মোঃ মজিবর রহমান শেখ,,
নতুন বছরের শুরুর দিনে প্রথম প্রহরেই
তিন সন্তানের জননী সোনালী আক্তার তার শোয়ার ঘরের দরজার ছিটকিনি আটকিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করার খবর পাওয়া গেছে ।
শনিবার (১জানুয়ারি) সকাল ১০ টার সময় ঠাকুরগাঁও জেলার সদর উপজেলার আঁকচা ইউনিয়নের মুন্সিপাড়া গ্রামেএই মর্মাহত ঘটনাটি ঘটেছে।
নিহত তিন সন্তানের জননী সোনালী আক্তার (৩২) হাজিমুল আলীর স্ত্রী ও সাবেক ইউপি সদস্য মহসিন আলীর পূত্রবধূ। নিহতের স্বামী হাজিমুল জানান, সকাল থেকে সংসারের কাজ করেছে সোনালী। আমি সকাল সাতটার মধ্যে ব্যবসার কাজে সবজির আড়তে চলে যাই। প্রতিদিনের মতো আজকেও আমাকে হাসিমুখেই বিদায় জানায় আমার স্ত্রী। পরে মুঠোফোনের মারফত জানতে পারি তার আত্মহত্যার খবর। হাজিমুল আরো বলেন, পরপর তিনটি ছেলে সন্তান হয়েছে আমাদের। আমার স্ত্রী একটি কন্যা সন্তান খুব করে চেয়েছিল। গত চার মাস আগে জন্মগত হৃদরোগ ও ডায়বেটিস রোগাক্রান্ত হয়ে আমার তৃতীয় ছেলের জন্ম হয়। সেই থেকে আমার স্ত্রী মানসিকভাবে খুব ভেঙ্গে পড়ে। প্রতিদিন রাতে কান্নাকাটি করতো আর আফসোস করতো। আমি অনেক বোঝাতাম। ভরসা রাখতে বলতাম। গ্রামবাসী তাহমিনা তামান্না বলেন,
সোনালী ভাবি অনেক সংসারী ছিলেন। অনেক হিসেবি ছিলেন। তাঁর তৃতীয় সন্তানের জন্য সে খুব হতাশায় ভুগছিলেন। অনেক টাকা পয়সাও দৈনিক খরচ করতেন সন্তানের চিকিৎসার জন্য। তাকে প্রায় বলতে শোনা যেতো এ জীবন রাখবোনা। মাঝে মাঝে সন্তানদেরও মেরে আত্মহত্যা করতে চাইতেন। আমরা অনেক বোঝাতাম। স্বান্তনা দিতাম। ঘটনাটি বেদনাদায়ক ও অনাকাঙ্খিত। স্থানীয় জাহাঙ্গীর আলম বলেন, নিহতের স্বামী কাজে চলে যাওয়ার পর অনেক্ষণ দরজা বন্ধ থাকায় এবং অনেক ডাকাডাকিতেও কোন সাড়া না পাওয়ায় পরিবারের লোকজন চিন্তিত হয়ে আমাদের খবর দেয়। আমরা কয়েকজন দরজা ঠেলে দেখি ঘরের সরের সাথে মরদেহটি ঝুলছে। পরে স্থানীয় জন প্রতিনিধিদের খবর দেই। স্থানীয় ইউপি সদস্য কুলুরাম রায় ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এলাকার সম্ভ্রান্ত ও সম্মানী ব্যক্তির পরিবার এটি। হতাশাগ্রস্থ হয়ে এমন ঘটনা ঘটাতে পারে বলে তিনি জানান। ঠাকুরগাঁও থানা পরিদর্শক (ওসি) তানভিরুল ইসলাম জানান, খবর পেয়ো পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন । এ ঘটনায় কোন মামলা হয়নি। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্তসাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মোঃ মজিবর রহমান শেখ