–তান্ডব চালামে সেই হাতিটিকে অবশেষে দুইদিন পর ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হলো
লালমনিরহাট প্রতিনিধি।।
অবশেষে লালমনিরহাটে পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতি (পুনাক) আয়োজিত শিল্প মেলায় শিকল ছিড়ে তান্ডব চালানো সেই হাতিটিকে ট্র্যাংকুলাইজার যন্ত্রের মাধ্যমে অচেতন করে নিয়ন্ত্রণে আনার একদিন পর ঢাকার বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কে নিয়ে যাওয়া হলো।
বুধবার (২মার্চ) দুপুরে দি লায়ন সার্কাস কর্তৃপক্ষ জেলা পুলিশের সহযোগিতায় ট্রাকে করে হাতিটি ঢাকায় নিয়ে যায়।
স্থানীয়রা জানায়, লালমনিরহাট পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতি (পুনাক) আয়োজিত শিল্প মেলায় আনা হাতিটি হঠাৎ করে পায়ের শিকল ছিঁড়ে বেরিয়ে পড়েন শহরে। এ সময় বেশ কয়েকটি দোকানপাটে ভাঙচুর চালায়। পরে মাহুতসহ সার্কাস দলের সদস্যরা একে শান্ত করতে গেলে আরও উত্তেজিত হয়ে রাস্তার গাছপালাসহ মানুষের ওপর আক্রমণ করে।
এ সময় বেশ কয়েকজন আহত হয়। পরে সার্কাস দলের সদস্যরা ব্যর্থ হয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসকে খবর দিলে শহরের সাহেবপাড়ায় তাণ্ডব শুরু করে একটি বিলে নেমে পড়ে হাতিটি।
দি লায়ন সার্কাসের মালিক নিরঞ্জন সরকার জানান, হরমন জনিত কারনে হাতিটি একটু উশৃংখল হয়ে পড়ে। যে কারনে শিকল ছিড়ে লোকালয়ে প্রবেশ দোকানপাট, গাছপালাসহ কিছু ফসলের ক্ষতিসাধন করে। হাতিটি নিয়ন্ত্রণে আনতে হাতির মাহুতসহ আমার সার্কাসের সকল লোকজন, ফায়ার সার্ভিসের সদস্য ও পুলিশ প্রশাসন অক্লান্ত পরিশ্রম করেছে।এরপরেও হাতিটিকে নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়নি।
পরে মঙ্গলবার (১ মার্চ) দুপুরে হেলিকপ্টারযোগে বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞ ডক্টর তপন কুমার দের নেতৃত্বে ৩ সদস্যের একটি টিম এসে হাতিটিকে অচেতন করে নিয়ন্ত্রণে আনে। ২৪ ঘন্টা অচেতন ও বিশ্রামে থাকার পর আজ বুধবার দুপুরে হাতিটিকে ট্রাকে করে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হলো বলেও জানান তিনি।
উল্লেখ্য, সোমবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) বেলা দুপুরের দিকে পায়ের শিকল ছিঁড়ে বেরিয়ে এসে শহরের সাহেবপাড়ায় তাণ্ডব শুরু করে হাতিটি। মাহুতসহ সার্কাস দলের সদস্যরা একে শান্ত করতে ব্যর্থ হয়ে উপজেলা প্রশাসন ও ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেয়। কিন্তু তারাও ব্যর্থ হন।
পরবর্তীতে মঙ্গলবার সকালে ঢাকায় খবর দিলে হেলিকপ্টারযোগে বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞ ডক্টর তপন কুমার দের নেতৃত্বে একটি টিম লালমনিরহাটে আসে। পরে একটি বাঁশবাগানে নিয়ে হাতিটিকে ট্র্যাংকুলাইজার যন্ত্রের মাধ্যমে অচেতন করে নিয়ন্ত্রণে আনা হয়।
লালমনিরহাটের জেলা প্রশাসক (ডিসি) আবু জাফর বলেন, সার্কাসের হাতি হঠাৎ উত্তেজিত হয়ে শহরের অনেক ক্ষতি করেছে। অনেক চেষ্টা করেও তাকে নিয়ন্ত্রণ করা যায়নি। তাই ঢাকার বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটে খবর দিলে তারা এসে ট্র্যাংকুলাইজার দিয়ে অচেতন করেন। জ্ঞান ফেরার পর আজ হাতিটিকে ট্রাকে করে বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কে নিয়ে যাওয়া হলো।