লিটন পাঠান, হবিগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি
হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার বৈকুন্ঠপুর চা বাগানে এক শ্রমিকের একটি ঘর নির্মাণকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট বিরোধের জেরে ৩৯ দিন বন্ধ থাকার পর হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসকের হস্তক্ষেপে সোমবার (১৭-জানুয়ারি) থেকে চালু হচ্ছে। জেলা প্রশাসক ইশরাত জাহান এর কার্যালয়ে মালিকপক্ষ ও শ্রমিক নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে চা বাগানটি চালু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় জানা যায়, দিলিপ কিউট নামে এক শ্রমিক তাঁর নামে বরাদ্দকৃত জায়গায় একটি পাকা ঘর নির্মাণ শুরু করলে বাগানের ম্যানেজার তাতে বাধা প্রদান করে এবং তাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করে।
বিষয়টি নিয়ে ৭ ডিসেম্বর বাগানের পঞ্চায়েত নেতারা ম্যানেজারের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তিনি কথা বলতে রাজি হননি। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে কয়েকজন শ্রমিক ম্যানেজার সামছুল ইসলাম ভূইয়া ও ডেপুটি ম্যানেজার মো: মহিউদ্দিনকে মারধর করে এবং বাংলো ভাংচুর করে। ম্যানেজার সামছুল ইসলাম ভূইয়া বাগান মালিকের নিকট বিষয়টি জানালে গত ৯ ডিসেম্বর অনির্দিষ্টকালের জন্য বাগান বন্ধ ঘোষণা করে সাইনবোর্ড লাগিয়ে দেয় কর্তৃপক্ষ। একই সাথে শ্রমিকদের কাজে না আসতে জানিয়ে দেওয়া হয়। ফলে বাগানির প্রায় ৫ শতাধিক চা শ্রমিক পরিবার চরম খাদ্য সংকটে পরে।
একজন শ্রমিক এক সপ্তাহ কাজ করলে ৮শ ২৬ টাকা বেতন পায়। সপ্তাহে ৬ কেজি নিম্নমানের আটা রেশন হিসেবে দেয়া হয়, যার জন্য বেতন থেকে টাকা কেটে রাখা হয়। কোন শ্রমিক যদি সপ্তাহে দুইদিন কাজে অনুপস্থিত থাকে তাহলে রেশন দেয়া হয় না। ফলে নিয়মিত কাজ করেও তাদের অনাহারে অর্ধাহারে দিনপার করতে হয়। উনচল্লিশ দিন যাবত বাগান বন্ধ থাকায় বেতন বন্ধ। তাই ক্ষুদার্ত পরিবারগুলো বাধ্য হয়ে চা পাতা সেদ্ধ করে খেতে বাধ্য হচ্ছে।
বৈকুণ্ঠপুর চা বাগানের পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি ঘেনু কেউট বলেন, জেলা প্রশাসক, মাধবপুরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও এসিলেন্ডের উপস্তিতিতে শ্রমিক নেতৃবৃন্দ ও মালিকপক্ষের মধ্যে আলোচনাক্রমে সোমবার থেকে বাগান চালু করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এছাড়াও আমাদের সমস্যাগুলে সমাধানের জন্য একটি কমিটি করে দেওয়া হয়েছে ডেপুটি ম্যানেজার মো: মহিউদ্দিন এর সঙ্গে মোঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোন বক্তব্য দিতে রাজি হননি।