রানা খান,প্রতিনিধি শ্রীপুর,গাজীপুরঃ গাজীপুরের শ্রীপুরে মা-ছেলেকে হত্যার পর ভারতে পালিয়ে যাওয়া আসামি রহমত উল্লাহ (২৯)কে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ভারতের কৃষ্ণপুর গ্রামে পলাতক থাকাবস্থায় বুধবার বিকেলের দিকে দালালের সহযোগিতায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানায় পুলিশ।
শুক্রবার (১০ ফেব্রুয়ারি) প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এমন তথ্য জানিয়েছেন গাজীপুর জেলা পুলিশের সহকারি পুলিশ সুপার (কালিয়াকৈর সার্কেল) আজমীর হোসেন। গ্রেপ্তার রহমত উল্লাহ গাজীপুর জেলার কাপাসিয়া উপজেলার কুশদী গ্রামের গিয়াস উদ্দিনের ছেলে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শ্রীপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আমজাদ হোসেন জানান, জিজ্ঞাসাবাদে আসামি রহমত উল্লাহ জানায়, এ ঘটনার তিন-চার মাস আগে তার সঙ্গে ভিকটিম গৃহবধূর পরিচয় হয়। পরে তার বাড়িতে আসামি রঙের কাজ শুরু করে। একপর্যায়ে ভিকটিমের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তোলে সে। কিছুদিন আগে গৃহবধূ রুবিনার সাথে স্বামীর ঝগড়া হয় ।আর সেই কারণে রুবিনার স্বামী বাড়িতে থাকতেন না। সেই সুযোগে ঘটনার রাতে আসামি রহমত কৌশলে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে গৃহবধূকে অচেতন করে ধর্ষণের চেষ্টা করলে ধস্তাধস্তি হয়। এতে পাশে ঘুমিয়ে থাকা শিশুটি জেগে উঠলে তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করে রহমত। পরে গৃহবধূকেও শাসরোধে করে হত্যা করে। যাওয়ার সময় গৃহবধূর দুটি মোবাইল, ভ্যানিটি ব্যাগ থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকা এবং তার পা থেকে একজোড়া রুপার নুপুর খুলে নিয়ে যায়। ৭ জানুয়ারি সন্ধ্যায় পুলিশ মা-ছেলের লাশ উদ্ধার করার সময় উপস্থিত লোকজনের সঙ্গে আসামিও ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিল। লাশ উদ্ধারের দুই দিন পর ৯ জানুয়ারি রাত ১২টায় গ্রেফতারের জন্য আসামির বাড়িতে গেলে সে সীমানা প্রাচীর টপকে পালিয়ে যায়। পরে নরসিংদীর ফুফুর বাড়িতে একদিন অবস্থান করে। এরপর টঙ্গীতে এক বন্ধুর বাড়িতে তিন-চার দিন থাকে। সেখান থেকে গোপালগঞ্জে গিয়ে রুবিনার দুটি মোবাইল চার হাজার টাকায় বিক্রি করে। ওই টাকা নিয়ে ২০ জানুয়ারি দালালের মাধ্যমে যশোর সীমান্ত দিয়ে ভারতের নদীয়া জেলার কৃষ্ণপুর থানা সংলগ্ন পেপসি কোম্পানিতে শ্রমিকের চাকরি নেয়। ভারতের দালালের মাধ্যমে তাকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে এনে ৯ ফেব্রুয়ারি ভোরে ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার সীমান্ত (ঝিরুন্দি) এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
প্রসঙ্গত, গত ৭ জানুয়ারি দুপুরের দিকে শ্রীপুর পৌরসভার কেওয়া পশ্চিমখণ্ড গ্রামের মসজিদ মোড় এলাকার সিরাজ মিয়ার মেয়ে রুবিনা আক্তার ও তাঁর শিশুপুত্র জিহাদের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় নিহতের বাবা সিরাজ মিয়া বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করে শ্রীপুর থানায় মামলা করেন। ওই মামলায় সন্দেহজনকভাবে নিহতের স্বামী ঝুমন মিয়াকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায় পুলিশ।