স্টাফ রিপোর্টারঃচলমান বর্ষার মৌসুমে ভোলার মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীতে জেলেদের জালে মিলছে না ইলিশ। নদীতে কাঙ্ক্ষিত ইলিশ না পেয়ে হতাশায় ভুগছেন জেলেরা। অনেকে নদীতে যাওয়া ছেড়ে দিয়ে অন্য কাজে নিয়োজিত হয়েছেন। বিভিন্ন ব্যাংক এনজিওর ঋণের কিস্তি পরিশোধের চাপে অনেক জেলে নৌকা, জাল ও ট্রলার ফেলে রেখে বাড়ি থেকে পালিয়ে গেছেন।
সরেজমিনে ভোলার দৌলতখাঁন , বোরহানউদ্দিন , তজুমদ্দিন , লালমোহন , চরফ্যাশন উপজেলার উপকূলীয় জেলেদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
বোরহানউদ্দিন বড়মানিকা ইউনিয়নের স্বরাজগঞ্জ মাছ ঘাটের জেলে নুরুদ্দীন মাঝি।, আব্বাস মাঝি , বাবুল মাঝি জানান, নদীতে ইলিশ শিকার করে তারা সংসার পরিচালনা করেন। কিন্তু বর্তমানে নদীতে গিয়ে অনেক সময় মাছ না পেয়ে খালি হাতে ফিরতে হচ্ছে তাদের। যদিও সামান্য মাছ পাওয়া যাচ্ছে তা বেচে ট্রলারের তেল খরচ ও মুদি দোকানের টাকা দেওয়া যায়না ।
লালমোহন নাজিরপুর মাছ ঘাটের জেলে শফিক মাঝি বলেন, ‘গতকাল রাতে আমরা ৬ জন জেলে তেতুলিয়া নদীতে মাছ শিকারে যাই। রাত থেকে ভোরবেলা পর্যন্ত মাত্র ১ হালি ঝাটকা ইলিশ পেয়েছি। ঘাটে নিয়ে তা বিক্রি করে মাত্র ৪০০ টাকা পাওয়া গেছে। এতে ট্রলারের তেল খরচও ওঠেনি।
অনেকদিন যাবত নদীতে আশানুরূপ ইলিশ না পাওয়ায় অনেক জেলে নদীতে যাওয়া ছেড়ে দিয়েছেন বলে জানান হাকিমুদ্দিন মাছ ঘাটের জেলে মোঃ শাহিন মাঝি ।
তিনি বলেন, ‘কোনো কোনো জেলে এই পেশা ছেড়ে দিনমজুরের কাজ করে সংসার চালাচ্ছেন। বর্তমানে জেলের সংখ্যা কমে গেছে। নদীতে মাছ নেই তাই জেলেরা বিভিন্ন এনজিওর থেকে নেওয়া সমিতির কিস্তির টাকা পরিশোধ করতে পারছেন না। অনেক জেলে কিস্তি পরিশোধের চাপে নৌকা, জাল ও ট্রলার ফেলে রেখে ঢাকা ও চট্টগ্রাম পালিয়ে গেছেন।’
ইলিশ গবেষকদের মতে, সারাদেশের বিভিন্ন নদীতে যে পরিমাণ ইলিশ জেলেদের জালে ধরা পড়ে তার প্রায় ৩০ ভাগই ভোলার মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদী থেকে শিকার করা। ভোলার সাত উপজেলায় প্রায় আড়াই লাখ জেলে থাকলেও সরকারিভাবে নিবন্ধিত জেলের সংখ্যা রয়েছে প্রায় দেড় লাখ।
ভোলা সদর উপজেলার সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মো. জামাল হোসাইন বলেন, এ বছর সাগরে প্রচুর পরিমাণ ইলিশ আছে তবে আগামী ভাদ্র মাসে ইলিশের ভরা মৌসুম শুরু হবে। তখন জেলেরা নদীতে কাঙ্ক্ষিত ইলিশ শিকার করতে পারবেন।