সাইফুর রহমান শামীম,, কুড়িগ্রাম ।।কুড়িগ্রামের চিলমারী মহিলা ডিগ্রী কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ জীতেন্দ্র নাথের বিরুদ্ধে ডিগ্রী পাস প্রথম বর্ষে ছাত্রী ভর্তির টাকা আত্মসাৎ ও করোনাকালীন সময়ে অ্যাসাইনমেন্ট এর জন্য টাকা না নেয়ার সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বিনা রশিদে টাকা উত্তোলনের অভিযোগ এনে জেলা প্রশাসক বরাবরে দায়েরকৃত দুজন ছাত্রী অভিভাবকের দখিলকৃত অভিযোগের আলোকে তদন্ত শুরু করেছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। অভিযোগ সূত্রে জানাযায়, গত ০১-১২-২০২১ ইং মোঃ হাসানুজ্জামান সবুজ, পিতা- মোঃ আব্দুল হামিদ. গ্রাম- বজরা তবকপুর (ব্যাপারীর বাজার) ও মোঃ রাব্বী সরকার রাসেল, পিতা- মোঃ মতিয়ার রহমান, গ্রাম-পুটিমারী (কাজলডাঙ্গা), উভয়ের ডাকঘর-বালাবাড়িহাট, উপজেলা- চিলমারী, জেলা-কুড়িগ্রাম যৌথ স্বাক্ষরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার, চিলমারী, কুড়িগ্রামকে মাধ্যম করে কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক বরাবরে চিলমারী মহিলা ডিগ্রী কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে আর্থিক দূর্ণীতির লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগে মোঃ হাসানুজ্জামান সবুজ বলেছেন, তিনি গত ২৯-১১-২০২১ইং তারিখ কলেজটির ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ জীতেন্দ্র নাথের অফিস কক্ষে গিয়ে তার স্ত্রী জেসমিন আক্তারকে ডিগ্রী পাস ১ম বর্ষে ভর্তির জন্য মোট এক হাজার ছয়শত টাকা ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের হাতে দেন। তিনি উক্ত টাকা গ্রহণের পরবর্তীতে আটশত টাকা রশিদমুলে কলেজ ফান্ডে জমা করে তার দেয়া বাকী টাকা আত্মসাত করেন। অপরদিকে আরেক ছাত্রীর অভিভাবক মোঃ রাব্বী সরকার রাসেল তার অভিযোগে উল্লেখ করেছেন যে, তার বোন মারিয়া আক্তার মীম ও ভাগ্নী মোছাঃ নিশা মনি (দুজনই উক্ত কলেজের এইচ,এস,সি ১ম বর্ষের ছাত্রী) করোনাকালীন সময়ে অ্যাসাইনমেন্ট এ অংশ গ্রহণ করে। সরকারিভাবে সুস্পষ্ট নির্দেশনা ছিল, অ্যাসাইনম্যান্টের জন্য কোন টাকা বেসরকারি স্কুল -কলেজের কর্তৃপক্ষ কোন অবস্থাতেই নিতে পারবে না। অথচ তার বোন-ভাগ্নিসহ প্রতিটি ছাত্রীর নিকট থেকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ তার অধীনস্ত সহকারী অধ্যাপক মোঃ নুর ইসলাম ( হিসাব বিজ্ঞান বিভাগ) এর মাধ্যমে অ্যাসাইমেন্টের জন্য প্রতি পত্রে চল্লিশ টাকা করে বিনা রশিদে উত্তোলন করেন। এছাড়াও মোঃ রাব্বী সরকার রাসেলের ভাগ্নি নিশা মনির প্রথম বর্ষে ভর্তির সময় ভাগ্নির নিকট থেকে এক হাজার আটশত টাকা ও তার বোন মারিয়া আক্তার মীম এর ভর্তির জন্য রাসেলের নিজের নিকট থেকে এক হাজার সাত শত টাকা ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নিজেই গ্রহণ করেন। কিন্ত নিশা মনির রশিদে ফ্লুইড ব্যবহার করে, এক হাজার টাকা এবং তার বোনের ক্ষেত্রে সাতশত টাকা কলেজ ফান্ডে জমা দেখান। অভিযোগকারীগণ উক্ত কলেজের অ্যাসাইনমেন্ট, ২০২০-২০২১ সালের এইচ,এস,সি ভর্তি সহ চলমান ছাত্রী ভর্তি কার্যক্রমের আর্থিক বিষয়টি তদন্তপূর্বক উক্ত ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ জীতেন্দ্র নাথ বর্মনের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের আবেদন জানান। উক্ত আবেদনের প্রেক্ষিতে চিলমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মাহবুবুর রহমান গত ২১ ডিসেম্বর ২০২১ (০৬ পৌষ ১৪২৮) ইং তারিখে তার অফিস পত্র স্মারক নং-০৫.৪৭.৪৯০৯.০০০.০২.০৩৬.২১-১২৮৮ মারফৎ তার অফিসে দাখিলীয় অভিযোগ খানা জেলা প্রশাসক বরাবরে অবগতি ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রেরণ করেন। এদিকে উক্ত অভিযোগের আলোকে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট, কুড়িগ্রাম উত্তম কুমার রায় ৩০/০১/২২ ইং তারিখে তার নিজ স্বাক্ষরিত জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, কুড়িগ্রাম থেকে অফিস স্মারক নং ০৫.৪৭.৪৯০০.০২১..০২.০০১.২০-১৫ তারিখ- ৩০ জানুয়ারি ২০২২ইং (১৬ মাঘ,১৪২৮ বাং) অফিস পত্র মারফৎ চিলমারী মহিলা ডিগ্রী কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে আর্থিক দূর্ণীতির বিষয়ে মোঃ হাসানুজ্জামান সবুজ ও মোঃ রাব্বী সরকার রাসেল কে ডেকে স্বাক্ষরকারীর অফিস কক্ষে গত ০৭/০২/২০২১ খ্রিঃ তারিখ সকাল ১১টায় শুনানী গ্রহণ করেন। একই দিনে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ জীতেন্দ্র নাথ বর্মনের শুনানী অনুষ্ঠিত হয় মর্মে উক্ত অফিস সূত্রে জানাগেছে।