মোঃ খলিলুর রহমান, সাতক্ষীরা :; সুন্দবনের দুবলার চর এলাকার বাহির সমুদ্র থেকে অপহৃত ১৫ জেলের প্রত্যেকের মুক্তির জন্য ৩ লাখ টাকা করে মুক্তিপণ দাবি করেছে ডাকাতরা। শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) সকালে দুবলার চর থেকে এই তথ্য নিশ্চিত করেন জেলেরা। জেলেদের অপহরণের সময় ডাকাতদের রেখে যাওয়া মোবাইল নাম্বারে সকালে ফোন করার পর তারা এই মুক্তিপন দাবি করে। জেলেদের সভাপতি আব্দুর রউফ জানান, ২৭ জানুয়ারি ভোর রাতে জেলেদের অপহরণের সময় ডাকাতরা যোগাযোগের জন্য যে মোবাইল নাম্বার রেখে যায় সেটি গত চার দিন ধরে বন্ধ থাকলেও শুক্রবার সকালে এটি খোলা পাওয়া যায়। ওই নাম্বারে যোগাযোগ করলে প্রতি জন জেলের মুক্তির বিনিময়ে তিন লাখ টাকা করে দাবি করে তারা। তবে কোন স্থান জানায়নি ডাকাতরা। এদিকে জেলেদের উদ্ধারে দুবলার চর থেকে সচিবালয়, র্যাব, কোস্ট গার্ড, পুলিশসহ বিভিন্ন পক্ষের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রেখে কাজ করে যাওয়া স্থানীয় সংবাদ কর্মী জাহিদুল বাশার জানান, বৃহস্পতিবার দুবলার চর থেকে জেলেদের উদ্ধারে পাঠানো আবেদন পত্র ও অপহৃতদের তালিকা সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার দপ্তরে দেয়া হয়। সন্ধ্যার দিকে আবেদন পত্রটি র্যাব ও কোস্টগার্ডের শীর্ষ কর্মকর্তাদের কাছে ফরওয়ার্ড করা হয় বলে জানতে পারি। এছাড়া ঘটনাটি যেহেতু সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জে ঘটেছে এজন্য শরণখোলা থানার ওসি, এবং অপহৃত জেলেদের ১১ জনই সাতক্ষীরার বাসিন্দা হওয়ায় সাতক্ষীরা জেলা পুলিশ সুপার ও বিভিন্ন খানার ওসির সাথে কথা বলে তাদের সহায়তা চাওয়া হয়েছে। তারা সার্বিক সহায়তা করবেন বলে আশ্বস্ত করেন। এ বিষয়ে দুবলার চর জেলেদের শীর্ষ নেতা কামাল উদ্দিনের সাথেও নিয়মিত যোগাযোগ করা হচ্ছে বলে জানান জাহিদুল বাশার। তিনি বলেন অপহরণের পরদিনই আটক ডাকাত জাহাঙ্গীর ও কয়েকজন জেলেকে নিয়ে সুন্দরবনের বিভিন্ন জায়গায় কোস্টগার্ড অভিযান চালালেও অপহৃতদের কোন সন্ধান পাওয়া যায়নি। এদিকে ডাকাতদের দেওয়া মোবাইল নাম্বার ধরে প্রযুক্তি সহায়তায় তাদের অবস্থান নিশ্চিত করার দাবি জেলেদের। এর আগে র্যাব ও কোস্টগার্ড বিভিন্ন অভিযানে এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে বহু অপরাধী শনাক্ত করেছে। এবারাও তেমনটা করা হবে আশা সংশ্লিষ্টদের। তবে ঘটনাটি গত ৪ দিন আগে ঘটলেও ভুক্তভোগী জেলেদের পক্ষ থেকে কেউ এখনো শরণখোলা থানায় অপহরণের কোন মামলা বা অভিযোগ কিছু দায়ের করেনি। যার কারণে আইনগত প্রতিকার পেতে অপহরণের কোন অফিসিয়াল তথ্য নেই। তবে দ্রুত কয়েকজনকে পাঠিয়ে মামলা করা হবে জানান দুবলার চরের জেলেদের নেতারা। এদিকে এই ঘটনায় জেলেদের হাতে আটক ৩ ডাকাতকে গ্রেপ্তারের ঘটনায় শরণখোলা থানায় যে অস্ত্র মামলা হয়েছে সেখানে অপহরণের কোন তথ্য উল্লেখ নেই বলে জানিয়েছেন আশাশুনির চাকলা বেল্টের জেলেদের সভাপতি মেম্বর আব্দুর রউফ। অপহৃত জেলেরা হলেন, সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর ইউনিয়নের সুভদ্রাকাটি গ্রামের মো. দাউদ আলী সানার ছেলে অজাহারুল ইসলাম, চাকলা গ্রামের মো. মহিজুদ্দিন বিশ্বাসের ছেলে মো. জাহাঙ্গীর আলম, একই গ্রামের মো. নুরমান আলী সরদারের ছেলে অরাফাত হোসেন, শামছুর রহমান গাজীর ছেলে শাহাজান গাজী, রুইয়ারবিল গ্রামের জুলফিকার সরদারের ছেলে আলমগীর হোসেন, একই গ্রামের শহর আলী গাজীর ছেলে হাফিজুর রহমান, আব্দুল হক সানার ছেলে মো. শাহীনুর আলম, দিঘালারাইট গ্রামের মো. আবু দাউদ জদ্দারের ছেলে মো. রাসেল, শ্রীপুর গ্রামের মো. রুহুল আমিন ঢালির ছেলে মো. শাহাজান ঢালী ও দৃষ্টিনন্দন গ্রামের মো. আনিচ সরদারের ছেলে নুরে আলম এবং শ্যামনগর উপজেলার বন্যতলা গ্রামের আবু তালেব এর ছেলে শাহ্ আলম।
প্রকাশক ও সম্পাদক- রবিউল ইসলাম। প্রধান কার্যালয়ঃ ২২ পশ্চিম-ধানমন্ডি, শংকর, ঢাকা-১২০৯। মোবাইল: ০১৭১৫-২০৯৬২৪। ফোন: +৮৮০২৯৫৫১৬৯৬৩ । ই-মেইল: alochitokantho@gmail.com । স্বত্ব © ২০২১ আলোচিত কন্ঠ
Copyright © 2025 আলোচিত কণ্ঠ. All rights reserved.