এস এম সোহেল, গাইবান্ধা প্রতিনিধি: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। রবিবার (৭ জানুয়ারি ২০২৪)। নির্বাচনে ৩২,গাইবান্ধা-৪ (গোবিন্দগঞ্জ) আসনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনীত আলহাজ্ব অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদ ২০১১৭১ ভোট পেয়ে জয় পেয়েছেন। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি দুই বারের সাংসদ প্রকৌশলী আলহাজ্ব মনোয়ার হোসেন চৌধুরী স্বতন্ত্র ট্রাক প্রতীকে ২৭ হাজার ৪৫০ ভোট পেয়ে নিজের জামানত হারিয়েছেন। অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদও এ দফায় দ্বিতীয় বারের ন্যায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। গত ১০ জানুয়ারি তিনি শপথও নিয়েছেন।
দু’জনই বিগত সময়ে গোবিন্দগঞ্জের উন্নয়নে যথাসাধ্য কাজ করেছেন। তবে গোবিন্দগঞ্জবাসীর অনেক স্বপ্ন আজও বাস্তবায়ন হয়নি। সেগুলোর মধ্যে অগ্রগণ্য- রংপুর চিনিকল চালু বা আধুনিকায়ন; সাহেবগঞ্জ (বাগদা) ইক্ষু ফার্মে প্রস্তাবিত রংপুর ইপিজেড বাস্তবায়ন; উপজেলা শহরকে গ্যাস সংযোগের আওতায় আনা; মানসম্পন্ন স্টেডিয়াম স্থাপন; করতোয়া-কাটাখালী নদী (দু’ধারে বাঁধ নির্মাণ) শাসন দু’তীরে বাসিন্দাদের দু:খ লাঘব; কাঁচা রাস্তা পাকাকরণ ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে (বৈষম্যের শিকার প্রতিষ্ঠানগুলোতে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে) দৃষ্টিনন্দন ভবন নির্মাণ।
বিগত সময় এ স্বপ্নগুলো বাস্তবায়নে একজন যোগ্য ও দক্ষ সারথীর প্রয়োজন অনুভব করছে উপজেলাবাসী। সেদিক থেকে তৃণমূল রাজনৈতিক যোদ্ধা হিসেবে শত চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় দুরন্ত গতিতে ছুটে চলা গোবিন্দগঞ্জবাসীর স্বপ্ন সারথি’র (স্বপ্ন নামক রথ পরিচালনাকারী) ভূমিকায় অবতীর্ণ হওয়া একমাত্র নেতা অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদ এবার এমপি। তার রাজনৈতিক দূরদর্শিতার প্রমাণ ইতোমধ্যে নির্বাচনী প্রচারণায় ভোটার-সচেতনমহল প্রত্যক্ষ করেছে। নির্বাচনী মাঠে তিনি উল্লেখিত স্বপ্নগুলো পূরণের আশ্বাস দিয়েছেন। যা আজকের শিরোনাম ‘স্বপ্ন পূরণে বিশ্বস্ত সারথির যাত্রা শুরু’।
প্রথমেই আসা যাক করতোয়া-কাটাখালী নদী শাসন। উপজেলার মহিমাগঞ্জ, রাখালবুরুজ, হরিরামপুর, তালুককানুপুর, ফুলবাড়ী, দরবস্ত, পৌরসভা ও কাটাবাড়ী ইউপির নদী তীরবর্তী জনতার কপালে ভাঙন ও বন্যা একটি বড় অভিশাপ। প্রতিবছরই ভাঙনের কবলে বসতভিটা ও জমি; নয়ত দু’তীর উপচে বন্যার পানিতে ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকের ফসল। নির্বাচনী মাঠে প্রচারণায় এ সমস্যা সমাধানে ড্রেজিং সহ বাঁধ নির্মাণের স্বপ্ন দেখিয়েছেন তিনি সাধারণ ভোটারদের। নির্বাচনী মাঠে প্রচারণায় এ সমস্যা সমাধানে ড্রেজিং সহ বাঁধ নির্মাণের স্বপ্ন দেখিয়েছেন তিনি সাধারণ ভোটারদের।
দ্বিতীয় যে বিষয়টি হাতছানি দেয়; তাতে স্থান পেয়েছে ২০১৯ সালের ১৩ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বেপজা গভর্ণর বোর্ডের ৩৪তম সভায় রংপুর চিনিকলের সাহেবগঞ্জ ইক্ষু খামারের ১ হাজার ৮৪২ একর জমিতে ‘রংপুর রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ এলাকা’ (আরইপিজেড) স্থাপনের সিদ্ধান্তকে বাস্তবায়ন। যা চ্যালেঞ্জিং হলেও স্থানীয় ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ও সরকার-বেপজা’র সাথে সমন্বয় করে গোবিন্দগঞ্জবাসীর প্রাণের এ দাবিকে বাস্তবায়নে একমাত্র সারথী অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদ।
তৃতীয়ত: নব-নির্বাচিত এমপিকে নিয়ে উপজেলাবাসী স্বপ্ন বুনছেন বন্ধ রংপুর চিনিকল লি. চালুকরণ। ১৯৫৪ সালে নির্মাণ শুরু হয়ে ১৯৫৭-১৯৫৮ মাড়াই মওসুমে উৎপাদনে যাওয়া এ চিনিকলটি কয়েক দফা বন্ধ করা হয়। সবশেষ ২ ডিসেম্বর ২০২০ সালের পরিপত্রে বন্ধ মিলগুলো দেশি-বিদেশি বেসরকারি বিনিয়োগে গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রপাতি, স্থাপনা ও সম্পত্তি ব্যবহার উপযোগী করে তোলার পরিকল্পনা দ্রæত বাস্তবায়নে সুদূর প্রসারী পদক্ষেপ গ্রহনে সরকারকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করবেন তিনি।
চতুর্থটিতে: মাদক ও নেশা মুক্ত যুবসমাজ গড়তে একটি আধুনিক স্টেডিয়ামের অভাব পূরণ এখন সময়ের দাবি। সেই সাথে দেশের উত্তরাঞ্চলে গ্যাস বিতরণে সঞ্চালন লাইন এ উপজেলার মধ্য দিয়ে গেলেও তা থেকে বঞ্চিতের পথে গোবিন্দগঞ্জ।
পঞ্চম স্বপ্ন হিসেবে অগ্রাধিকার পাক পৌরশহর (আবাসিক) ও শিল্প-কারখানায় গ্যাস সংযোগ।
ষষ্ঠত গড়ে উঠুক বেকার সমস্যা সমাধানে অর্থনৈতিক অঞ্চল।
অপরদিকে উপজেলার কাঁচা রাস্তাগুলো পাকাকরণ সহ শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানে দৃষ্টিনন্দন ভবন নির্মাণে চলমান প্রকল্পগুলোতে নতুন গতি আসবে এ সারথির হাত ধরেই। না পাওয়ার বেদনা ভুলে দীর্ঘদিন বৈষম্যের শিকার প্রতিষ্ঠানে নির্মাণ হোক বহুতল ভবন। শেষটায় অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদের প্রতিশ্রুত উপজেলাবাসীর স্বপ্নগুলো বাস্তবায়নের পাশাপাশি বালাসি-বাহাদুরাবাদ ঘাটে ট্যানেল নির্মাণে যোগ্য সারথি’র ভ‚মিকায় অবতীর্ণ হোক এটাই কামনা।