সুজন আলী,রাণীশংকৈল প্রতিনিধিঃ বাগানের গাছে গাছে থোকায় থোকায় দুলছে মাল্টা, এ যেন এক মনোমুগ্ধকর দৃশ্য। দেখলেই যেন চোখ জুড়িয়ে যায়। বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষ মাল্টা বাগান দেখতে আসছেন।এমনই দৃশ্য দেখা গেছে উত্তরের জেলা ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলার ভান্ডারা গ্রামের কৃষক জাহাঙ্গীর আলম সহ ওই এলাকার কয়েকটি বাগানে।
জানা যায়, ২০১৯ সালে রাণীশংকৈল উপজেলা কৃষি অফিসের সহযোগিতায় কৃষক জাহাঙ্গীর আলমের মাল্টা
চাষে আগ্রহ দেখে কৃষি বিভাগ তাকে মাল্টা চাষের প্রশিক্ষণ শেষে বারি মাল্টা-১ জাতের ৫০০টি, চারা সার কীটনাশক সম্পূর্ণ বিনামূল্যে প্রদান করেন। পরে প্রায় ২একর জমিতে চারা গুলো রোপণ করেন। গাছ লাগানোর ৩ বছরের মধ্যে তার বাগানের তিন চতুর্থাংশ থোকায় থোকায় মাল্টা ধরতে শুরু করে।
২০২১ সালে তার বাগান থেকে প্রথম ৪৬ হাজার টাকা আয় করেন। পরের বছরে ২০২২ সালে তাকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। পরের বছর ২ লাখ টাকার মাল্টা,বিক্রয় করে এ ফল চাষাবাদে ব্যাপক আশাবাদী ও উদ্বুদ্ধ হন। তবে এ বছর তিনি ৮ লাখ টাকা আয়ের আশা করছেন।
মাল্টা চাষি জাহাঙ্গীর আলম জানান, বাণিজ্যকভাবে চাষের পরিকল্পনা থাকলেও তা প্রশিক্ষণ ও কৃষি বিভাগের সহায়তা ছাড়া সম্ভব ছিল না। প্রথমে স্বল্প পরিসরে শুরু করলেও এখন তা ব্যাপকভাবে চাষের পরিকল্পনা নিয়ে , মাল্টা ও বাতাবি লেবুর বাগান করে চাষ করছি। ফলন যেমন ভালো হচ্ছে,তেমনি আশানুরুপ লাভও হচ্ছে। আমার দেখে এখন এ এলাকার অনেক কৃষক ও বেকার যুবকরাও এ বাগান করার উদ্যাগে নিয়েছেন।
তিনি আরো জানান,ফলের স্বাদ ঠিক অন্যান্য অঞ্চলের ফল গুলোর মতই সুস্বাদু ও রসালো থাকায় বাজারে এর চাহিদা ব্যাপক ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।
রাণীশংকৈল উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানায়, উপজেলায় নতুন পুরাতন বাগান মিলে ২৮ হেক্টর জমিতে মাল্টা চাষ হয়েছে। অনেকে আগ্রহী হয়ে মাল্টা বাগানের কাজ শুরু করেছেন। জেলার চাহিদা পূরণ করে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এ মাল্টা বাজারজাত করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি অফিসার শহীদুল ইসলাম জানান, আবহাওয়া ও মাটি চাষের উপযোগী হওয়ার কারণে ভালো ফলনও পাচ্ছেন চাষিরা। মার্চ-এপ্রিল মাসে বারি মাল্টা-১ গাছে ফুল আসে। আগস্ট-সেপ্টেম্বর মাসে ফল পাকে। ৪-৫ টা মাল্টা ওজনে এক কেজি হয়।
তিনি আরো বলেন আমরা সাইট্রাস প্রজেক্টর আওতায় আগ্রহীদের প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকি। মাল্টা বা লেবু জাতীয় ফল অল্প খরচে চাষিরা বেশি লাভবান হয়। কৃষকেরা যেভাবে মাল্টা চাষে ঝুঁকছেন এক সময় রানীশংকৈলের মাল্টা চাষিরা দেশের অর্থনৈতিক বিনিয়োগে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবেন বলে আমরা আশা করছি।