শিহাবুর রহমান শাকিব, ঢাকাঃ রাজধানীতে পরিবহণ চালক-শ্রমিকদের করোনাভাইরাস প্রতিরোধী টিকা দেওয়া শুরু হয়েছে। বুধবার সকাল থেকে মহাখালীর আন্তঃজেলা বাস টার্মিনালে এ টিকাদান কার্যক্রম শুরু হয়।
এ ক্ষেত্রে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি কার্ড) দেখে টিকা দেওয়া হচ্ছে। তবে যাদের এনআইডি কার্ড নেই, তারা জন্মনিবন্ধন সনদ দেখিয়ে টিকা নিতে পারবেন।
বুধবার ঢাকা সিভিল সার্জন অফিসের মেডিকেল অফিসার ডা. ঝুমানা আশরাফি বলেন, এনআইডি না থাকলেও জন্মনিবন্ধনের মাধ্যমে টিকা দেওয়া হচ্ছে। বিআরটিএ ও বিভিন্ন সংগঠনের মাধ্যমে তালিকা সংগ্রহ করা হবে। পর্যায়ক্রমে সারা দেশের পরিবহণ চালক-শ্রমিকদের এ টিকা দেওয়া হবে।
তিনি বলেন, বাস টার্মিনালে আমরা টিকা দিচ্ছি। আসলে এখানে টিকা দেওয়ার পরিবেশ নয়। আমরা মূলত গণপরিবহণ শ্রমিকদের টিকাদান কর্মসূচি এখানে শুরু করেছি। ১০০ পরিবহণ শ্রমিককে টিকা দেওয়া হবে। এর পর নিকটবর্তী কোনো করোনা টিকাদান কেন্দ্রে এ টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে। আপাতত আজকে ১০০ জনকে টিকা দিয়ে এই ক্যাম্পেইন শেষ হচ্ছে।
এর পর বাংলাদেশ সড়ক পরিবহণ কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) কাছ থেকে পরিবহণ শ্রমিকদের তালিকা নেওয়া হবে। এর পর সবাইকে টিকা দেওয়া হবে। মহাখালী বাস টার্মিনালে পরিবহণ শ্রমিকদের তেজগাঁও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে টিকা দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
এর আগে পরিবহণ চালক-শ্রমিকদের জন্য টিকাদানে একটি ক্র্যাশ প্রোগ্রাম হাতে নেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহণ কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মজুমদার। সেই ঘোষণা অনুযায়ী, তালিকা তৈরির পর বুধবার থেকে টিকাদান শুরু হয়। অবশ্য পূর্ণাঙ্গ তালিকা এখনও না পাওয়ায় শুধু ক্যাম্পেইন শুরুর জন্য আজ ১০০ জনকে টিকা দেওয়া হচ্ছে।
রাজধানীর পাশাপাশি এই কার্যক্রম সারা দেশেই করা হবে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
এদিকে গত সপ্তাহে পরিবহণ মালিকদের সঙ্গে বৈঠক করে বিআরটিএ কর্মকর্তারা। সেখানে পরিবহণ মালিকরা জানান, তাদের চালক ও শ্রমিকদের ৮০ শতাংশের বেশি এখনও টিকার আওয়াত আসেননি। তাদের জন্য টার্মিনালগুলোতেই টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানান তারা।
জানা গেছে, দেশের সড়ক পরিবহণ খাতে কাজ করা শ্রমিক প্রায় ৫০ লাখ। এ ছাড়া যানবাহন মেরামতসহ নানা কাজে যুক্ত শ্রমিক আছেন আরও প্রায় ২০ লাখ। সব মিলিয়ে বাস, ট্রাক, অটোরিকশা, নসিমন, করিমনের সঙ্গে যুক্ত শ্রমিকের সংখ্যা প্রায় ৭০ লাখ। এর মধ্যে শুধু যাত্রীবাহী বাসের শ্রমিকের সংখ্যা ১০ লাখের মতো।