রাজধানীর ধানমন্ডিতে ফ্ল্যাট বিক্রির কথা বলে ক্রেতার লাখ লাখ টাকা লুট করে নেওয়ার অভিযোগে ছয়জনকে গ্রেফতার করেছে ডিএমপির মিরপুর মডেল থানা পুলিশ।
গ্রেফতাররা হলেন- মো. মহসিন মুন্সি, মো. মাজাহারুল ইসলাম, মো. রেজাউল করিম, মো. তৈয়ব, মো. হুমায়ুন কবির ও নূর মোহাম্মদ ওরফে নতু। তাদের কাছ থেকে ৫৭ লাখ ৫০ হাজার টাকাসহ একটি পিস্তল সদৃশ্য গ্যাস লাইট ও একটি লোহার সিন্দুক জব্দ করা হয়।
পুলিশ বলছে, ফ্ল্যাট কিনতে গিয়ে হারুনুর রশিদ ভূঞা নামের একজন প্রতারণার শিকার হয়ে ৭২ লাখ ৮০ হাজার টাকা খোয়ান। পরে হারুন ও তার স্ত্রী-সন্তানদের রুমের মধ্যে আটকে তালাবদ্ধ করে রাখে প্রতারকরা।
বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান মিরপুর বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. মাকছুদের রহমান।
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, ধানমন্ডির বাসিন্দা ভুক্তভোগীর নাম মো. হারুনুর রশিদ ভূঞা (৬০)। তিনি নাফকো ডেভেলপার কোম্পানি লিমিটেডের ধানমন্ডির ৪/এ নির্মাণাধীন ১০ তলা ভবনের দ্বিতীয়, তৃতীয় ও অষ্টম তলা কেনার জন্য তিন কোটি ৭৫ লাখ টাকা মূল্যে ৩০ লাখ টাকা বায়নানামা দলিল মূলে বায়না করেন। এরপর বিভিন্ন সময়ে এক কোটি ২৩ লাখ টাকা প্রদান করেন হারুনুর রশিদ।
পরে নাফকো ডেভেলপার কোম্পানির ডিএমডি ও এমডি মোবাইল ফোনে ক্রেতা হারুনুর রশিদকে জানান, ৮ অক্টোবর সন্ধ্যার পর মিরপুর মডেল থানার বাসা নং-৯/২, ব্লক-বি, সেকশন-০৬, রোড নং-৫ এ তার অফিসে রেজিস্ট্রেশন করে দেওয়া হবে এবং রেজিস্ট্রেশনের জন্য বকেয়া টাকা সঙ্গে করে আনতে হবে।
তখন ক্রেতা হারুনুর রশিদ ডিএমডি ফয়সাল শেখকে বকেয়া টাকা পে-অর্ডারের মাধ্যেমে দিতে চাইলে তিনি তাকে নগদ টাকা নিয়ে আসার জন্য অনুরোধ করেন।
মিরপুর বিভাগের ডিসি মাকছুদের রহমান আরও বলেন, এমডি ও ডিএমডির অনুরোধে ৮ অক্টোবর সন্ধ্যার দিকে ক্রেতা হারুনুর রশিদ ও তার পরিবারের সদস্যসহ নগদ ৭২ লাখ ৮০ হাজার টাকা দুটি ব্যাগে করে নিয়ে নাফকো ডেভেলপার কোম্পানির অফিসে যান।
এ সময় হারুনের কাছে থাকা সাদা শপিং ব্যাগের ভেতরে ৩২ লাখ ৮০ হাজার টাকাসহ অজ্ঞাতনামা এক ব্যক্তি কার পার্কিং থেকে হারুনকে ছয়তলার অফিস কক্ষে নিয়ে যান। অবশিষ্ট ৪০ লাখ টাকা হারুনের স্ত্রী একটি ব্যাগে করে নিয়ে অফিসের নিচতলায় কার পার্কিংয়ে ব্যক্তিগত গাড়ির ভেতর অবস্থান করেন।
ডিসি মাকছুদের রহমান বলেন, এমন সময় ডিএমডি ফয়সাল শেখের অফিসে হঠাৎ অজ্ঞাতনামা ২০ থেকে ২৫ জন ব্যক্তি মুখে মাস্ক পরা অবস্থায় পিস্তল সদৃশ্য বস্তু দিয়ে গুলি করার ভয় দেখিয়ে হারুনকে মারধর করে ৩২ লাখ ৮০ হাজার টাকা কেড়ে নেয় ও তাদের পাশের রুমে আটকে রাখে।পরে অজ্ঞাত ব্যক্তিরা কার পার্কিংয়ে থাকা হারুনের স্ত্রী, ছেলে, মেয়ে ও ড্রাইভারকে মারধর করে তাদের কাছে থাকা আরও ৪০ লাখ টাকা কেড়ে নেয়। এছাড়া হারুনের স্ত্রীর গলায় থাকা এক ভরি ওজনের সোনার চেইন ও পরিবারের সদস্যদের ব্যবহৃত পাঁচটি মোবাইল ফোন কেড়ে নেয়। এরপর হারুনের স্ত্রী, ছেলে, মেয়ে ও ড্রাইভারকে ডিএমডি ফয়সাল শেখের অফিস কক্ষের পাশের রুমে আটকে রেখে বাইরে থেকে তালাবদ্ধ করে চলে যায়।মিরপুর বিভাগের ডিসি বলেন, তাদের চিৎকারে পার্শ্ববর্তী লোকজন ছুটে আসে এবং মিরপুর থানায় বিষয়টি জানালে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের উদ্ধার করে। পরবর্তীতে ঢাকার বিভন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে অপরাধীদের গ্রেফতার করে ও তাদের কাছ থেকে নগদ ৫৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা ও অন্যান্য আলামত উদ্ধার করে। এ ঘটনায় মিরপুর মডেল থানায় ৯ অক্টোবর একটি মামলা রুজু হয়েছিল।
প্রকাশক ও সম্পাদক- রবিউল ইসলাম। প্রধান কার্যালয়ঃ ২২ পশ্চিম-ধানমন্ডি, শংকর, ঢাকা-১২০৯। মোবাইল: ০১৭১৫-২০৯৬২৪। ফোন: +৮৮০২৯৫৫১৬৯৬৩ । ই-মেইল: alochitokantho@gmail.com । স্বত্ব © ২০২১ আলোচিত কন্ঠ
Copyright © 2024 আলোচিত কণ্ঠ. All rights reserved.