কক্সবাজার প্রতিনিধিঃ কখনো সাংবাদিক, কখনো আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সোর্স পরিচয়ে চাঁদাবাজি মামলায় গ্রেফতার হওয়া প্রতারক মনছুর আলম মুন্নাকে এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত।
গত ২১ এপ্রিল একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতের বিজ্ঞ বিচারক আসাদ উদ্দিন মোঃ আসিফ।
আদালত সুত্রে জানা গেছে, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা রুহুল আমিন গত ১৬ এপ্রিল আদালতে ৫ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন। ওইদিন রিমান্ডের আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত ২১ এপ্রিল মুন্নার রিমান্ড শুনানির জন্য দিন ধার্য করেন। ২১ এপ্রিল বাদী এবং আসামি উভয়পক্ষের আইনজীবীদের শুনানি শেষে সদর আদালতের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আসাদ উদ্দিন মোঃ আসিফ আসামি প্রতারক মুন্নার এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
কোর্ট ইন্সপেক্টর মোঃ গোলাম জিলানী রিমান্ডের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
প্রতারক মনছুর আলম মুন্না (৩০) কক্সবাজারের রামু উপজেলার গর্জনিয়ার দক্ষিণ বড়বিল এলাকার আবদুস সালামের ছেলে। তিনি পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্ব ঘোনার পাড়া সেলিম ড্রাইভারের বাড়িতে ভাড়া থেকে কখনো সাংবাদিক,র্যাব এবং বিভিন্ন সংস্থার সোর্স পরিচয় দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে জমি, ফ্লাট দখল, চাঁদা আদায় ও মাদক ব্যবসা করে আসছিল।
এর আগে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সাংবাদিকের নগ্ন ছবি ছড়িয়ে চাঁদাবাজি, ভুয়া সাংবাদিক হিসেবে চাঁদাবাজি করতে গিয়ে গ্রেফতার হয়ে কারাভোগও করেছে এই প্রতারক মুন্না।
র্যাবের সোর্স পরিচয়ে নুরুল আলম নামে ব্যবসায়ীকে ক্রসফায়ার ও মাদক মামলাসহ বিভিন্ন মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে ১ লাখ টাকা চাঁদা আদায়ের অভিযোগে ৩ এপ্রিল বিকেলে কক্সবাজার শহরের লালদিঘীর পাড় এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে র্যাব-১৫।
র্যাব জানায়, কক্সবাজার সদরের ঝিলংজা ইউনিয়নের পশ্চিম লারপাড়া এলাকার জনৈক নুরুল ইসলাম র্যাব-১৫ এর কাছে অভিযোগ দায়ের করেন, জমি-জমা সংক্রান্তে দীর্ঘদিন যাবত একই এলাকার সেলিমের সঙ্গে বিরোধের জেরে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় অভিযোগ ও কক্সবাজার কোর্টে মামলা হয়। এ বিষয়টি সম্পর্কে মনছুর আলম মুন্না অবগত ছিলেন। এই সুযোগে তার সাথে কক্সবাজার র্যাবের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সঙ্গে সু-সম্পর্ক রয়েছে বলে জানিয়ে চাঁদা দাবি করেন। অন্যথায় তার বিরুদ্ধে জমি-জমা সংক্রান্তে দায়েরকৃত মামলায় র্যাবকে দিয়ে গ্রেপ্তারসহ বিভিন্নভাবে হয়রানি ও ভয়-ভীতি প্রদর্শন করেন।
অভিযোগকারী নুরুল ইসলাম একপর্যায়ে এক লাখ টাকা দিতে সম্মতি জ্ঞাপন এবং গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর নগদ ৪০ হাজার টাকা ও গত ৩১ জানুয়ারি ৬০ হাজার টাকা প্রদান করেন। পরবর্তীতে গত ১৬ মার্চ পুনরায় এক লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। পরে বিভিন্ন মাধ্যমে জানতে পারেন ওই টাকা মনছুর আলম মুন্না নামে কোনো র্যাব সদস্য কিংবা অন্য কোনো ব্যক্তিকে দেননি। বরং তাদের পরিচয় দিয়ে চাঁদা দাবি করে আসছে।
এছাড়াও শহরে সমিতি পাড়া ও ঝিলংজায় সাংবাদিক পরিচয়ে চাঁবাজি কালে আটক হয়েছিল। এই প্রতারক মুন্না বিভিন্ন সময় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেক আইডি খুলে বিভিন্ন সম্মানিত ব্যক্তিদের মান ক্ষুন্নের মতো জঘন্য কাজেও জড়িত ছিল।
র্যাব-১৫ এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছেন, গ্রেপ্তারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃত মনছুর আলম মুন্না স্বীকার করেন, তিনি দীর্ঘদিন যাবৎ নিজেকে সাংবাদিকসহ র্যাব এবং বিভিন্ন সংস্থার সোর্স পরিচয় দিয়ে আসছিলেন। এ সকল পরিচয় দিয়ে তিনি বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা চাঁদা আদায় করতেন। তিনি ভিকটিমদের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে ভয়-ভীতি প্রদর্শন করতেন ও হুমকি দিতেন এবং তার চাহিদা মোতাবেক চাঁদা প্রদানে বাধ্য করতেন।
প্রকাশক ও সম্পাদক- রবিউল ইসলাম। প্রধান কার্যালয়ঃ ২২ পশ্চিম-ধানমন্ডি, শংকর, ঢাকা-১২০৯। মোবাইল: ০১৭১৫-২০৯৬২৪। ফোন: +৮৮০২৯৫৫১৬৯৬৩ । ই-মেইল: alochitokantho@gmail.com । স্বত্ব © ২০২১ আলোচিত কন্ঠ
Copyright © 2024 আলোচিত কণ্ঠ. All rights reserved.