ওসমান গনি
গজারিয়া প্রতিনিধিঃ মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার বাউশিয়া পাখির মোড় থেকে কাজী ফার্ম পর্যন্ত প্রায় ১ কিলোমিটার রাস্তার রাস্তা ভেঙে গর্ত ও জলাবদ্ধতা দুর্ভোগের শিকার সিএনজি-অটোরিকশা সহ ট্রাক পরিবহন চালক, চলাচলকারি যাত্রী ও এলাকাবাসী। একটু বৃষ্টি হলে কাদা ও গর্তগুলোতে পানি জমে থাকে। এতে ছোট বড় যানবাহনগুলো প্রায়ই দুর্ঘটনার শিকার হয়।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়,প্রায় ১ কিলোমিটার সড়কজুড়ে কিছুক্ষণ পরপরই ছোটবড় গর্ত ও খানাখন্দ। গুয়াগাছিয়া ইউনিয়নে বাউশিয়া পাখির মোড় থেকে কাজী ফার্ম পর্যন্ত এলাকায় সড়কটির অবস্থা অত্যন্ত নাজুক।
বাউশিয়া পাখির মোড়- কাজী ফার্ম সড়কের চাষীচর, গুয়াগাছিয়া, কদমতলী, ভৈষারচর, ভাষারচর, দত্তেরচর,শিমুলিয়াসহ বেশ কয়েকটি গ্রামের মানুষ নিত্য দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। ও পর্যন্ত যোগাযোগের একমাত্র সড়ক এটি। কয়েক বছর ধরেই সড়কটিতে খানাখন্দ ও গর্ত। একবার কিছু অংশ মেরামত করলেও পরবর্তীকালে আর মেরামত হয়নি। বৃষ্টির পানি জমে যানবাহন চলাচলে ভোগান্তির সৃষ্টি হচ্ছে। ফলে উপজেলা সঙ্গে যোগাযোগ ভোগান্তিতে পড়েছেন গুয়াগাছিয়া ইউনিয়নবাসী। পথচারীদেরও দুর্ভোগ হচ্ছে।
এলাকার ভুক্তভোগী কয়েকজন বাসিন্দা সূত্রে জানা যায়, প্রায় তিন বছর আগে থেকেই এ সড়ক চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এ ইউনিয়নের প্রায় ২০ হাজার মানুষের চলাচলের প্রধান সড়ক এটি। সর্বশেষ দুইবছর আগে সড়কটি সংস্কার করা হয়। এরপর মেরামত না করায় সড়কের অনেক স্থানে বিটুমিন ও ইট-পাথর উঠে গিয়ে ছোট-বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। দুর্ঘটনা এড়াতে যানবাহন চলছে ধীরগতিতে।
কিন্তু টানা প্রবল বৃষ্টির কারনেপ্রায় ১ কিলোমিটার রাস্তা পানি জমে থাকে। বাউশিয়া পাখির মোড়ে কাজী ফার্ম সড়ক বেহাল দশার নতুন চাষির এলাকায় বসবাসকারী প্রবীণ রাজনীতিবিদ ও বিশিষ্ট সমাজসেবক আব্দুল হক মোল্লা বলেন, বাসা থেকে পরিচ্ছন্ন কাপড় পড়ে বের হলে কাদায় মাটির পানি লাল রঙ্গের রঙ্গিন হয়ে যেতে হয়।
শামীম বলেন, চৈত্র বৈশাখ মাসে এই রাস্তা দিয় চালাল করলে ধুলোবালু কারণে মানুষের ঠান্ডা সর্দি কাশি লেগেই থাকে। ঘরের বিছানাপত্র আসবাবপত্র পত্র সারাদিন চারবার ঘর পরিষ্কার করতে হয়। একদিন পরিষ্কার না করলে দেখে মনে হয় হাজার বছরের পুরোনো। কিন্তু বর্ষা এলে ও প্রবল টানা বৃষ্টির কারনে রাস্তায় গুলো গর্ত হয়ে ভেঙ্গে যায়, আমাদের কষ্ট সারা বছরে লেগে থাকে, প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে জোর দাবি জানাচ্ছি এ রাস্তাটির দ্রুত পাকা করনে জন্য।
গৃহিণী তাসলিমা আক্তার বলেন, আমি একজন অসুস্থ রোগী রাস্তা দিয়ে চলাচল করলে আরো কষ্ট পোহাতে হয়, রাস্তাটির দেখবার কেউ নাই,খুবই কষ্ট লাগে রাস্তা দিয়ে হাজার সচেতন মানুষ চলাচল করলেও কেউই প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করেনি।
দোকানদার কাজী আনোয়ার হোসেন বলেন, সড়ক দিয়ে প্রতিদিন দোকানের জন্য মালমাল কিনে আনতে হয়,অনেক সময় রাস্তায় ঝাকনি দোকানে মালামাল ভেঙে যায় ।এতে করে অনেক ক্ষতি হতে হয়।
ব্যাটারি চালিত অটোরিকশার চালক রফিক মিয়া বলেন, রাস্তাটির বেহাল দশার কারণে চলাচলে দুর্ভোগ হয়। কয়েকদিন পরপরই গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হলে সেটি মেরামত করতে হয়।
এ সময় সিএনজি চালক জব্বার হোসেন বলেন, রাস্তায় অনেক খানাখন্দ থাকায় প্রতিদিনই ছোট-বড় দুর্ঘটনা ঘটছে। এ রাস্তায় চলাচল করতে গিয়ে সুস্থ-সবল মানুষের নাভিশ্বাস ওঠে। অনেক সময় সিএনজি করে এই রাস্তা দিয়ে রোগী নিয়ে গেলে তাঁদের অবস্থা আরও কাহিল হয়ে পড়ে।
ভ্যানচালক জাহাঙ্গীর বলেন, ‘ভাঙাচোরা রাস্তায় ভ্যান চালাতে গিয়ে প্রায়ই নাটবল্টু খুলে পড়ে যায়। ফলে সারা দিন ভ্যান চালিয়ে যা রোজগার করি, তার একটা অংশ মেরামতেই শেষ হয়ে যায়। ২০ মিনিটের রাস্তা যেতে সময় লাগে ৪০-৪৫ মিনিট।’
। অটোরিকশা চালক আলমগীর হোসেন বলেন, এদিকে ধুলোবালির ও অন্যদিকে ভাঙ্গা রাস্তায় কারণে এ সড়কে অটোরিকশা যাত্রী পাওয়া যায় না। ভাঙ্গা রাস্তার এখন বেশি দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে আমাদের। সড়কটির সংস্কারণ কাজটি ধীরগতিতে বেহাল অবস্থায় মানুষের জীবনযাত্রা নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। তাই যে কোনো মূল্যে সওজ কর্তৃপক্ষের দ্রুত কাজটি করার দাবি জানান স্থানীয় অটোচালকরা ।
গুয়াগাছিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবুল খায়ের খোকন বলেন, , একদিকে ধুলাবালু, অন্যদিকে সামান্য বৃষ্টিতেই রাস্তায় কাদা–পানি একাকার হয়ে যায়। সড়কটির কারণে এলাকাবাসী চরম বিপদে রয়েছে। কৃষিপণ্য বাজারে নিয়ে যেতে বা জরুরি প্রয়োজনে বিভিন্ন বাজারে যেতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে স্থানীয় বাসিন্দাদের। জনস্বার্থে সড়কটি সংস্কার করা দরকার।প্রতি বছর এ রাস্তা কাজটি
কাজী ফার্ম সংস্কার কাজ করে থাকে, এই বছর করোনাভাইরাস কারনে কাজটি করতে দেরি হচ্ছে, তবে আমি তাদের সাথে কথা বললে তারা আমাকে বলে অতি দ্রুত ভাঙ্গা রাস্তার কাজ করবে বলে আশ্বাস দেন।
সড়কের বেহাল অবস্থার কথা স্বীকার করে গজারিয়া উপজেলা এলজিইডি উপ্রকৌশলী মোজাম্মেল বলেন, সড়কটি সংস্কারের জন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। চলতি সংস্কারের জন্য প্রকল্প প্রস্তাব এলজিইডির প্রধান কার্যালয়ে পাঠানো হবে। এই অর্থবছরেই সড়কটি সংস্কারের জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হবে।