মোঃ মজিবর রহমান শেখ,
ঠাকুরগাঁও জেলার সদর উপজেলার আকচা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সুব্রত কুমার বর্মণের বিরুদ্ধে চাকুরি ও ঘর দেওয়ার নামে কোটি টাকা হাতে নেওয়ার
অভিযোগ উঠেছে। চাকরি ও সরকারি ঘর দেওয়ার নামে তিনি টাকা নিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয় লোকজন। সুব্রত কুমার আসন্ন আকচা ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী হিসেবে আবারো প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। স্থানীয় বাসিন্দা দিনমজুর রমজান আলী বলেন, ‘আমি আকচা এই ইউনিয়নের একজন ভূমিহীন বাসিন্দা। যখন জানতে পারলাম আমাদের থাকার ঘর দেওয়া হবে, তখন আমি চেয়ারম্যান সুব্রত কুমারের সঙ্গে যোগাযোগ করি। কিন্তু নিরাশ হই, তিনি অনেক ধনীদের ঘর দিয়েছেন কিন্তু আমাকে দেননি। পরে চেয়ারম্যানের লোক সুবেদ আমার কাছে টাকা চাই । ৫০ হাজার টাকা দিলে নাকি ঘর পাওয়া যাবে। আমার দুইটা ছাগল শেষ সম্বল ছিল,আমি সেগুলো বিক্রি করে তাকে ২০ হাজার টাকা দেই বাকিটা ঘরে উঠার পর। আমাকে দেখে আরও ৪জন একই পরিমাণ টাকা দেয়। কিন্তু তারা আমাদের আর ঘর দেননি, টাকাও ফেরত দিচ্ছেনা। চেয়ারম্যানের কাছে গিয়ে টাকা ফেরত চাইলেই তিনি বলেন কয়দিন পরে আসো।’ ইউনিয়নের সর্দার পাড়ার বাসিন্দা ফেন্সি বেগম বলেন, ‘আমাকে সরকারি ঘর দেওয়ার কথা বলে চেয়ারম্যান ২৪ হাজার টাকা নিয়েছে, কিন্তু ঘর দেননি। বলতেছেন পরের বাজেটে দেবে। কিন্তু মানুষ বলতেছে নতুন করে ঘর নাকি আর বানানো হবে না। তাই টাকা ফেরত চাইছি। কিন্তু তিনি আমার টাকা ফেরত দিচ্ছেন না।’ একই এলাকার সারোয়ার হোসেন বলেন, ‘সুব্রত কুমার সরকারি ঘর দেওয়ার নাম করে প্রায় ৩০ থেকে ৫০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। কিন্তু এতো পরিমাণে সরকারি ঘর না থাকায় বিপাকে পরেছেন তিনি। এখন ঘর দিতে না পারায় সবাই তার ওপর ক্ষেপে গেছে।’তিনি আরো বলেন, ‘শুধু ঘর নয় ইউনিয়নের অনেক যুবককে চাকুরি দেওয়ার কথা বলে প্রায় কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন সুব্রত কুমার। আমার এলাকার ইসরাফিল নামের এক ছেলের বাবা জমি বিক্রি করে ৭ লাখ টাকা দিয়েছেন। কিন্তু ঐ যুবক এখনো চাকরি পায়নি। এখন টাকাও ফেরত দিচ্ছেন না চেয়ারম্যান।’ বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চেয়ারম্যান সুব্রত কুমারের সঙ্গে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি দেখা করতে রাজি হননি। পরে মুঠোফোনে সব অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, ‘আমি এদের কাউকে চিনিনা।’ ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার ইউএনও আবু তাহের মোহাম্মদ সামসুজ্জামান বলেন, ‘টাকার বিনিময়ে সরকারি ঘর দেওয়ায় কোনো সুযোগ নেই। বিষয়টি প্রমাণিত হলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ছাড়াও টাকা নেওয়ার বিষয়ে কেউ অভিযোগ করলে তা খতিয়ে দেখা হবে।’
মোঃ মজিবর রহমান শেখ