মাসুম বিল্লাহ,বগুড়া প্রতিনিধিঃ বগুড়ার শেরপুরে টাউন ক্লাব পাবলিক লাইব্রেরি মহিলা অনার্স কলেজের শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌনহয়রানী করার অভিযোগ করেছে ছাত্রীরা। কিন্তু এর জন্য অভিযোগকারীদের বাড়িতে গিয়ে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এর প্রতিবাদে এবং অভিযুক্তদের অপসারণের দাবিতে ঢাকা-বগুড়া মহাসড়ক অবরোধ করেছে শিক্ষার্থীরা। বুধবার বেলা ১১টা থেকে ঘন্টাব্যাপী অবরোধের কারণে মহাসড়কের দুই দিকেই তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে স্থানীয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপে আলোচনায় বসে ছাত্রীরা। বেলা সাড়ে ১২টায় উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন সহকারি কমিশনার (ভূমি) এসএম রেজাউল করিম, উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা শারমিন আক্তার, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম, শেরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম, শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে নুসরাত জাহান রিসতা, মরিয়ম আক্তার নিপা, মোছা নূরে আফরিন জেসি, সুমাইয়া ফারহানা এবং বিভিন্ন গণমাধ্যম কর্মী। অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে কলেজের কৃষি বিভাগের প্রদর্শক মাহবুবুল হক ছাত্রীদের পোশাক নিয়ে কটূক্তি, অসৌজন্যমূলক আচরণ ও উত্ত্যক্ত করে আসছে। এই ঘটনায় ২২ সেপ্টেম্বর কলেজের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতির কাছে অভিযোগ দিলেও কোনো প্রতিকার পাননি ছাত্রীরা। এ কারণে তাঁরা ক্ষুব্ধ হয়ে গত রবিবার সকালে কলেজের সামনে ঢাকা-বগুড়া মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে প্রতিবাদ জানান। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তদন্তের জন্য তিন সদস্যের একটি কমিটি করা হয়। কিন্তু গত মঙ্গলবার রাতে কিছু ব্যক্তি অভিযোগকারীদের বড়িতে গিয়ে হুমকী প্রদান করেন। এর প্রতিবাদ এবং কলেজের অভিযুক্ত শিক্ষক মাহবুবুল হক ও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হাবিবুর রহমানের অপসারণ ও বিচারের দাবিতে আজ ছাত্রীরা কলেজের সামনে ঢাকা-বগুড়া মহাসড়ক অবরোধ করেন। এর আগে ৩ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সহকারি কমিশনার (ভূমি) এসএম রেজাউল করিম। প্রশাসনের সাথে আলোচনায় ছাত্রীরা বলেন, কলেজে দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষক কর্তৃক ছাত্রীদের যৌনহয়রানী করে আসছে। কিন্তু ভয়ে ও লজ্জায় কেউ মুখ খোলেনি। দেশের স্বৈরশাসনের অবসান হলেও শিক্ষদের আচরণের পরিবর্তন হয়নি। এর মধ্যেই কৃষি বিভাগের প্রদর্শক মাহবুবুল হক একাধিক ছাত্রীকে যৌনহয়রানী করেছন। আমরা ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছি। এরপর থেকেই আমাদের বাসায় গিয়ে হুমকী দেওয়া হচ্ছে। এতে প্রমাণিত হয় ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ অভিযুক্ত শিক্ষককে বাঁচানোর চেষ্টা করছেন। তাই আমরা দুই জনেরই বিচার ও অপসারণ চাই। শেরপুর থানার ভারপ্রপ্ত কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম ছাত্রীদের আশ্বস্ত করে বলেন, সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে বাড়িতে গিয়ে হুমকী প্রদানকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আলোচনার সময় মোবাইল ফোনে যুক্ত হন ওই কলেজের গভর্ণিং বডির সভাপতি এ কে এম মাহবুবুর রহমান হারেজ। তিনি বলেন, এবিষয়ে আজ সকালেই কলেজের এক সভায় অভিযুক্ত শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ি আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ বিষয়ে সহকারি কমিশনার (ভূমি) এসএম রেজাউল করিম বলেন, “ইতিমধ্যে তদন্ত কমিটি কাজ শুরু করেছে। ছাত্রীদের সাথে বক্তব্য শুনে দ্রুততম সময়ের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য কমিটিকে নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।