লালমোহনে স্বামীর নির্যাতনের শিকার গৃহবধূর সংবাদ সম্মেল
এ এইচ রিপন ভোলা দক্ষিণ প্রতিনিধি :
ভোলার লালমোহনে যৌতুকের দাবিতে নির্যাতিত হয়ে আদালতে করা মামলা তুলে নিতে হুমকি প্রদানের অভিযোগে স্বামী ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছেন লাইজু বেগম নামে এক গৃহবধূ।
মঙ্গলবার দুপুরে লালমোহন প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি। লাইজু উপজেলার চরভূতা ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের মোঃ আবুল কাশেমের মেয়ে। সংবাদ সম্মেলনে গৃহবধূর সাথে তার বাবা, ভাই বজলুর রহমান ও তিন সন্তান উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে লাইজু বেগম বলেন, ২০০৮ সালের ২৭ অক্টোবর উপজেলার রমাগঞ্জ ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ড পূর্ব চরউমেদ গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে মামুনের সাথে পারিবারিক মতে বিয়ে হয় তার। তাদের দাম্পত্য জীবনে ১ ছেলে ও ২ মেয়ে রয়েছে। স্বামী মামুন পেশায় সিএনজি চালক, তাই কাজের তাগিদে চট্টগ্রাম থাকতো সে। আর ছেলে মেয়ে নিয়ে স্বামীর বাড়িতে থাকতেন লাইজু।
কিন্তু মামুন হঠাৎই নেশায় আসক্ত হয়ে পড়লে তাদের পারিবারিক জীবনে অভাব-অনটন ও কলহ দেখা দেয়। নেশার টাকা জোগাতে তাকে যৌতুকের জন্য চাপ প্রয়োগ, পরে নির্যাতন শুরু হয়। মামুনের সাথে একত্রিত হয়ে তার পরিবারও নির্যাতন শুরু করে। যৌতুক দিতে না পারায় এক পর্যায়ে তাকে তার বাবার বাড়িতে ফেলে রাখে মামুন।
ওই গৃহবধূ আরও বলেন, এ নিয়ে স্থানীয় পর্যায়ে একাধিকবার শালিস বৈঠক হলেও মামুনের আচরণে কোনও পরিবর্তন হয়নি। তাই গত ২০১৯ সালের ১০ জুন ভোলা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালে মামলা করেন তিনি। ওই মামলায় পরোয়ানা জারি হলে স্বামী মামুন, শশুর নুরুল ইসলাম ও দেবর রুবেল গ্রেফতার হন এবং পরবর্তীতে জামিনে বেরিয়েই দিনেদুপুরে বাজারের মধ্যে তাকে মারধর করে। এ ঘটনায় গত ২১সালের ২১ সেপ্টেম্বর লালমোহন থানায় লিখিত অভিযোগও করেন তিনি।
লাইজু অভিযোগ করে বলেন, অব্যাহত হামলা ও হুমকির পরও মামলা তুলে না নেয়ায় গত ২০২১ সালের ৩ ডিসেম্বর দিনেদুপুরে বাজারের মধ্যে তার বাবার উপরও অতর্কিত হামলা চালায় স্বামী মামুন ও তার পরিবারের লোকজন। বর্তমানে রমাগঞ্জ ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য শাহাবুদ্দিনসহ স্বামী মামুনের চাচা নুরে আলম ও চাচাতো ভাই আলাউদ্দিন মামলা তুলে নিতে প্রাণনাশের হুমকি ও মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর হুমকি দিয়ে যাচ্ছে বলেও সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেন গৃহবধূ লাইজু বেগম।
রমাগঞ্জ ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য মোঃ শাহাবুদ্দিন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, এমন কোন ঘটনার সাথে জড়িত নই। আমাকে সামাজিক ও রাজনৈতিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করতেই এমন অভিযোগ তোলা হয়েছে।
লালমোহন থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ মাকসুদুর রহমান মুরাদ বলেন, পূর্বে কোনও অভিযোগ হয়েছিল কিনা, বিষয়টি জানা নেই। তবে এমন ঘটনার কোনও অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এদিকে স্বামী ও তার পরিবারের অব্যাহত হুমকি ও হামলার দৃষ্টান্তমূলক বিচারের দাবি জানিয়েছেন গৃহবধূ লাইজু ও তার পরিবার।