উজ্জ্বল কুমার দাস,কচুয়া(বাগেরহাট)প্রতিনিধি।।
বাগেরহাটের কচুয়ায় নিয়ম বহির্ভূত ভাবে রাস্তার পাশে থাকা সরকারি গাছ কর্তন করা হয়েছে।পল্লী বিদ্যুৎ লাইনের কাজের দোহাই দিয়ে মঘিয়া ইউনিয়নের কচুয়া-আন্ধারমানিক সড়কের ইউপি সদস্য মিজানুর রহমানের বাড়ি থেকে শুরু করে পঙ্গুমার্কেট নামক স্থানের আগ পর্যন্ত প্রায় ৪ কিলোমিটার সড়কের দুই পাশ থেকে বনবিভাগ ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অনুমতি না নিয়ে নিয়মের তোয়াক্কা না করে সরকারি ৪০ থেকে ৫০ টির মতো মেগনিস,মেহঅগ্নি গাছের আংশিক ও কয়েকটির পুরোপুরি কেটে ফেলা হয়েছে।সেই সাথে কর্তন কৃত গাছের অংশ বিভিন্ন মাধ্যমে বিক্রি করে দিয়েছে বলেও জানাযায়।আর এই কাজে বিদ্যুৎ লাইনের কাজের সাথে সম্পৃক্ত ফোর ম্যান এবং তার সহযোগীরা জরিত বলেও খবর পাওয়া গেছে।কর্তন কৃত গাছের বেস কয়েকটি টেন্ডারে বিক্রির জন্য প্রক্রিয়াধীন রয়েছে, যে সব গাছ গুলোতে নাম্বারিং করা রয়েছে। এ বিষয়ে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় প্রয়োজনের অতিরিক্ত গাছের অংশ কেটে ফেলা হয়েছে এবং ঐ সব গাছের বড়-বড় লখ সহ গাছের ডালপালা ফোরম্যান সহ স্থানীয় প্রভাবশালীদের যোগসাজশে বিভিন্ন মাধ্যমে বিক্রি করে ফেলা হয়েছ এবং কিছু গাছের অংশ সরিয়ে ফেলার প্রকৃয়া চলছে।এ ঘটনায় ২৭ সেপ্টেম্বর বিকালে কচুয়া বনবিভাগের কর্মকর্তারা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় এবং গাছ কাটার বিষয় নিয়ে বিদ্যুৎ লাইনের কাজের সাথে যুক্ত ফোর ম্যানের সাথে বাকবিতন্ডার ঘটনা ঘটেছে বলেও স্থানীয়রা জানিয়েছে। পল্লী বিদ্যুৎ লাইনের কাজে যুক্ত ফোরম্যান হুমায়ুন বলেন,লাইন টানতে বাঁধা সৃষ্টি হওয়ায় দুইদিন ধরে এ পর্যন্ত আমরা ৫০ টির মতো গাছ কেটেছি।তবে সরকারি ছুটি থাকায় এ বিষয়ে স্থানীয় বনবিভাগের কাছ থেকে আমরা কোন অনুমতি নিতে পারিনি এটা আমাদের অপরাধ হয়েছে।কেটে ফেলা গাছের অংশ আমরা স্থানীয় বনবিভাগের সভাপতি মোঃ গাউচ শেখের কাছে দিয়েছি।গাছ কাটার বিষয়ে প্রাথমিক ভাবে স্থানীয় মেম্বার ও চেয়ারম্যানকে জানিয়েছি। বিদ্যুৎ লাইনের কাজের সাথে যুক্ত সুপারভাইজার রকি বলেন,আমরা যে গাছ কেটেছি তা স্থানীয় লোকজন নিয়ে গেছে কে বা কারা নিয়েছে তা সঠিক ভাবে বলতে পারবো না তবে কিছু গাছ আমরা গাউস নামে একজনের কাছে দিয়েছি সে নাকি বনবিভাগের সাথে যুক্ত। গাউচ শেখ বলেন,আমি কোন গাছ নেইনি তবে ৪৫ মনের মতো গাছের ডালপালা নিয়েছি যা ৪ হাজার ৫ শত টাকায় বিক্রি করে শ্রমিকদের দিয়ে দিয়েছি এখন আমার কাছে ২ শত টাকা অবশিষ্ট আছে।অন্য গাছ কে কোথা থেকে নিয়েছে আমি জানিনা। ৪ নং ওয়ার্ড এর ইউপি সদস্য মিজানুর রহমান বলেন,আমি এ বিষয় কিছু জানি না।তবে রাস্তা থেকে কেটে ফেলা গাছ গুলোকে কয়েকজনকে সরিয়ে ফেলতে দেখেছি।এখন তারা নিয়েছে না কে নিয়েছে আমি জানিনা। যদি এটা বেআইনি ভাবে কাটা হয় তবে এর তদন্ত সাপেক্ষে সুষ্ঠু বিচার চাই। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন জানান,আমার ঘরের পাশের রাস্তার পাশ থেকে যে গাছ কাটা হয়েছে তার কয়েকটি অংশ আমি নিতে চাইলে আমাকে বাঁধা দেয় এবং আমার কাছে উল্টো টাকা দাবি করে পরে আমি গাছগুলো দিয়ে দিয়েছি। সন্মানকাঠি ভ্যান স্ট্যান্ডের দোকান ব্যাবসায়ী বলেন,আমরা গাছগুলো কাটতে দেখেছি তবে কে নিয়েছে দেখিনি সুনেছি গাউচ নামে কেউ একজন এগুলো নিয়েছে তবে এর সাথে বিদ্যুৎ বিভাগের শ্রমিকেরা জরিত রয়েছে। রফিকুল ইসলাম নামে একজন বলেন,যে নিয়মে গাছ কাটার কথা সে অনুযায়ী গাছগুলো কাটা হয়নি এবং আমার নিজের গাছের অংশও কে বা কারা কেটে নিয়েছে আমি গাছগুলো পাইনি। বিদ্যুৎ লাইনের কাজের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের নাম শ্রমিকদের মোধ্যে কেউ বলতে পারেনি তবে সাতক্ষীরা এলাকার জোয়াদ্দার নামে একজন ঠিকাদারের মাধ্যমে তারা এ কাজ করছেন বলে জানিয়েছে। কচুয়া পল্লী বিদ্যুৎ এর এজিএম নাজমুল হাসান বলেন,এ ধরনের ঘটনা আমার জানা নেই।যদি এমন ঘটনা সত্যি হয়ে থাকে এটা অন্যায়।আমার জানামতে এক্সচেঞ্জের সুপারিশ নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত দিয়ে অনুমতি নিয়ে সাধারণত গাছ গুলো কাটা হয়ে থাকে।তবে তারা কি ভাবে কেটেছে আমার জানা নেই।তবে এ বিষয়ে আমি খোঁজ নিয়ে দেখবো। মুঠো ফোনে যোগাযোগ করা হলে জোয়াদ্দার ফার্মের সত্বাধীকারী মিজান জোয়াদ্দার বলেন,আমরা কোন গাছ কাটিনি।যদি আমার কোন কর্মচারী ভূল বসত কেটে থাকা তবে আমরা তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নিব। বনবিভাগের কর্মকর্তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী গত বৃহস্পতিবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।এ বিষয়ে বনবিভাগের পক্ষ থেকে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। কচুয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাখি ব্যানার্জি বলেন,এ ধরনের ঘটনা আমার জানা নেই।এ বিষয়ে আমার কাছ থেকে কেউ লিখিত অনুমতি নেয়নি। এ ঘটনায় এলাকার সাধারণ মানুষের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।