মোঃ খলিলুর রহমান,সাতক্ষীরাঃ ঘন কুয়াশা ও হিমেল বাতাসে জেঁকে বসেছে শীত। বেলা বাড়লেও সূর্যের দেখা মেলে না তেমন। শীতের তীব্রতায় বিপর্যস্ত জনজীবনে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছেন নিম্নআয়ের মানুষ। এরই মধ্যে সাতক্ষীরায় শীতের তীব্রতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শিশুদের সর্দি-কাশি, জ্বর ও ঠান্ডাজনিত রোগের প্রকোপ বেড়েছে।
জানা গেছে, সাতক্ষীরা শিশু হাসপাতাল, সদর হাসপাতাল এবং মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ার্ডগুলোতে শয্যা সংকট দেখা দিয়েছে। শিশু হাসপাতালের ৩০ শয্যার বিপরীতে ভর্তি হয়েছে ৪০ জন। সদর হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে ১৪ শয্যার জায়গায় রোগী ভর্তি হয়েছে ৩৫ জন। ডায়রিয়া ওয়ার্ডেও শয্যা সংকট প্রকোপ। বরাদ্দকৃত ৫টি শয্যার বিপরীতে ভর্তি রয়েছে ২৪ জন রোগী।
সাতক্ষীরা শিশু হাসপাতালের ইনচার্জ ডা. মো. আবুল বাশার আরমান বলেন, শীতের কারণে শিশুরা সাধারণত সর্দি, কাশি, নিউমোনিয়া এবং ডায়রিয়ার মতো রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। প্রতিদিন বহির্বিভাগে ১০০ থেকে ১৫০ রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন। আমরা সবসময় প্রস্তুত আছি, তবে অভিভাবকদের সচেতন হওয়া অত্যন্ত জরুরি।
তিনি বলেন, শিশুদের শীত থেকে রক্ষা করতে গরম কাপড় পরানো, বিশুদ্ধ পানি পান করানো এবং বাইরে বের না করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডের ইনচার্জ মেরিনা সুলতানা জানান, শীতের প্রকোপ বৃদ্ধির সঙ্গে সর্দি-কাশি, জ্বর এবং শ্বাসকষ্ট নিয়ে রোগীর সংখ্যা বেড়ে গেছে। ওয়ার্ডে শয্যার তুলনায় রোগী তিনগুণ বেশি। অনেককে মেঝেতে রেখে চিকিৎসা দিতে হচ্ছে।
ডায়রিয়া ওয়ার্ডের ইনচার্জ সান্তনা মণ্ডল বলেন, ডায়রিয়ায় আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা বাড়ছে। অধিকাংশ রোগী শীতজনিত কারণে হাসপাতালে আসছে।
তালা উপজেলার আটারই গ্রামের আরশাদ আলী বলেন, ছয় মাস বয়সী মেয়েকে নিয়ে এসেছেন তিনি বলেন, জ্বর নিয়ে গ্রামের এক ডাক্তারের কাছে চিকিৎসা করাই। অবস্থা খারাপ হলে শিশু হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছে। দেবহাটার তুলি খাতুন বলেন, সাত-আটদিন ধরে ঠান্ডা, কাশি কমছে না। বাধ্য হয়ে হাসপাতালে আসতে হয়েছে।
সাতক্ষীরার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক (শিশু বিশেষজ্ঞ) ডা. সামছুর রহমান জানান, প্রতিদিনই শিশু ও বয়স্করা আক্রান্ত হচ্ছে শীতজনিত বিভিন্ন রোগে। বিশেষ করে কোল্ড ডায়রিয়া, জ্বর, সর্দি, কাশি, শ্বাসকষ্ট ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হচ্ছে তারা।
তিনি আরও জানান, এই শীতে শিশুদের প্রতি বিশেষ যতœ নিতে হবে। বয়স্কদের ক্ষেত্রেও একই ধরনের সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। ঠান্ডা লাগলে সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন ডা. আব্দুস সালাম বলেন, আমরা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সতর্ক রয়েছি। হাসপাতালগুলোতে সেবা নিশ্চিতে সবধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। তবে অভিভাবকদের সচেতন থাকতে হবে। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ সেবন থেকে বিরত থাকতে হবে।
প্রকাশক ও সম্পাদক- রবিউল ইসলাম। প্রধান কার্যালয়ঃ ২২ পশ্চিম-ধানমন্ডি, শংকর, ঢাকা-১২০৯। মোবাইল: ০১৭১৫-২০৯৬২৪। ফোন: +৮৮০২৯৫৫১৬৯৬৩ । ই-মেইল: alochitokantho@gmail.com । স্বত্ব © ২০২১ আলোচিত কন্ঠ
Copyright © 2025 আলোচিত কণ্ঠ. All rights reserved.