

মাসুম বিল্লাহ, বগুড়া, বগুড়ার শেরপুর পৌরসভার বহুল প্রতীক্ষিত কিচেন মার্কেট উদ্বোধন হয়েছে বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর)। জেলা প্রশাসক হোসনা আফরোজা প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে মার্কেটের উদ্বোধন করেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও পৌর প্রশাসক আশিক খানের সভাপতিত্বে উদ্বোধন শেষে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে ব্যবসায়ী, সুধীজন, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার মানুষ অংশগ্রহণ করেন।
প্রায় ১২ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত নান্দনিক এই কিচেন মার্কেটটি নির্মাণে সময় লেগেছে দীর্ঘ চার বছর। বিশ্বব্যাংকের সহযোগিতায় এমজিএসপি প্রকল্পের আওতায় ২০১৮ সালে শেরপুর পৌর শহরের বিকেলে বাজার এলাকায় কিচেন মার্কেট নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ২০২১ সালে কাজ শেষ করে পৌর কর্তৃপক্ষের কাছে ভবন হস্তান্তর করে। তবে দোকান বরাদ্দ ও নানা জটিলতার কারণে দীর্ঘ চার বছর মার্কেট চালু করা সম্ভব হয়নি। অবশেষে বৃহস্পতিবার এর উদ্বোধন হলো।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মাহবুবুর রহমান হারেজ, উপজেলা বিএনপির সভাপতি শহিদুল ইসলাম বাবলু, সাবেক মেয়র স্বাধীন কুমার কুন্ডু, দোকান মালিক সুজিত বসাক। বক্তারা বলেন, শেরপুর পৌর কিচেন মার্কেট বহু আগেই চালু হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু নানা জটিলতা ও অনিয়মের কারণে তা দীর্ঘদিন বিলম্বিত হয়েছে। উদ্বোধন হলেও এখনো পূর্ণাঙ্গ কাঁচা বাজার চালু হয়নি, ফলে শাকসবজি, মাছ, মাংস ও মসলা ব্যবসায়ীদের জন্য পর্যাপ্ত আসনের ব্যবস্থা হয়নি। তাদের মতে, কাঁচা বাজার ছাড়া মার্কেটের পূর্ণতা আসবে না, তাই অবশিষ্ট বরাদ্দ দ্রুত সম্পন্ন করে মার্কেটকে পুরোপুরি কার্যকর করতে হবে।
যদিও দোকান বরাদ্দে নানা অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে—অনেক দীর্ঘদিনের খোলা আকাশের নিচের ব্যবসায়ী বরাদ্দ থেকে বঞ্চিত হয়েছেন, অথচ আত্মীয়–স্বজনদের কাছে দোকান বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে—তারপরও তারা দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর মার্কেট উদ্বোধন হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং আশা করেন বাকি সমস্যাগুলো দ্রুত সমাধান হবে। জেলা প্রশাসক হোসনা আফরোজা তার বক্তব্যে বলেন, “প্রায় ১২ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই কিচেন মার্কেট শেরপুরবাসীর জন্য বড় একটি অর্জন। সরকার এই এলাকায় আরও অনেক উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নিয়েছে।
এর মধ্যে করতোয়া নদী খনন, নতুন রেলস্টেশন, পৌরসভার সড়ক উন্নয়ন, স্টেডিয়াম ও ফ্লাইওভার নির্মাণসহ নানা উদ্যোগ রয়েছে।” তিনি এসব উন্নয়নকাজের টেকসই রক্ষণাবেক্ষণে সবার সহযোগিতা কামনা করেন। সভাপতির বক্তব্যে ইউএনও আশিক খান জানান, এই মার্কেটে মোট ২৪৯টি দোকান রয়েছে। এখন পর্যন্ত ৫০ জন ব্যবসায়ীর সঙ্গে দোকান বরাদ্দ চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে, আরও প্রায় ৬০টি দোকান বরাদ্দের অপেক্ষায় রয়েছে। চলতি মাসের মধ্যেই সব বরাদ্দ সম্পন্ন করতে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করা হবে।