মোঃ সাহিদুল ইসলাম,নীলফামারী প্রতিনিধিঃ পাঁচশত কোটি টাকা লুটপাটের মাধ্যমে ক্রয়কৃত নিম্নমানের প্রিপেইড মিটার স্থাপন বন্ধের দাবিতে নীলফামারীর ডোমারে স্মারকলিপি প্রদান করেছেন নেসকোর আওতাধীন বিদ্যুৎ গ্রাহকরা।
সোমবার (৬ই জানুয়ারী) সকালে ডোমার বিদ্যুৎ গ্রাহক সমিতির সভাপতি মোঃ গোলাম কুদ্দুস আইয়ুবের নেতৃত্বে অন্যান্য নেতারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ নাজমুল আলম বিপিএএ'র কাছে স্মারকলিপিটি প্রদান করেন। যা বর্তমান স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন, যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা বরাবর পাঠানোর আহ্বান জানানো হয়।
স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) মাধ্যমে ১৯৮৩ থেকে ২০১৭ সাল অব্ধি বিদ্যুৎ ব্যবহার করে ডোমারের গ্রাহকরা। এরপর ২০১৭ সাল থেকে নেসকো পিএলসির কাছে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড হস্তান্তর করা হয়। তখন থেকেই একের পর এক লাগামহীন বাড়তি চার্জ বসিয়ে রংপুর ও রাজশাহী বিভাগে শত শত কোটি টাকা লুটপাট করা হয়েছে। যা বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের চার্জ ও নেসকো পিএলসির চার্জ সমন্বয় করলে স্পষ্ট বোঝা যায়। বর্তমানে নতুন করে মানুষের পকেট কাটার মেশিন হিসেবে প্রিপেইড মিটার সাধারণ মানুষের ঘাড়ে চাপাচ্ছেন তারা। নেসকোর ব্যবস্থাপনা পরিচালকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির তদন্ত চলমান। অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে বাংলাদেশ ব্যাংক অর্থায়ন বন্ধ ঘোষণা করেছে।
সাধারণ গ্রাহকরা নেসকোর বাড়তি চার্জ সইতে পারছে না উল্লেখ করে আরও বলা হয়, এরই মধ্যে যদি বিতর্কিত প্রিপেইড মিটার স্থাপন করা হয়- তাহলে সেটি হবে মরার উপর খাড়ার ঘাঁ। এই মিটার ক্রয়ে ইতোমধ্যে পাঁচশত কোটি টাকা লুটপাট করা হয়েছে। এই প্রিপেইড মিটারটি অতি মূল্যায়িত হওয়ায় গ্রাহকের ঘাঁড়ে তা আদায় করা হবে। জনগণের পকেট কাটার স্মার্ট ফন্দি প্রিপেইড মিটারের জটিল ব্যবস্থাপনা ও দুর্নীতিগ্রস্ত নিম্নমানের প্রিপেইড মিটার স্থাপন নিঃস্প্রয়োজন। হাইকোর্ট বিভাগে এ-সংক্রান্ত রিটের নিষ্পত্তি না করেই তড়িঘড়ি করে তারা প্রিপেইড মিটার স্থাপনের চক্রান্ত করছে, যা আইন পরিপন্থী। কৃষি কাজে ব্যবহৃত সেচ পাম্পগুলো মৌসুমের শুরুতে বাকিতে সার, বিদ্যুৎ ব্যবহার করে ফসল তুলে বিক্রি করার পর পরিশোধ করে। বিদ্যুৎ ব্যবহার করার আগেই মিটার ভাড়া, ভ্যাট ও ডিমান্ড চার্জ কেটে নেওয়া হবে। অথচ বিইআরসির নিয়ম অনুযায়ী ব্যবহৃত সার্ভিস চার্জ, ডিমান্ড চার্জ ও ভ্যাটসহ বিদ্যুতের দাম নিধারণ করে। এর বাহিরে কোনোপ্রকার চার্জ নেয়ার সুযোগ না থাকলেও চার্জগুলো দ্বিতীয় বার আদায় করছে।
আরও জানা যায়, বিদ্যুৎ ও ইন্টারনেট না থাকলে রিচার্জ করা যাবে না। মোবাইলের মতো মিটারে বিভিন্ন অপশন রয়েছে। যা সহজে গ্রামের অশিক্ষিত, সহজ-সরল গ্রাহকরা ব্যবহার করতে পারবে না। রিচার্জের সময় কোড নম্বর ভুল হলে লক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আবার লক হয়ে গেলে বিদ্যুৎ বিহীন থাকতে হবে। প্রিপেইড মিটার স্থাপন করা হলে হাজার হাজার কর্মচারী বেকার হয়ে যাবে বলেও স্মারকলিপিতে উল্লেখ করেন গ্রাহক সমিতির নেতারা।
এবিষয়ে ডোমার বিদ্যুৎ গ্রাহক সমিতির সভাপতি মোঃ গোলাম কুদ্দুস আইয়ুব বলেন, গত মাসে ২৬ তারিখে স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও যুব ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূইয়ার ডোমারে আসার কথা ছিল। কিন্তু সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ডের কারণে উনি নীলফামারী থেকে ফিরে যান। তার হাতে স্মারকলিপিটি দেওয়ার কথা ছিল। এছাড়াও বিগত স্বৈরাচারী সরকারের মন্ত্রী, এমপি, বিদ্যুৎ বিভাগের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও মিটার আমদানিকারক কোম্পানির নীলনকশার ভোগান্তিতে আমরা পড়তে চাই না। দূর্নীতি জিতলে হেরে যাব বাংলাদেশ।
এব্যাপারে ডোমার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা পরিষদের প্রশাসক মোঃ নাজমুল আলম বিপিএএ বলেন, স্মারকলিপিটি আমরা পাওয়ার পর সেটি সরকারের যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের মাননীয় উপদেষ্টাকে পাঠানো হয়েছে।
প্রকাশক ও সম্পাদক- রবিউল ইসলাম। প্রধান কার্যালয়ঃ ২২ পশ্চিম-ধানমন্ডি, শংকর, ঢাকা-১২০৯। মোবাইল: ০১৭১৫-২০৯৬২৪। ফোন: +৮৮০২৯৫৫১৬৯৬৩ । ই-মেইল: alochitokantho@gmail.com । স্বত্ব © ২০২১ আলোচিত কন্ঠ
Copyright © 2025 আলোচিত কণ্ঠ. All rights reserved.