাঁনসহ আরো অজ্ঞাত ৩ জনের নামে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামি হৃদয় ও জাহিদুল ঘটনার বর্ণনা দিয়েছে। তাদেরকে আদালতে নিলে সেখানেও একই স্বীকারোক্তি দিলে বিচারক তাদেরকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।
সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি-খন্দকার গোলাম মওলা নকশেবন্দী। সম্পাদক/প্রকাশক-রবিউল ইসলাম। ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক-সাবিহা প্রমানিক। প্রধান কার্যালয়ঃ ২২ ধানমন্ডি শংকর ঢাকা-১২০৯, মোবাইল: ০১৭১৫-২০৯৬২৪, ফোন: +৮৮০২৯৫৫১৬৯৬৩, ই-মেইল: alochitokantho@gmail.com ।