আবু সায়েম আকন,ঝালকাঠি জেলা প্রতিনিধিঃ ঝালকাঠিতে বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পুকুরে পরে অন্তত ১৭ জন নিহত হয়েছে। এ সময় আহত হওয়া আরও ২০ জনকে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। বাসার স্মৃতি নামে একটি যাত্রীবাহী বাস এই দুর্ঘটনার স্বীকার হয়। নিহতের মধ্যে ৮জন নারী, ৬জন পুরুষ ও ৩ জন শিশু রয়েছে।
আজ শনিবার সকাল আনুমানিক সোয়া ১০টার দিকে সদর উপজেলার ধানঁসিড়ি ইউনিয়ন পরিষদ সংলগ্ন একটি পুকুরে বাসটি নিমজ্জিত হয়।
বাসটি সকালে পাশ্ববর্তী পিরোজপুর জেলার ভান্ডারিয়া থেকে বরিশালের উদ্দেশ্যে প্রায় ৬৫ জন যাত্রী নিয়ে রওনা হয়। পথিমধ্যে বরিশাল খুলনা আঞ্চলিক মহাসড়কের ঝালকাঠি সদরের ধানসিঁড়ি ইউনিয়ন পরিষদ সংলগ্নে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে যাত্রীসহ পুকুরে পড়ে যায়।
প্রত্যক্ষদর্শী আহত বাসের যাত্রী ভান্ডারিয়া উপজেলার পূর্ব ভাণ্ডারিয়া গ্রামের মো. রাসেল মোল্লা (৩৫) বলেন, আমি বাসের চালকের পিছনের সিটে বসা ছিলাম। বাসের চালক যাত্রার শুরু থেকেই বাড়তি যাত্রী উঠানোর জন্য বারবার সুপার ভাইজারের সাথে কথা বলতেছিল। গাড়ি চালানোয় তার মনোসংযোগ ছিল না। ছত্রকান্দা স্ট্যান্ড পার হওয়ার পরেই গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ধানসিঁড়ি ইউনিয়ন পরিষদ সংলগ্ন একটি পুকুরে পড়ে ডুবে যায়। চালকের ভুলেই এ দুর্ঘটনা ঘটেছে।
তিনি আরো বলেন, আমি আমার বাবাকে নিয়ে বরিশালে চিকিৎসকের কাছে যাচ্ছিলাম। এই ঘটনায় আমার বাবা সালাম মোল্লা (৭৫) ও আমার বড় ভাই মো. শাহিন (৪০) নিহত হয়েছেন।
ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক দীন মোহাম্মদ বলেন, এখন পর্যন্ত প্রায় ১৭ জনের লাশ হাসপাতালের মর্গে আনা হয়েছে। এছাড়াও ২০ জন আহত রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহতরা অতিরিক্ত পানি খেয়ে মুমূর্ষ অবস্থায় আছেন। তাদেরকে অক্সিজেনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। নিহতদের পরিচয় এখনো মেলেনি। আরো কোনো আহত ব্যক্তিকে অন্য কোথাও নেয়া হয়েছে কিনা যানি না। আহতদের মধ্যে আরো মৃত্যের সংখ্যা বাড়তে পারে ধারনা করা হচ্ছে।
ঝালকাঠি সদর থানার এস আই গৌতম কুমার ঘোষ বলেন, ঘটনাস্থলে পুলিশের রেকার দিয়ে বাসটি উত্তোলন করা হয়েছে। বাসের মধ্যে আর কোন লাশ পাওয়া যায় নি। পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস, স্থানীয় সেচ্ছাসেবী ও র্যাব সদস্যরা উদ্ধার কাজে অংশ নেয়। পানির ভিতরে লাশ থাকতে পারে এমন ধারনায় পুকুরের পানি উঠিয়ে ফেলে দেয়া হলে তার ভিতরে কোনো লাশ পাওয়া যায়নি।
এদিকে দুর্ঘটনার পরে জেলা প্রশাসক ফারাহ গুল নিঝুম ও পুলিশ সুপার আফরুজুল হকসহ প্রশাসনের বিভিন্ন কর্তা ব্যক্তিরা ঘটনাস্থলসহ হাসপাতাল পরিদর্শন করেছেন।