লিপন খান, কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি ঃ
কিশোরগন্জের ভৈরবে মাঘ মাসের প্রচন্ড শীত আর হিমেল হাওয়া উপেক্ষা করে ভোর হতেই দা কাস্তে আর কোদাল হাতে বোরো ধান আবাদ ও রোপনে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন কৃষকরা। উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকার মাঠজুড়ে পুরোদমে চলছে বোরো আবাদের ধুম। ভোরের আলো ফোটার আগেই কোমর বেঁধে ফসলের মাঠে নেমে পড়ছেন কৃষকরা। প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেখা না দিলে বোরো ধানের এবার বাম্পার ফলন উৎপাদন হবে বলছেন কৃষকরা। ভৈরবে এ বছর ৫ হাজার ৮শ ৫০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে জানান কৃষি অফিস।
সরেজমিনে জানা যায়,আমন ধানের ভাল দাম পেয়ে বোরো ধানের আবাদে নেমেছেন উপজেলার সাতটি ইউনিয়নের কৃষকরা। ঘন কুয়াশায় ঢাকা শীতের সকালে বীজতলা থেকে ধানের চারা তুলছেন কৃষকরা। এ ছাড়াও ধানের চারা পরিচর্যার পাশাপাশি জমি প্রস্তুতের কাজও চলছে পুরোদমে। বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠ জুড়ে শোভা পাচ্ছে এখন ধানের কচি চারাগাছের নয়নাভিরাম সবুজদৃশ্য। এরই মাঝে নলকূপ থেকে চলছে জমিতে জলসেচ দেয়া আবার কোথাও চলছে ট্রাক্টর ও পাওয়ার টিলার দিয়ে জমি প্রস্তুতের কাজ। রোপনের জন্য বীজতলা থেকে তোলা হচ্ছে ধানের কচি চারাগাছ। কৃষকদের মাঝে পাল্লা দিয়ে চলছে জমি প্রস্তুত, ক্ষেত পরিচর্যা আর বীজতলা থেকে চারা তুলে জমিতে রোপনের কাজও। প্রাকৃতিক দুর্যোগ না আসলে আর প্রয়োজনীয় বিদ্যুৎ, সার ও কীটনাশক সরবরাহ নিশ্চিত হলে চলতি মৌসুমে বাম্পার বোরো উৎপাদন হবে বলে মনে করছেন কৃষকরা। ভৈরবে এ বছর ৫ হাজার ৮শ ৫০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে উপজেলা থেকে কৃষকদের মাঝে প্রনোদনা বিতরন সহ আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে ধানের উৎপাদন বাড়াতে মাঠজুড়ে কৃষকদের পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তারা। সরকারী ভাবে কৃষকদের মাঝে উন্নত মানের কৃষি উপকরণ বিতরণ এবং আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে ধান উৎপাদনে কৃষকদের আকৃষ্ট করা গেলে দেশে কখনো আর ধান চালের সংকট হবেনা এমনটাই মনে করছেন অভিজ্ঞ মহল।
কৃষকারা জানায়, এ বছর আমন ধানের ভাল ফলন আর দাম পেয়ে আবার বোরো ধান আবাদ করছি। প্রাকৃতিক দুর্যোগ না আসলে বোরো ধান চাষেও লাভবান হবে। প্রতি বিঘা ধানের আবাদ থেকে শুরু করে ধান কাটা পর্যন্ত ১২ থেকে ১৫ হাজার টাকা খরছ হয়। বিঘা প্রতি ধান হয় ২০ থেকে ২৫ মন দরে। হাজার টাকা মন দরে ধান বেচতে পারলে ভালই লাভ হবে। কৃষি অফিসের পরামর্শে উন্নত জাতের হীরা ,বীনা ২৪ ও ৮৪ ধানের বীজ বপন করা হয়েছে। ফলন ভাল হলে আগামীতে আবাদ অরো বাড়ানো হবে বলেও জানান তারা।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আকলিমা বেগম বলেন, ভৈরবে এ বছর ৫ হাজার ৮শ ৫০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। আমাদের এ লক্ষমাত্রা অনুযায়ী আমাদের মাঠ পর্যায়ের উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তারা সার্বক্ষনিক কৃষকদের পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন। এ ছাড়াও সরকারের পক্ষ থেকে বোরো ধানের যে প্রনোদনা দিয়েছে সে কারণে আশা করছি লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অর্জনটা বেশিই হবে। বীজতলা থেকে শুরু করে ধান কাটা পর্যন্ত আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে ভাল ফলন পেতে কৃষকদেরকে পরামর্শ দেওয়া হচেছ।