নিজস্ব প্রতিবেদক: পবা উপজেলার কাশিয়াডাঙ্গা এলাকায় আশ্রয়ণ প্রকল্পের ৩০টি বাড়ির নির্মাণ কাজ স্বচ্ছতার সাথে এগিযে চলছে। পবা উপজেলার সদ্য বিদায়ী নির্বাহী অফিসার আবু সালেহ্ মোহাম্মদ হাসনাত। তিনি স্বচ্ছতার সাথে কাজ করে গেলেও একটি মহল তাকে পবা উপজেলা থেকে সরিয়ে দিতে নানা পদক্ষেপ গ্রহন করে। শুধু তাই নয় তাঁর বিরুদ্ধে বিভিন্ন পত্রিকায় প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। তবে এ বিষয়ে নির্বাহী অফিসার আবু সালেহ্ মোহাম্মদ হাসনাত প্রতিবাদ করেন এবং বিভিন্ন স্থানীয় পত্রিকায় প্রতিবাদ বিজ্ঞপ্তি দেন। তাঁর বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ বিষয়ে সরেজমিনে তদন্ত করতে গেলে পাওয়া যায় ভিন্ন তথ্য। যাদের বক্তব্য দিয়ে প্রতিবেদনে প্রকাশ করা হয়েছিলো তারাই বলছেন উল্টো কথা। তাদের কথা অনুযায়ী আশ্রয়ণ প্রকল্প নিয়ে ইউএনও আবু সালেহ্ মোহাম্মদ হাসনাত কে জড়িয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে উপস্থাপিত তথ্যগুলো বেশ মনগড়া ও তথ্যহীন মনে হয়েছে। সদ্য বিদায়ী ইউএনও নাকি ৩০টি বাড়ি নির্মাণে যেসব ইট লেগেছে তা একটি ইটভাটার মালিকের নিকট থেকে পুকুর কাটতে দেয়ার অনুমতির বিপরীতে ঘুষ হিসেবে নেয়া হয়েছিলো। এছাড়াও অন্য ইট ভাটার মালিকদেরও কোন টাকা দেননি তিনি। কিন্তু ইটভাটার মালিকদের সাথে কথা বলে জানা যায় ভিন্ন তথ্য। বাড়ি নির্মাণের জন্য তিনি প্রায় ২০টি ইট ভাটা থেকে ইট ক্রয় করেন। তবে ইট সরবরাহ নিশ্চিত করা মাত্রই বিল/ভাউচারের বিপরীতে ভাটা মালিকদের নগদ অর্থে মূল্য পরিশোধ করা হয়েছে বলে জানান সরবরাহকারিরা। সরবরাহকারী ইট ভাটা মালিক সমিতির সভাপতি ও ক্যাশিয়ারসহ বেশ কয়েকটি ইট ভাটার মালিক যেমন মেসার্স এসএমআই ব্রিকস ভাটার মালিক মুকুল হোসেন, আরবিআর ব্রিকস’র স্বত্বাধিকার আক্তার হোসেন, এমএবি ব্রিকসের মালিক সানু ও এসকেএস ব্রিকসের মালিক সালাম সহ অন্যান্য সরবরাহকারিরা বলেন, ইট সরবরাহের বিপরীতে পুকুর খননের অনুমতির বিষয়টি সম্পূর্ণরূপেই ভিত্তিহীন। প্রতি হাজার ইটের মুল্য নয় হাজার টাকা দরে ইউএনও’র একজন প্রতিনিধি তাদের ভাটা থেকে নগদমূল্যে ইট কিনেছেন। কাটাখালি ইটভাটা মালিক সমিতির সভাপতি আব্দুস সালাম শেখ জানান, “পবা উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে নির্দিষ্ট একটি ভাটা থেকে ইট কেনার প্রস্তাব দেয়া হলেও, তিনি সকল ইট ভাটা থেকে সমহারে ইট কেনার সিদ্ধান্ত নেন।” বসবাসকারি ও সুবিধাভোগীরা বলেন, প্রকল্পের পুরোতন টিন সেড ঘর ভেঙ্গে যে বাড়িগুলো নির্মিত হয়েছে সেগুলোর গুণগতমান পার্শ্ববর্তী আশ্রয়ণ প্রকল্পের ২৬টি বাড়ির চাইতে অনেকগুণে ভাল বলে মন্তব্য করেন। এছাড়া ও প্রতিটি পিলারে চারটি করে রড ব্যবহার করা হয়েছে। আশ্রয়ণ প্রকল্পের সুবিধাভোগী ও বসবাসকারিরা জানান, প্রথমে কয়েক ট্রলি দুই নাম্বার ইট পাঠানো হয়েছিল ইট ভাটা থেকে। আমরা তাৎক্ষণিকভাবে ইউএনও স্যারকে ফোন দিলে তিনি এসে সেগুলো ফেরত পাঠান এবং ভালমানের ইট সরবরাহ নিশ্চিত করতে বলেন। সে মোতাবেক পরবর্তী সময়গুলোতে আর খারাপ ইট এখানে আসেনি। আরো উল্লেখ করা হয় প্রকল্প নিয়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সভা হয়নি। কিন্তু আশ্রয়ণ প্রকল্প ও এর অগ্রগতি নিয়ে গঠিত কমিটির সদস্যরা গত ৩০ জুলাই ও ১৮ আগস্ট সহ একাধিক সভা করেছেন এবং সরেজমিনে চলমান প্রকল্পের কাজ পরিদর্শনও করেছেন। কমিটির সদস্যদের স্বাক্ষরিত উপস্থিতি সভার দাপ্তরিক ডকুমেন্ট আছে কার্যালয়ে। এদিকে খড়খড়ি হাট নিয়ে অনুসন্ধান করলে জানা যায় ইউএনও’র নিকট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে “নির্ধারিত টোলের চেয়ে অধিক হারে খাজনা আদায়” শিরোনামে একটি অভিযোগ দাখিল করে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করে। এ প্রেক্ষিতে ৩ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি অভিযোগের সত্যতা আছে মর্মে হাটের ইজারা বাতিলের প্রস্তাব দিয়ে প্রতিবেদন দাখিল করেন। ইউএনও বিধি অনুযায়ী উপজেলা কমিটির সভায় প্রায় এক কোটি মূল্যমানের সেই হাটের ইজারা বাতিলের সিদ্ধান্ত নেন এবং ইজারা বাতিল করে খাস আদায়ের জন্য এসিল্যান্ডকে দায়িত্ব দেন। এই ধরনের পজিটিভ সিদ্ধান্ত গ্রহণের কারণে ইউএনও এর সুনাম ক্ষুন্ন করার জন্য সংশ্লিষ্ট হাটের সংক্ষুব্ধ ইজারাদারগণ কিংবা অন্যকোন সুবিধাভোগী মিথ্যা তথ্য সরবরাহ করেছে বলে মন্তব্য স্থানীয় সচেতন ব্যক্তিদের। আশ্রয়ন প্রকল্পের ঘর নির্মাণে নিয়মানুযায়ী প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির মাধ্যমে উপজেলা প্রশাসন কাজটি বাস্তবায়ন করে থাকে। এই কমিটির আহ্বায়ক ইউএনও। আর সদস্য সচিব হচ্ছেন উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা প্রকৌশলী আবু বাশির (পিআইও)। এছাড়াও ঐ কমিটিতে আছেন, সাবেক উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভ‚মি) অভিজিত সরকার, স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) প্রকৌশলী মকবুল হোসেন ও হড়গ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ। তাঁরা জানান, প্রকল্পের কাজ চলমান। বিভিন্ন সময় মিটিং হয়েছে। মতামত ও পরামর্শ নেওয়া হয়। সরেজমিনে প্রকল্প স্থান পরিদর্শন করেছেন এবং কাজের মান ভাল পেয়েছেন বলে জানান। আর উপকারভোগীগণ কেউ কাজের মান বিষয়ে কোন প্রকার অভিযোগ করেননি বলে জানান তাঁরা। এ বিষয়ে সদ্য বিদায়ী নির্বাহী অফিসার আবু সালেহ্ মোহাম্মদ হাসনাত বলেন, তিনি প্রায় এক বছর ধরে এই উপজেলায় সম্মানের সাথে সরকারি সেবা জনগণকে প্রদান করেছেন। তাঁর সম্মান ক্ষুন্ন করার জন্য এ ধরনের ভিত্তিহীন সংবাদ প্রকাশ হয়ে থাকতে পারে। এ বিষয়ে সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে বাস্তব অবস্থা তুলে ধরার জন্য সাংবাদিকদের অনুরোধ করেন তিনি।
প্রকাশক ও সম্পাদক- রবিউল ইসলাম। প্রধান কার্যালয়ঃ ২২ পশ্চিম-ধানমন্ডি, শংকর, ঢাকা-১২০৯। মোবাইল: ০১৭১৫-২০৯৬২৪। ফোন: +৮৮০২৯৫৫১৬৯৬৩ । ই-মেইল: alochitokantho@gmail.com । স্বত্ব © ২০২১ আলোচিত কন্ঠ
Copyright © 2024 আলোচিত কণ্ঠ. All rights reserved.