ইয়াছিন মোল্লা( সোনারগাঁও প্রতিনিধি)
নারায়ণগঞ্জ, সোনারগাঁয়ে মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডের আসামি পৌরসভার দত্তপাড়া এলাকায় দুই উপ-পরিদর্শক (এসআই) নিহত হওয়ার পর পলাতক আসামীকে ৯ দিন পর গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ২৬ শে জানুয়ারি বুধবার তাকে চট্টগ্রামের লোহাগড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারের পর ওই আসামীকে বিকেলে নারায়ণগঞ্জ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জায়েদুল আলম।
পুলিশের একাধিক সূত্র জানায়, ১৭ জানুয়ারি সোমবার গোপন সূত্রে খবর ছিল টেকনাফ থেকে ৫০ হাজার ইয়াবার একটি চালান আসছে, খবর পেয়ে সোনারগাঁয়ের মেঘনা টোলপ্লাজায় তল্লাশি চৌকি বসায় পুলিশ। এ সময় আসামির গাড়িকে সিগন্যাল দিলে এক কনস্টেবলকে আহত করে দ্রুত পালিয়ে যাবার চেষ্টা করে। পরে পুলিশের আরেকটি টিম মোগড়াপাড়া এলাকায় ধাওয়া করে আসামি আলমগীর হোসেনকে গাড়িসহ এবং ৪২ হাজার ইয়াবা বড়িসহ গ্রেফতার করে।
গ্রেফতারের পর আসামিকে নিয়ে তারা সরাসরি জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে চলে যায়। এ সময় আসামিই গাড়ি চালায়। এসপি অফিসে তাদের নিয়ে সংবাদ সম্মেলনের পর আসামিকে নিয়ে থানায় রওয়ানা দেন দুই এসআই ও এক এএসআই। তবে, তাদের তিনজনের কেউই গাড়ি চালাতে পারেন না, ফলে আসামিকে দিয়েই গাড়ি চালানো হয়। আসামি গাড়ি চালিয়ে সোনারগাঁয়ের দত্তপাড়া এলাকায় সন্ধ্যা পৌনে ৭ টার দিকে গাড়ি থেকে কৌশলে লাফিয়ে পড়ে গাড়ি খাদে ফেলে পালিয়ে যায়।
দুর্ঘটনার পর স্থানীয়রা দুই এসআইকে উদ্ধার করে সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন। এছাড়াও আরো এক সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) আহত হন। আহত এএসআইকে মুমূর্ষু অবস্থায় রাজারবাগ পুলিশ লাইন হাসপাতালে পাঠানো হয়। নিহতরা হলেন- ফরিদপুরের ভাঙ্গা থানার মুনসুরাবাদ গ্রামের কাজী নুরুল ইসলামের ছেলে কাজী সালেহ আহম্মেদ ও গোপালগঞ্জের চরভাটপাড়া গ্রামের ইউনুস আলীর ছেলে এসএম শরীফুল ইসলাম। তারা সোনসারগাঁ থানায় কর্তরত ছিলেন।
সোনারগাঁ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) এসএম শফিকুল ইসলাম জানান, নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে একটি প্রেস ব্রিফিং শেষে সোমবার সন্ধ্যার দিকে সোনারগাঁ থানায় কর্মরত উপ-পরিদর্শক (এসআই) কাজী সালেহ আহম্মেদ, শরিফুল ইসলাম ও সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) রফিকুল ইসলাম প্রাইভেটকার যোগে থানায় ফিরছিলেন। পথে সোনারগাঁয়ের দত্তপাড়া এলাকায় তাদের বহনকারী প্রাইভেটকারটি খাদে ফেলে আসামী পালিয়ে যায়। এ সময় স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কাজী সালেহ আহম্মেদ ও শরিফুল ইসলামকে মৃত ঘোষণা করেন।
নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, সোনারগাঁ থানার দুই পুলিশ কর্মকর্তা নিহত হওয়ার পর পালিয়ে যাওয়া আসামীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারের পর আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জায়েদুল আলম বলেন, পলাতক আসামী গ্রেপ্তারের পর রিমান্ডের জন্য আদালতে পাঠানো হয়েছে। রিমান্ড মঞ্জুর হলে জিজ্ঞেসাদে বিস্তারিত জানা যাবে।