চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধিঃ চুয়াডাঙ্গার দর্শনা পৌর এলাকার মোহাম্মদপুর পাড়ায় ভাইকে অপহরণকারীদের হাত থেকে বাঁচাতে গিয়ে দুর্বৃত্তেদের ধারালো অস্ত্রাঘাতে বোন নিহত হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার (২১ অক্টোবর) রাত ৮টার দিকে। নিহত হয়েছে মোহাম্মদপুর পাড়ার মরহুম আরমান হোসেনের মেয়ে ও সুরুজ মিয়ার স্ত্রী মঞ্জুরা খাতুন মিম (৩২) ও আহত হয়েছে নিহতের ভাই আলমগীর হোসেন (৩৫)। ঘটনার শিকার চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় থাকা দর্শনা মোহাম্মদপুর পাড়ার মরহুম আরমান হোসেনের ছেলে আলমগীর জানান, শনিবার (২১ অক্টোবর) রাত ৮ টার দিকে সে বাড়ী থেকে বের হওয়ার সময় ৪/৫ জন অচেনা ব্যক্তি তাকে ধরে জোর করে বাড়ীর পাশে বাগানের দিকে নিয়ে যেতে থাকে। এ সময় সে না যেতে চাইলে তারা তার মাথায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপ মেরে তাকে বাগানের ভিতর নিয়ে গিয়ে বেঁধে ফেলে। ওই সময় তার চিৎকার শুনে বাড়ীর ভেতর থেকে তার বোন মঞ্জুরা খাতুন মিম তাকে বাঁচাতে ছুঁটে আসে। তারপর ত্রিমুখী ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে তারা তাকে ছেঁড়ে দিয়ে তার বোনকে নিয়ে চলে যায়। চিৎকার চেঁচামেঁচিতে প্রতিবেশীরা ছুঁটে এসে দর্শনা থানায় ফোন দিয়ে বিষয়টি জানালে থানার অফিসার ইনচার্জ (অপারেশন) শফিউল আলমসহ একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে দু’জনকেই খূুঁজতে থাকে। সে সময় রক্তাক্ত অবস্থায় পুলিশ তাকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে পাঠায়। সে আরো জানায়,ঢাকার পার্শ্ববর্তী দক্ষিন কেরানীগঞ্জের তার শ্বশুর বাড়ির লোকজন ও তার স্ত্রী এ ঘটনা ঘটিয়ে থাকতে পারে। এর আগে তাকে হত্যার হুমকি দিয়েছিল। যার পরিপ্রেক্ষিতে সে থানায় সাধারণ ডাইরী করেছিল। দর্শনা থানার অফিসার ইনচার্জ (অপারেশন) শফিউল আলম জানান, ঘটনার রাতে অনেক খোঁজাখুঁজি করেও মঞ্জুরা খাতুন মিমকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। এরপর অর্থাৎ রবিবার (২২ অক্টোবর) ভোর আনুমানিক সোয়া ৫টার সময় মোহাম্মপুর পাড়ার একটি বেগুণ ক্ষেত থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় তার মরদেহের সন্ধান পাওয়া যায়। তারপর সেখানে ছুঁটে আসেন চুয়াডাঙ্গা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপ্স) নাজিম উদ্দিন আল আজাদ ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (দামুড়হুদা সার্কেল) জাকিয়া সুলতানা। এদিন দুপুরের পর ঝিনাইদহ জেলার সিআইডির ক্রাইম সিনের সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে মরদেহের বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করে। এরপর দর্শনা থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল-মামুন ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে উপস্থিত সংবাদকর্মীদের জানান, এ হত্যাকান্ডের বিষয়টি অত্যান্ত গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করা হবে। আশা করা যায় খুব দ্রুত তদন্ত শেষে প্রকৃত ঘটনা উন্মোচিত করা সম্ভব হবে। নিহত মঞ্জুরা খাতুন মিমের মা আরিফা বেগম ও তার স্বামী সুরুজ মিয়াকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশী হেফাজতে নেয়া হয়েছে।