তাহিরপুর (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি এসে গেছে শীতের বিদায়ী বার্তা আগমন ঘটছে ঋতুরাজ বসন্তের, এরই ধারাবাহিকতায় হাওর বেষ্টিত এলাকার পর্যটন কেন্দ্রের অন্যতম পর্যটন স্পট শিমুল বাগানের প্রতিটি গাছে ফুল ফুটতে শুরু করেছে এপর্যন্ত প্রায় ৭০ / ৮০ ভাগ গাছের ফুল ফুটেছে। দূর থেকে দেখলে মনে হয় লাল ফুলের গালিচা বিছিয়ে রেখেছে কেউ। প্রকৃতির সাথে বাগানের পাশেই মেলবন্ধন সৃষ্টি করেছে মেঘালয় পাহাড়, বারেকটিলা ও যাদুকাটা নদীর তীরে প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য। এখানে আসলে মন ভরে যায় সৌন্দর্য দেখে।
এ যেন এক অনবদ্য কাব্যিক ভাবনায় প্রান্তর। জয়নাল আবেদিন শিমুল বাগানটি তাহিরপুর উপজেলার উত্তর বড়দল ইউনিয়নের মানিগাঁও গ্রাম ও যাদুকাটা নদীর তীরে অবস্থিত। সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি করে আরও আধুনিকায়ন করলে দূর দূরান্ত থেকে আগত মানুষের মাঝে আকর্ষণ বাড়বে বলে জানান উপজেলার সচেতন মহল। ২০০২ সালে বাদাঘাট ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান প্রয়াত জয়নাল আবেদীন উত্তর বড়দল ইউনিয়নের মানিগাঁও গ্রামে বালু আবরিত ৩৩ একর অনাবাদী জমি ক্রয় করেন। তিনি এ বাগানে সারিবদ্ধভাবে ৩ হাজারের অধিক শিমুল চারা রোপণ করেন। প্রতি বছরের মতোই শীতের শেষে বাগানে সারিবদ্ধভাবে সাজানো ৩ হাজারের অধিক শিমুল গাছে সবুজের আবৃত ভেদ করে প্রতিটি গাছের ডালে ডালে প্রতিটি কলি ফুটছে। ফুলের গন্ধে মাতোয়ারা হয়ে আশপাশের বাসিন্দা, পর্যটক ও দর্শনার্থীদের আশা শুরু হয়েছে । প্রকৃতিপ্রেমীরা ছুটির দিনসহ বিশেষ দিনগুলোতে বেড়াতে, শিমুল ফুল, প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য দেখতে লাল ফুলের গালিচা বিছিয়ে প্রতি বছরের মত এবারও আহবান করছে প্রকৃতি প্রেমী, পর্যটক ও সৌন্দর্য পিপাসুদের।
বাগানে পর্যটকদের কিছুটা আনন্দ দেয়ার জন্য শিশু, কিশোর, যুবকদের তৈরি ফুল দিয়ে তৈরি মালা, লাভ চিহ্ন ও দোলনা, সুসজ্জিত ঘোড়া, আছে ছবি তোলার জন্য ফটোগ্রাফার তারা অনেকেই এখানে জীবিকা নির্বাহ করছে। বাগানটিকে গিরে ভ্রাম্যমাণ বিভিন্ন দোকানীদের জীবিকা নির্বাহের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। বাদাম বিক্রেতা রহিম আলী জানান, প্রতিবছরই শীতের শেষে এমন সময়টায় শিমুল ফুল লাল পাপড়ি মেলে সৌন্দর্য বিলানোর কারণে প্রকৃতিপ্রেমী, পর্যটক ও সৌন্দর্য পিপাসুদের আগমন ঘটে।এখানে সারাদিন আগত পর্যটকদের কাছে যা বেচা যায় তা দিয়ে কোন রকমে সংসার চলে। বাগানে মানুষের আগমন বেশি হলে বেচা কেনা বেশি হয়। দিনাজপুর থেকে আসা এক দর্শনার্থী শামিম বলেন, শিমুল বাগানে ফুল ফুটেছে। প্রকৃতির রূপ লাবণ্যে সজ্জিত শিমুল বাগানের সৌন্দর্য উপভোগ করতে এসেছি ভাল লাগছে।
এখানে না আসলে বুঝতে পারতাম না প্রকৃতি এত সুন্দর।তবে রাস্তাঘাট ভালো হলে পর্যটকদের কষ্ট কম হতো। শিমুল বাগানের স্বত্বাধিকারী বাদাঘাট ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান রাখাব উদ্দিন বলেন,শিমুল বাগান আমার বাবা জয়নাল আবেদীন করে রেখে গেছেন, আমার বাবা একজন বৃক্ষপ্রেমী ছিলেন।প্রথমে তুলা সংগ্রহ করার জন্য করা হলেও,পরে এই বাগানের ফুলের সৌন্দর্য দেশ-বিদেশে ছড়িয়ে পড়লে দর্শনার্থীরা বাগান দেখতে ভিড় জমান। তাই পর্যটকদের কথা মাথায় রেখে প্রতিবছরই বাগানকে সুসজ্জিত করা হয়। তাহিরপুর উপজেলার সুযোগ্য সহকারী কমিশনার ভূমি আসাদুজ্জামান রনি বলেন , পাহাড়ঘেরা সৌন্দর্য পর্যটনের পাশে আরেক নতুন আকর্ষণ তাহিরপুর উপজেলার এই শিমুল বাগানটি। দিন দিন সবার কাছে আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে জেলার আলোচিত পর্যটন স্পট হিসেবে। এ বাগানটি দেখার জন্য প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে পর্যটকরা ছুটে আসছেন ।
প্রকাশক ও সম্পাদক- রবিউল ইসলাম। প্রধান কার্যালয়ঃ ২২ পশ্চিম-ধানমন্ডি, শংকর, ঢাকা-১২০৯। মোবাইল: ০১৭১৫-২০৯৬২৪। ফোন: +৮৮০২৯৫৫১৬৯৬৩ । ই-মেইল: alochitokantho@gmail.com । স্বত্ব © ২০২১ আলোচিত কন্ঠ
Copyright © 2024 আলোচিত কণ্ঠ. All rights reserved.