মোঃ সাহিদুল ইসলাম, নীলফামারী জেলা প্রতিনিধিঃ
নীলফামারীর ডোমার উপজেলায় স্ত্রী ও কন্যা সন্তানকে কুপিয়ে হত্যা করেছে জিয়ারুল (৩০) নামের এক ঘাতক স্বামী। এছাড়া তার শ্বাশুড়িকে জখম ও ১৪ দিন বয়সী শিশু সন্তানকে পানিতে নিক্ষেপ করেন তিনি। পরে, নিজেই নিজের পেটে ছুরি চালিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে ঘাতক স্বামী জিয়ারুল।
বুধবার (৩১শে আগস্ট) দুপুর ২টায় উপজেলার বোড়াগাড়ী ইউনিয়নের নয়ানী বাগডোকরার হরতকীতলা নামক এলাকায় পারিবারিক কলহের জেরে স্ত্রী রত্না (২৫), শিশু কন্যা সন্তান ইয়াসমিন আক্তার (২ ১/২) এবং শ্বাশুড়ি বিলকিছু বেগমকে কুপিয়ে জখম করে জিয়ারুল ইসলাম। ঘটনাস্থলেই রত্না ও ইয়াসমিন নিহত হন এবং গুরুতর আহতাবস্থায় বিলকিস বেগমকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করানো হয়।
জানা যায়, হত্যাকাণ্ডের ঘটনার পর ঘাতক জিয়ারুল ইসলাম নিজের পেটে ছুরি চালিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন তিনি। কিন্তু গুরুতর আহত হওয়ায় তৎক্ষনাৎ তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাঃ আবু সাঈদ তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে রেফার্ড করেন। আশংকাজনক হলেও তাকে পুলিশি হেফাজতে রাখা হয়েছে সেখানে।
নিহতরা হলেন—উপজেলার বোড়াগাড়ী ইউনিয়নের নয়ানী বাগডোকরার আব্দুল করিমের কন্যা ও জিয়ারুল ইসলামের স্ত্রী রত্না এবং জিয়ারুল’র শিশু কন্যা ইয়াসমিন। এছাড়া আহতরা হলেন—নিহত রত্না’র মাতা বিলকিছ বেগম, বোড়াগাড়ী ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের পশ্চিম বোড়াগাড়ী চান্দিনাপাড়া এলাকার আমিনুর রহমান সমারুর পুত্র জিয়ারুল ও জিয়ারুলের ১৪ দিন বয়সী শিশু সন্তান ইয়াছিন।
হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ঘটনাস্থল পরিদর্শন ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আহত এবং নিহতদের দেখতে যান—নীলফামারী জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান পিপিএম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মো. আমিরুল ইসলাম, সহকারী পুলিশ সুপার (ডোমার সার্কেল) আলী মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ, জেলা গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) অফিসার ইনচার্জ খ. মো. আখেরুজ্জামান, ডোমার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রমিজ আলম, সহকারী কমিশনার (ভূমি) জান্নাতুল ফেরদৌস হ্যাপী, ডোমার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদ উন নবী প্রমূখ।
ডোমার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদ উন নবী জানান, খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হই। এখানে ২ জন ঘটনাস্থলেই মারা যান এবং আহত এক নারী, ১৪ বছর বয়সী শিশু সন্তান এবং ঘাতক জিয়ারুল ইসলামকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়। এরপর পুলিশ ও ডিবি’র উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাবৃন্দ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। ঘাতক জিয়ারুলকে পুলিশি হেফাজতে রংপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রাখা হয়েছে। নিহত ২ জনের সুরতহাল ও ময়নাতদন্ত শেষে লাশ হস্তান্তর করা হবে।