হেলাল হোসেন কবির।।
চার ঘন্টার ব্যবধানে লালমনিরহাটে নার্সিং কলেজের এক ছাত্র ও ব্রাকের নারী কর্মী’র মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয়দের কাছ থেকে জানা যায়, মঙ্গলবার (১৫ ফেব্রুয়ারী) বিকালে লালমনিরহাট নার্সিং কলেজ ক্যাম্পাসের আবাসিক হলের নিজ কক্ষ থেকে আল আমিন সরকার আবির নামে এক শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আল আমিন সরকার আবির টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার শহর গোপিনপুর (আষারিয়া চালা) গ্রামের মোঃ সাইফুল ইসলামের ছেলে। সে বিএসসি ইন নার্সিং প্রথম বর্ষের ছাত্র ছিলেন। কলেজের আবাসিক ছাত্রাবাসের দ্বিতীয়তলার একটি কক্ষে সহপাঠী রনি আহমেদের সঙ্গে থাকতেন।
একই তরিখে রাত ৮.৩০ ঘটিকার দিকে মহেন্দ্রনগরের হাড়িভাঙ্গা এলাকা থেকে মোছাঃ সামছুন্নাহার শিমা (২৩) নামেট ব্র্যাক এনজিও’র কর্মীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তিনি হাড়িভাঙ্গা এলাকার রবিউল ইসলাম মানিক নামে এক শিক্ষকের বাড়িতে ভাড়ায় থাকতেন। সামছুন্নাহার শিমা মানিকগঞ্জ জেলার সিংগাইর থানার বুমদক্ষিন এলাকার আব্দুল কাদেরের মেয়ে এবং ব্রাক এনজিও’র তথ্য বিশ্লেষণ এবং প্রযুক্তিগত সহকারী এর তত্বাবধানে একজন মাঠ কর্মী।
নিহত সামছুন্নাহার শিমার সহকর্মী মোঃ রুমেল মিয়া জানান, আমরা ব্রাকের আওতাধীন তথ্য বিশ্লেষণ এবং প্রযুক্তিগত সহকারী হিসেবে চারজন নারী ও তিন পুরুষ কাজ করছি এবং স্থানীয় শিক্ষক রবিউল ইসলাম মানিকের বাড়িতে ভাড়ায় থাকি। গত ১৩দিন আগে শিমা সড়ক দুর্ঘনার কবলে পড়ে অসুস্থ হওয়ায় সে ছুটিতে ছিল। প্রতিদিনের ন্যায় আজকেও তাকে বাসায় রেখে আমরা বাকী ৬জন কাজে বাহির হই। সন্ধ্যায় ফিরে তার রুমটি ভিতর থেকে আটকানো দেখে তাকে ডাক দেই। অনেক ডাকাডাকি ও ফোনে কল করে কোন সাড়াশব্দ না পেয়ে বিষয়টি বাড়িওয়ালাকে জানাই এবং আমরা জানালা খুললে সিলিং ফ্যানের সাথে তার ঝুলন্ত মরদেহ দেখতে পাই। পরে পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে।
অপরদিকে বিকেলে নার্সিং কলেজের আবাসিক হল রুম থেকে নিহত আল আমিনের রুমমেট রনি আহমেদ জানায়, দুপুরে খাবারের সময় হলে আমরা আমাদের হলের সব শিক্ষার্থী খেতে যাই। তখনও সে রুমের মধ্যেই ছিলো। খাবার শেষে হলে ফিরে দেখি কক্ষটি ভিতর থেকে আটকানো। পরে অনেক ডাকাডাকি করলেও কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে তার ফোনে কল করলেও সে রিসিভ করছিলো না। রুমে ঢোকার চেষ্টা করে ব্যর্থ হলে বিষয়টি আমাদের অধ্যক্ষ সাহেবা বেগমকে অবগত করি। পরবর্তীতে অধ্যক্ষসহ কয়েকজন শিক্ষক ও হলে থাকা শিক্ষার্থীকে নিয়ে দরজা ভেঙে ভিতরে প্রবেশ করলে আলামিনের ঝুলন্ত মরদেহ দেখতে পান। পরে পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে প্রেরন করে।
লালমনিরহাট সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শাহা আলম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, দুটি ঘটনাই আত্মহত্যা বলে প্রাথমিক ভাবে ধারনা করা হচ্ছে। দুটি লাশই উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠিয়ছি। রিপোর্ট হাতে এলেই বিস্তারিত জানা যাবে।