মোঃ খলিলুর রহমান, সাতক্ষীরা :: আর ৫ দিন পরেই শুরু হবে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। তাই তো শেষ মূহুর্ত্বের প্রস্তুতিতে ব্যস্থ সাতক্ষীরার প্রতিমা শিল্পীরা। দিনরাত পরিশ্রম করে নিপুন হাতে তৈরী করছেন দেবি দূর্গাকে। দেবি দূর্গাকে মনের মত করে সাজাতে রংতুলির আচড়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন কারিগররা। সাতক্ষীরা জেলা পূজা উদ্যাপন পরিষদের দেয়া তথ্যমতে এবার সাতক্ষীরা জেলার সাতটি উপজেলা ও দুটি পৌর সভায় ৫৬২টি মন্ডপ ও মন্দিরে শারদীয় দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে সাতক্ষীরা সদর উপজেলায় ৯৯টি, আশাশুনিতে ৯৫টি, দেবহাটায় ২১টি, কলারোয়ায় ৩৯টি, তালায় ১৯৬টি, কালীগঞ্জে ৪৯টি ও শ্যামনগর উপজেলায় ৬৩টি মন্ডপ রয়েছে। বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) জেলার বেশ কয়েকটি মন্দির ও পূজা মন্ডপ ঘুরে দেখা গেছে ইতিমধ্যে বেশির ভাগ প্রতিমা তৈরির অবকাঠামোর কাজ শেষ হয়েছে। এখন রংতুলির কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন শিল্পীরা। দেবী দুর্গাকে মনেরমত করে সাজাতে রংতুলির কাজ করে যাচ্ছেন প্রতিমা শিল্পীরা। রাত-দিন কাজ করে যাচ্ছেন তারা। প্রতিমার পরিপূর্ণ রূপ দিতে রংতুলির শেষ আঁচড় দেওয়া হচ্ছে। শিল্পীদের কেউ কেউ আবার সাজসজ্জার কাজ করছেন। প্রতিমা শিল্পী আশিষ বৈরাগী বলেন, আমরা এবার গ্রুপ করে বেশ কয়েকটি মন্দিরের কাজ করছি। কোথাও ১০দিন, আবার কোথাও ১২দিন সময় লাগছে। প্রতিমা তৈরী শেষে এখন চলছে রংয়ের কাজ। একই সাথে চলছে প্রতিমার সাজসজ্জার কাজ। আশা করছি আগামী ২/১ দিনের মধ্যে প্রতিমা তৈরীর পুরো কাজ শেষ হবে। জেলার বেশ কিছু হিন্দুধর্মালম্বীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, প্রতিবছরের ন্যায় এবছরও সাতক্ষীরায় জাকজমকপূর্ন পরিবেশে শারদীয় দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। নির্বিঘেœ এবং আনন্দঘন পরিবেশে এবারও পূজা সম্পন্ন করতে পারবো বলে আমরা আশা করছি। কেননা প্রশাসনের পাশাপাশি বিএনপি ও জামায়াত সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দরা আমাদেরকে সার্বিকভাবে সহযোগিতা করে যাচ্ছেন। কাজেই আমাদের পূজা উদযাপনের সার্বিক কার্যক্রম খুব সুন্দরভাবে চলছে। দেশবাসীকে অগ্রিম শারদীয় শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। সাতক্ষীরা জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বনাথ ঘোষ বলেন, ব্যাপক উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। যদিও জেলায় এবার কয়েকটি উপজেলায় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, সে কারণে কিছু পূজা কম হবে। এরপরও সাতক্ষীরা জেলায় ৫৬২টি পূজা অনুষ্ঠিত হবে। পূজা মন্ডপের নিরাপত্তার বিষয়ে আমাদের নেতৃবৃন্দ বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন। তারা আশ্বস্ত করেছেন, কোনো অসুবিধা হবে না। আপনাদের পাশে আমরা আছি এবং থাকব। সবাই মিলেমিশে সব ধরনের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করব। এছাড়া জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার এমনকি খুলনা রেঞ্জের ডিআইজি মহোদয় আমাদের নিয়ে বসে সার্বিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন। এদিকে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের পাশাপাশি সাতক্ষীরার সীমান্ত এলাকার পূজা মন্ডগুলোর নিরাপত্তার দায়িত্বে টহল কার্যক্রম জোরদার করেছে বিজিবি সদস্যরা।