সাজ উদ্দিন সাজু, সিলেট প্রতিনিধি:
নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে সিলেট-তামাবিল মহাসড়ক দেদারছে চলছে নাম্বার বিহীন টোকন চালিত সিএনজি (অটো রিক্সা), সিএনজি চালিত ইজিবাইক, ব্যাটারি চালিত ইজিবাইক ও টমটম, শিশু চালক দিয়ে চলছে লক্ষর ঝকর লেগুনা, পিকআপ। যখন তখন হচ্ছে দূর্ঘটনা, হচ্ছে প্রাণহানি। সংশ্লিষ্ট সড়ক প্রশাসন নিরব, দেখার কেউ নেই।
সরেজমিনে সিলেট তামাবিল মহাসড়ক ঘুরে দেখা যায়, সরকারের নিষেদাজ্ঞা অমান্য করে সিলেট-তামাবিল, সিলেট-কানাইঘাট, সিলেট-গোয়াইনঘাট সড়কে দেদারছে চলছে লক্ষর ঝকর লেগুনা, পিকআপ, সিএনজি (অটো রিক্সা), সিএনজি চালিত ইজিবাইক, ব্যাটারী চালিত ইজিবাইক ও টমটম। আর এসব পরিবহনগুলো চালকের দায়িত্ব পালন করছেন বেশিরভাগ শিশুরা। ফলে যখন তখন সিলেট-তামাবিল রোড, সিলেট-দরবস্ত-কানাইঘাট রোড, সিলেট-সারীঘাট-গোয়াইনঘাট রোডগুলোতে ঘটেই চলছে মারাত্মক দূর্ঘটনা। দূর্ঘটনায় প্রাণহানি সহ পঙ্গুত্ব বরণ করছে অনেকেই। দূর্ঘটনার ফলে কোনো কোনো পরিবার নিঃস্ব হয়ে ভিক্ষুকের পেশা গ্রহণ করতে হচ্ছে। সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয় সহ সরকারের কড়া নির্দেশনা থাকলেও সংশ্লিষ্ট সড়ক প্রশাসন, হাইওয়ে পুলিশ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না। এছাড়া দূর্ঘটনায় পাওয়া যায় না হাইওয়ে পুলিশকে। অতথ বৃহত্তর উত্তর সিলেটের পর্যটন খ্যাত তিন উপজেলা যাত্রী সাধারণ, সচেতন মহল, শিক্ষক সমাজ, ছাত্র সমাজ সহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার লোকজন দেখতে পান যে সিলেট-তামাবিল মহাসড়কে বিভিন্ন অংশে কাগজপত্র তল্লাশীর নামে চাঁদা আদায় করতে। এছাড়া সিলেটের পর্যটন খ্যাত উপজেলাগুলো হতে পর্যটক বিমুখ করতে পর্যটকবাহী বাস দাঁড় করিয়ে চাঁদা আদায় করতে। চাঁদা আদায়, টোকন পরিচালিত লাইসেন্স বিহীন নিয়ন্ত্রিত সিএনজি অটোরিক্সা, ব্যাটারি চালিত ইজিবাইক-টমটম চলাচলের সুযোগ করে দিচ্ছেন সড়ক সংশ্লিষ্ট হাইওয়ে পুলিশের কতিপয় লোকজনেররা। ফলে অহরহ ঘটছে সড়ক দূর্ঘটনা। গত ২৫ মার্চ নাম্বার বিহীন টোকন চালিত সিএনজি অটোরিক্সার ধাক্কায় গোয়াইনঘাট সড়কে দরবস্ত ইউপির করগ্রামের হাসান আহমদ নামে শিশু দূর্ঘটনার গুরুত্বর আহত হয়ে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। গত ০৪ এপ্রিল দরবস্ত-কানাইঘাট সড়কের চাক্তায় টমটম লেগুনার?মুখোমুখি সংঘর্ষে ০৫ জন গুরুত্বর আহত হন। সর্বশেষ ০৬ মার্চ সিলেট গ্যাস ফিল্ডের ০৭ নং কুপের সম্মুখে একই ভাবে ব্যাটারি চালিত দুটি টমটম, বাস ও মোটর সাইকেল দূর্ঘটনায় ঘটনাস্থলে শিশু সহ তিনজন নিহত হন এবং ডাক্তার, সমাজসেবী, নার্স সহ অন্তত ২০ জন গুরুত্বর আহত হন। এসব ঘটনার পর সংশ্লিষ্ট সিলেট-তামাবিল মহাসড়কের দায়িত্বপ্রাপ্ত হাইওয়ে পুলিশ কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে পাওয়া যায়নি এমনকি লাশ উদ্ধার করতে হয় থানা পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের লোকরা।
সাধারণ বাসিন্দা আমিন আহমদ, নাজিম উদ্দিন, সমছির উদ্দিন, ইলিয়াছ আলী, হুমায়ুন আহমদ, কবির মিয়া, মো. আব্দুল্লাহ সহ শতাধিক ব্যক্তি বলেন, হাইওয়ে পলিশের টোকন বাণিজ্যের কারণে সিলেট-তামাবিল, সিলেট-কানাইঘাট, সিলেট-গোয়াইনঘাট সড়কে দেদারছে চলছে লক্ষর ঝকর লেগুনা, পিকআপ, সিএনজি (অটো রিক্সা), সিএনজি চালিত ইজিবাইক, ব্যাটারি চালিত ইজিবাইক ও টমটম এদের রিরুদ্ধে তেমন কোনো আইনগত ব্যবস্থা না থাকায় এবং অর্থ লোভী পরিবহন মালিকরা অধিক মুনাফা লাভের জন্য লাইসেন্স বিহীন শিশু চালকদের হাতে তাদের গাড়ী তুলে দিয়ে বৃহত্তর উত্তর সিলেটের তিন উপজেলা জৈন্তাপুর, গোয়াইনঘাট ও কানাইঘাট এর যাত্রী সাধারণ পথচারীদের পরিকল্পিত ভাবেই দূর্ঘটনার নামে হত্যা সহ পঙ্গুত্ব করা হচ্ছে। তারা আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী জানান। এবিষয়ে জানতে হাইওয়ে থানা পুলিশের সাথে বার বার যোগাযোগ করা হলে তারা ফোন রিসিভ করেননি।
জৈন্তাপুর মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম দস্তগীর আহমদ এসব দূর্ঘটনার কথা স্বীকার করে বলেন, আমার থানা এলাকাধীন যে কোন দূর্ঘটনায় থানা পুলিশ আন্তরিকতার সহিত কাজ করছে। এছাড়া থানা এলাকার আইন শৃঙ্খলা রক্ষায়, মাদক নিয়ন্ত্রণ সহ সকল কাজই থানা পুলিশের দেখতে হচ্ছে। কিছু বিষয় ও কাজ আমাদের হাতে নেই। সেই বিষয়গুলো নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগের পরামর্শ দেন।
জৈন্তাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আল-বশিরুল ইসলাম এবং জৈন্তাপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কামাল আহমদ বলেন, আগামী জেলা আইন শৃঙ্খলা বৈঠকে বিষয়টি আমরা উত্তাপন করবো। এই মহাসড়কে দূর্ঘটনা রোধকল্পে নিয়মিত নির্বাহী ম্যাজিষ্টেটকে অভিযানের জন্য জোর দাবী জানাবো।