রাসেদুল ইসলাম রাসেল, সোনারগাঁ,নারায়নগন্জ :
সোনারগাঁয়ের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ব্রহ্মপুত্র নদ সহ মালিপাড় ও বশির গাঁও খাল হয়ে উঠেছে এখন বিষের খনি।বিভিন্ন শিল্প কারখানার বর্জ্য মিশ্রিত দূষিত পানি নিষ্কাশন করে বিষাক্ত করে ফেলছে নদ ও খালের পানি।স্হানীয় কয়েক”শ” কৃষকের ভাষ্যমতে কয়েক হাজার বিঘা তিন ফসলি জমির ফসল উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেছে সেচের পানির অভাবে।ব্রহ্মপুত্র নদ ও আশপাশের খালের পানি ব্যবহার করতে পারছে না স্থানীয়রা। এছাড়াও এ বিষাক্ত পানির তেজক্রীয়তায় শরীরে চর্ম রোগ সহ বিভিন্ন পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে স্কুল পড়ুয়া শিশু সহ এলাকার সাধারণ মানুষ। এই নদ ও খালের পানি একসময় বিভিন্ন বাড়ির হেসেলে রান্নার কাজে ব্যবহার করা হত।কল-কারখানার বজ্র পানিতে মিশে পানি বিষাক্ত হওয়ায় কারনে স্হানীয়রা এই পানি দৈনন্দিন কোন কাজে ব্যাবহার করতে পারছে না।দূষিত ময়লা পানির দুর্গন্ধে এলাকার মানুষ অতিষ্ট হয়ে পড়েছে।
স্থানীয়রা এ শিল্পকারখানার বিষাক্ত বর্জ্য নিষ্কাশনের প্রতিবাদে একাধিকবার বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সভা করলেও প্রভাবশালী মালিকদের টিকিটিও নড়াতে পারেনি।বারংবার প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষন করেও কোন প্রতিকারের আশ্বাস পায়নি এলাকাবাসী।
এলাকাবাসীর অভিযোগক্রমে জানা যায় উপজেলার জামপুর ইউনিয়নের তালতলা এলাকার বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানের বর্জ্য মালিপাড়া ও বশিরগাঁও খাল দিয়ে ব্রহ্মপুত্র নদে নিষ্কাশন করছে এছাড়াও পাশ্ববর্তী আড়াইহাজার উপজেলার বিভিন্ন ডাংইয়ের রঙের পানি ব্রহ্মপুত্র নদে ফেলে পানি কালো করে ফেলছে।এতে করে নদের পানি ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে উঠেছে।
দীর্ঘদিন ধরে কলকারখানা এ বিষাক্ত পানি নদে ফেলার অভিযোগ আশেপাশের প্রায় ১০টি গ্রামের মানুষ গত শনিবার বিকেলে জামপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির ভুইয়ার সভাপতিত্বে তালতলা বাস স্টেন্ডে বর্জ্যমিশ্রিত দূষিত পানি নিষ্কাশনের প্রতিবাদে প্রতিবাদে সভা অনুষ্ঠিত হয়।
তালতলা এলাকার জহিরুল ইসলাম বলেন, তালতলা এলাকার মহিউদ্দিন পেপার মিল, গ্যাস্টন ব্যটারি ফ্যাক্টরি, বাগবাাড়িয়া এলাকায় একটি তারকাটার মিলসহ বেশ কয়েকটি ফ্যাক্টরির বিষাক্ত বর্জ্য এই নদ ও খালে নিষ্কাশন করে।
জামপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি মাসুদ কবির সুমন বলেন, নদ ও খালের পানি এতই বিষাক্ত যে,দৈনন্দিন কাজে ব্যাবহার তো দূরের কথা মাছ, ব্যাঙ,সাপ সহ কোন প্রকার জলজ প্রাণীও বাঁচতে পারে না এই পানিতে।নদের পানি গোসল, রান্না, কৃষি জমিতে সেচ কাজে ব্যাবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।
আওয়ামীলীগ নেতা আহসান হাবীব টিপু বলেন, নদী ও খালের পানি দৈনন্দিন কাজে ব্যবহার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে মানুষ। পানির দুর্গন্ধ ও ক্ষতিকর বিষাক্ত গ্যাস মানুষের স্বাস্থের জন্য খুবই ঝুকিপূর্ণ হয়ে পরেছে।জীববৈচিত্র্য হারাচ্ছে পরিবেশ।
জামপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির ভুইয়া বলেন, কারখানার বর্জ্য মিশ্রিত দূষিত পানি দীর্ঘ দিন ধরে স্ব্রহ্মপুত্র নদ ও বশিরগাঁও খালে নিষ্কাশন করায় আমার কাছে এলাকাবাসী প্রতিকারের জন্য এসেছেন। আমি স্থানীয়দের নিয়ে খাল ও ব্রহ্মপুত্র নদ পরিদর্শন করেছি,দূষিত পানির দুর্গন্ধে ঠিক মতো নিঃশ্বাস নিতেও কষ্ঠ হচ্ছিল আমার।গ্রামের ছোট ছোট বাচ্চারা সহ বড় মানুষরা ও বিভিন্ন বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।
বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কে অবহিত করলে তিনি আমাদের কে জানান বিষয়টির তদন্ত করে দূষনের সঙ্গে জড়িত শিল্পকারখানার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।