মোঃ সাহিদুল ইসলাম নীলফামারী প্রতিনিধিঃ
দেশ ও জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সন্তানদের লাঞ্চিতকারী, জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ফ্রিডম পার্টির নির্বাচনকালীন উপজেলা সময়ন্বয়কারী, যুদ্ধাপরাধীর সন্তান ও রাজাকার পুত্র, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ডোমার উপজেলা শাখার অব্যাহতি প্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ডোমার উপজেলা চেয়ারম্যান তোফায়েল আহমেদকে স্থায়ীভাবে দল থেকে বহিষ্কার ও উপজেলা চেয়ারম্যান পদ থেকে অব্যাহতি প্রদানের দাবীতে মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন করেছে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের সন্তানবৃন্দ।
বৃহস্পতিবার (৫ই মে) বেলা ১২টায় ডোমার বাজার রেলগেট মোড়ে ডোমার উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ও উপজেলা শাখা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের আয়োজনে ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন—ডোমার উপজেলা কমান্ড বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ডেপুটি কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা এম. এ. কবির (দুলু)।
বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও সাবেক ছাত্রনেতা হুমায়ুন কবির রাকিবের সঞ্চালনায় এসময় বক্তব্য রাখেন—বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. জসিয়ার রহমান, বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল জব্বার কানু, ডোমার উপজেলা শাখা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের আহ্বায়ক শহীদ মুক্তিযোদ্ধার সন্তান মো. আল-আমিন রহমান, ডোমার প্রেসক্লাবের সভাপতি ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের অন্যতম নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান আসাদুজ্জামান চয়ন, পৌর শাখা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের আহ্বায়ক মো. আজিজুর রহমান নাসিম প্রমূখ।
ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন কর্মসূচি শেষে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমপ্লেক্স ভবনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন মুক্তিযোদ্ধাবৃন্দ ও তাদের সন্তানরা। এসময় ডোমার উপজেলা আওয়ামী লীগে অনুপ্রবেশকারী অব্যাহতি প্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক তোফায়েল আহমেদকে দল থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার ও উপজেলা চেয়ারম্যান পদ থেকে অপসারণের দাবী করা হয়।
বক্তারা হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, যদি আওয়ামী লীগের দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি প্রাপ্ত উপজেলা সাধারণ সম্পাদক তোফায়েল আহমেদকে পুনরায় বহাল করা হয়, তাহলে তা মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য অপমানজনক। এরই প্রেক্ষিতে আগামীতে আমরণ অনশনে বসবেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবার।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যের মাধ্যমে জানানো হয়, একাত্তরে বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ স্বাধীনতার মহান স্থপতি ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহ্বানে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করে স্বাধীনতা এনেছেন। তারই কন্যা যোগ্য পিতার যোগ্য উত্তরসুরী গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুক্তিযোদ্ধাদের গর্ব। তিনি ক্ষমতাকালীন সময়ে সুপরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ডোমার উপজেলায় অনুপ্রবেশ করে সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান হওয়ার পর থেকেই বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের সন্তানদের লাঞ্চিত করে আসছে ও বিভিন্ন দুর্নীতির সাথে সম্পৃক্ত হয়ে সরকারী/বেসরকারী জমি দখল কাজে লিপ্ত আছে, যার প্রমাণ ইতোপূর্বে বিভিন্ন মিডিয়া ও সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণের কারণে নীলফামারী জেলা শাখার বর্ধিত সভায় আওয়ামী লীগের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করায় ডোমার উপজেলা সাধারণ সম্পাদক পদ ও জেলার সদস্যপদ থেকে জেলার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের যৌথ স্বাক্ষরে অব্যাহতি প্রদান করে। এর কয়েকদিন পর, এক ইফতার মাহফিলে নীলফামারী-২ আসনের মাননীয় জাতীয় সংসদ সদস্য ও সাবেক সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূরের বক্তব্যের প্রেক্ষিতে জানা যায় যে, আবার বঙ্গবন্ধুর খুনিদের দল ফ্রিডম পার্টির জাতীয় নির্বাচনকালীন উপজেলা সমন্বয়কারী ও রাজাকারপুত্র তোফায়েল আহমেদকে সাধারণ সম্পাদক পদে পুনর্বহালের সুপারিশ করে স্ববিরোধী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হওয়ায় বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের সন্তানরা তীব্র প্রতিক্রিয়া, ক্ষোভ ও নিন্দা প্রকাশ করছে এবং যারা তোফায়েল আহমেদের পক্ষে বিভিন্ন বক্তব্য ও কর্মকাণ্ডে সহযোগিতা করছেন তাদের প্রতিও নিন্দা প্রকাশ করছেন এবং যুদ্ধাপরাধী ও রাজাকারদের সমর্থন করা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানাচ্ছে। এছাড়া বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সভায় অব্যাহতি প্রাপ্ত ডোমার উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক তোফায়েল আহমেদকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার ও উপজেলা চেয়ারম্যান পদ থেকে অব্যাহতি প্রদানের দাবী জানাচ্ছি।
এসময় ডোমার উপজেলা ও পৌর কমান্ড মুক্তিযোদ্ধা সংসদের বীর মুক্তিযোদ্ধাবৃন্দ এবং বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ মুক্তিযোদ্ধার সন্তান এবং প্রজন্মরা সহ মুক্তিযুদ্ধ স্বপক্ষের শক্তির সকলেই উপস্থিত ছিলেন।