তদন্তে সত্যতা প্রমাণিত! লিপন খান , কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধিঃ কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলায় ভুয়া কাগজপত্র প্রদর্শন ও তথ্য গোপন করে মো. শহিদুল্লাহ নামে এক ব্যক্তি মিরদী ফাজিল ডিগ্রী মাদরাসায় অধ্যক্ষ পদে নিয়োগের অভিযোগ, তদন্ত কমিটি গঠন ও সত্যতার প্রতীয়মান হয়েছে । গত ২২ আগস্ট মিরদী ফাজিল ডিগ্রি মাদরাসার বিদ্যুৎসাহী সদস্য মো. রফিকুল ইসলাম পাকুন্দিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে ভুয়া কাগজপত্র প্রদর্শন ও তথ্য গোপন করে মো. শহিদুল্লাহ'র বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন। এর প্রেক্ষিতে পাকুন্দিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ৩ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে বিষয় খতিয়ে দেখে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেন। উক্ত তদন্ত কমিটিতে পাকুন্দিয়া কৃষি কর্মকর্তাকে প্রধান করে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক দুই শিক্ষা কর্মকর্তাকে দিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করে। তদন্ত কমিটি তাদের তদন্তে সত্যতা পাওয়ায় ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পাকুন্দিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে প্রতিবেদন দাখিল করেন। উক্ত তদন্ত প্রতিবেদনটি যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য পাকুন্দিয়ার ইউএনও জনাব মোঃ বিল্লাল হোসেন গত ১২ সেপ্টেম্বর ৫৮৫ নং স্বারকে কিশোরগঞ্জ জেলা প্রশাসকের প্রেরন করেন। অভিযুক্ত মো. শহিদুল্লাহ পার্শ্ববর্তী কাপাসিয়া উপজেলার বেলাশী গ্রামের মো.আবু তাহের এর ছেলে। তিনি গত বছরের ৯ সেপ্টেম্বর পাকুন্দিয়া উপজেলার মিরদী ফাজিল মাদ্রাসায় অধ্যক্ষ পদে যোগদান করেন। এর আগে আরও দুটি মাদ্রাসায় চাকুরী করার কালীন সময়ে নানা দূর্নীতি আর জালিয়াতির অভিযোগে তিনি চাকুরী হারান। এমনকি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট বিভাগ তাঁর নানা অনিয়ম দূর্নীতি আর জালিয়াতির অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তার চাকুরী ডিসমিস করে যেন তিনি আর কোন মাদ্রাসায় চাকুরী করতে না পারে। এতসব অভিযোগ গোপন করে পূনরায় তিনি মিরদী ফাজিল ডিগ্রি মাদ্রাসায় মোটা অংকের মাসোহারা দিয়ে তথ্য গোপন করে চাকুরী জুটিয়ে নেন। এছাড়াও পূর্বের দুটি মাদ্রাসার চাকুরীর যে সমস্ত প্রত্যায়ন পত্র দাখিল করেছেন এগুলোও ভূয়া বলে তদন্ত কমিটির কাছে প্রমাণিত প্রতীয়মান। তদন্ত কমিটির কাছে তিনি কোন সঠিক বিষয় উপস্থাপনও করতে পারেনি বলেও জানা যায়। জানা গেছে, ২০২৩ সালের ৫ মার্চ জাতীয় ও স্থানীয় দৈনিকে উপজেলার মিরদী ফাজিল মাদরাসার অধ্যক্ষ পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। এর প্রেক্ষিতে ওই বছরের ৯ সেপ্টেম্বর মো. শহিদুল্লাহ অধ্যক্ষ পদে নিয়োগ পান। এরপরই তার নিয়োগের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠে। অভিযোগ উঠে, তাঁর সর্বশেষ কর্মরত প্রতিষ্ঠানের ভুয়া প্রত্যয়নপত্র এবং সেই প্রতিষ্ঠানে উপাধ্যক্ষ পদে বরখাস্ত হওয়ার তথ্যটি গোপন করে মো.শহিদুল্লাহ মিরদী ফাজিল মাদরাসায় অধ্যক্ষ পদের লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন এবং নিয়োগপ্রাপ্ত হন। যা নিয়ম বহির্ভূত। এর প্রেক্ষিতে চলতি বছরের ২২ আগস্ট মিরদী ফাজিল মাদরাসার বিদ্যুৎসাহী সদস্য মো.রফিকুল ইসলাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে একটি লিখিত অভিযোগ করেন। পরবর্তীতে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ নুরে আলমকে প্রধান করে তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করেন ইউএনও। সঠিক তথ্য-উপাত্তের মাধ্যমে কমিটিকে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। গত ১১ সেপ্টেম্বর ওই কমিটি তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। এতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র যাচাই-বাছাইয়ে অধ্যক্ষ পদে মো.শহিদুল্লার নিয়োগ বৈধ নয় এবং জাল জালিয়াতির বিষয়টি প্রতীয়মান বলে তদন্ত কমিটি রিপোর্ট দাখিল করে। এ বিষয়ে জানতে মিরদী ফাজিল ডিগ্রী মাদরাসার অধ্যক্ষ মো. শহিদুল্লাহর সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি মিডিয়ার সামনে আসতে অপারগতা প্রকাশ করেন। সেই সাথে ভূলত্রুটি ক্ষমা করে সংবাদ প্রকাশ থেকে বিরত থাকতে অনুরোধও করেন। পাকুন্দিয়ার ইউএনও মো. বিল্লাল হোসেন সাংবাদিকদের জানান, ওই মাদ্রাসার বিদ্যুৎসাহী সদস্যের আবেদনের প্রেক্ষিতে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত কমিটি সঠিক তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে প্রতিবেদন দাখিল করলে প্রতিবেদনের আলোকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রশাসকের কাছে পাঠানো হয়েছে।
প্রকাশক ও সম্পাদক- রবিউল ইসলাম। প্রধান কার্যালয়ঃ ২২ পশ্চিম-ধানমন্ডি, শংকর, ঢাকা-১২০৯। মোবাইল: ০১৭১৫-২০৯৬২৪। ফোন: +৮৮০২৯৫৫১৬৯৬৩ । ই-মেইল: alochitokantho@gmail.com । স্বত্ব © ২০২১ আলোচিত কন্ঠ
Copyright © 2024 আলোচিত কণ্ঠ. All rights reserved.