আব্দুস সালাম রুবেল স্টাফ রিপোর্টারঃ ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার গড়েয়া হাটে বরাদ্দকৃত মহিলাদের জন্য ১০ টি দোকান বরাদ্দ দেওয়া হলেই এখন শুধু মাত্র, যা এখন পুরুষদের দখলে প্রায় সব দোকান।
নারী উদ্যোক্তাদের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত করতে মার্কেট তৈরি করা হলেও বাস্তবে মার্কেটে নেই নারী ব্যবসায়ীদের দোকান ঘর সরকারি অর্থায়নে নির্মিত এসব মহিলা মার্কেট এক যুগেরো বেশি সময় ধরে বিভিন্ন নারীর নামে-বেনামে বরাদ্দ নিয়ে পুরুষরা ব্যবসা করছেন, অনেকেই আবার ভাড়া দিয়েছেন। নির্মাণকালের গড়েয়া মহিলা মার্কেট লেখা সাইনবোর্ড গুলো এখন আর নেই।
স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, এসব মার্কেট পরিচালনার নীতিমালা রয়েছে। সেখানে হাট-বাজার ব্যবস্থাপনা কমিটি দোকানের প্রতি বর্গফুট হিসাবে ভাড়া নির্ধারণ করে দেন। প্রাপ্ত ভাড়ার শতকরা ৫ ভাগ সরকারকে ভূমি রাজস্ব খাতে ট্রেজারি চালানের মাধ্যমে দিতে হবে। ভাড়ার ১৫ ভাগ মার্কেটের রক্ষণাবেক্ষণে ব্যয় হবে এবং বাকি ৮০ ভাগ সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদ কিংবা পৌর পরিষদের তহবিলে জমা হবে।
কোনোভাবেই বরাদ্দ পাওয়া দোকান অন্য কারও কাছে হস্তান্তর করা যাবে না। কিন্তু এখানে এসব নিয়ম কেউ মানছেন না।
সরেজমিনে দেখা যায় ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার গড়েয়া ইউনিয়নের গড়েয়া বাজারে ১০টি, দোকান দিয়ে মহিলা মার্কেট নির্মাণ করা হয়। এসব মার্কেটে নারীর ব্যবসায়িক কাজে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করাসহ নারী উদ্যোক্তাদের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্তা করাই ছিল মূল্য লক্ষ্য।
এসব মার্কেটে নিয়ম অনুযায়ী মহিলা মুক্তিযোদ্ধা অথবা শহীদ পরিবারের সদস্য, ক্ষুদ্র ব্যবসার সঙ্গে জড়িত নারী, বিধবা কিংবা স্বামী পরিত্যক্তা, পরিবার প্রধান নারী, যিনি ব্যবসা করতে আগ্রহী, অর্থনৈতিকভাবে অসচ্ছল এমন নারীদের মধ্যে দোকান বরাদ্দ দেয়া হবে। কিন্তু বাস্তবে তার চিত্র একেবারেই উল্টো।
স্থানীয় প্রভাবশালীদের অনেকেই নারী আত্মীয় স্বজনদের নামে দোকান বরাদ্দ নিয়ে ব্যবসা করছেন। আবার অনেকে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে বরাদ্দ নেয়া দোকান ভাড়াও দিয়েছেন।
ওই মার্কেটে নাম বলতে অনিচ্ছুক এক ব্যবসায়ী জানান যে, আক্তারা নামে একটি দোকান ওনি অনেক আগেই মারা গেছেন, যা এখন এরসাদ নামে একজন ভাড়া তোলেন, মেহেরুন নামে একজনের তার দোকানে বুলবুল ব্যবসায় করে পরে তার সাথে কথা হলে তিনি জানান আমি মাসে ৫০০ টাকা করে ভাড়া দেই। মালিকের কথা জানাতে চাইলে তিনি জানান ওনি হয়তো ঢাকা থেকেন ওনার ভাইকে ভাড়া দেই,আমি প্রায় ১৫ বছরের বেশি সময় ধরে এইখানে ভাড়া দিয়ে ব্যবসায় করে আসছি।ছবিরানীর নামে বরাদ্দকৃত দোকানে সেরেকুল ভাড়া দিয়ে আছেন, শিবানীর দোকান তার স্বামী ব্যবসা করে, রাহেনার দোকান শুধু মাত্র তিনি ও তার স্বামী আছেন, এছাড়া সব ভাড়া দেওয়া আছে।
এবিষয়ে হাট-মালিক কমিটির সহ-সভাপতি শান্ত জানান যদিও আমাদের বাজারে রয়েছে এই মহিলা মার্কেট টি, কিন্তু তারা আমাদের আওতায়ার বাহিরে, তাদের নিয়ন্ত্রণ করে অন্য একটি মহল নিয়মনীতি উপেক্ষা করে।
এসব অনিয়মের ব্যাপারে ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রইছ উদ্দিন সাজু (মাস্টার) বলেন,
আমি আগে জানতাম না যে গড়েয়া বাজারে একটি মহিলা মার্কেট ছিলো যা পরে জানতে পারি। এগুলো অনেক আগেই মহিলাদের বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল। কিভাবে যে দোকানগুলো বরাদ্দের দেওয়া হয়েছে এই ব্যাপারে কিছু জানি না। যা এখন পুরুষদের দখলে, এছাড়াও এই বাজারে অনেক টয়লেট সরকারি ভাবে দেওয়া হয়েছিলো সাধারণ মানুষের ব্যবহারের জন্য যা প্রভাবশালীদের কিছু লোক দখল করে রেখেছে।
আমি উর্ধতন কর্মকর্তাগদের বিষয়টি অবগত করে সমাধান করার চেস্টা করবো।