

স্বপন কুমার রায় খুলনা ব্যুরো প্রধান খুলনার দাকোপে ভেঙে যাওয়া বাঁধ দু’দিনেও আটকানো সম্ভব হয়নি। প্লাবিত এলাকায় খাদ্য পানির তীব্র সংকট। ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা পরিদর্শনকালে জেলা প্রশাসক দ্রুত বাঁধ নির্মানের আশ্বাস দিয়েছেন। গত মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১ টার দিকে ঢাকী নদীর পানির তোড়ে ভেঙে যায় দাকোপের তিলডাঙ্গা ইউনিয়নের বটবুনিয়া এলাকার আনুমানিক ২ শত ফুট বেড়ীবাঁধ। এ ঘটনায় তিলডাঙ্গা ইউনিয়নের উত্তর কামিনীবাসিয়া, বটবুনিয়া, নিশানখালী, আড়াখালী, দক্ষিন কামিনীবাসিয়া, ভাদলা বুনিয়া, মশামারী, গড়খালী ও কাকড়া বুনিয়া এলাকা কমবেশী প্লাবিত হয়েছে। অব্যহত জোয়ার ভাটায় উত্তর কামিনীবাসিয়া, বটবুনিয়া, নিশানখালী, আড়াখালী গ্রামের বাসিন্দারা আছে অবর্ননীয় দূর্ভোগে। অনেকে হয়েছেন গৃহহারা। আশ্রয় নিয়েছেন খোলা আকাশের নীচে। অনেকে আবার নিজ বাড়ীতে পানিবন্দি জীবন কাটাচ্ছে। এ ঘটনায় প্রায় ৩ হাজার বিঘা জমির আমন ধান পানির নীচে তলিয়ে আছে। ভেসে গেছে শত শত ঘের ও পুকুরের মাছ। তলিয়ে আছে সব্জির ক্ষেত। সব মিলে ক্ষতির পরিমান শত কোটি টাকা হতে পারে বলে প্রাথমিক ভাবে ধারনা করা হচ্ছে। দূর্গত এলাকায় এখন খাদ্য পানির তীব্র সংকট। বুধবার ভোর থেকে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত পানি উন্নয়ন বোর্ড অন্তত ৩ দফা বাঁধ আটকানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছেন। জোয়ারের প্রচন্ড ¯প্রাবিত আর মাটির স্বল্পতা বাঁধ আটকানোর বড় অন্তরায় বলে জানা গেছে। ঘটনার পর থেকে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নেতৃত্বে দাকোপ উপজেলা প্রশাসন সার্বক্ষনিক সেখানে অবস্থান করে মেরামত কাজ তদারকি করছেন। বৃহস্পতিবার সকালে ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেন খুলনার জেলা প্রশাসক মোঃ তৌফিকুর রহমান। এ সময় পানি উন্নয়ন বোর্ডের বিভাগীয় পর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। জেলা প্রশাসক পানিবন্দি মানুষের সাথে কথা বলে তাদের দূর্ভোগের কথা শোনেন। এ সময় তিনি তাদের মাঝে শুকনো খাবার চিড়া গুড়সহ চাউল ডাউল তৈল লবন হলুদ ও মসলার ত্রান সামগ্রী বিতরন করেন। এ সময় তিনি দূর্গতদের আশ্বস্থ করে বলেন, খুব দ্রুত বাঁধ আটকানোর জন্য সকল উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তাছাড়া এ ঘটনায় আপনারা যারা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন তাদের তালিকা তৈরী করার জন্য উপজেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে আপনাদের সহায়তা করা হবে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের খুলনার নির্বাহী প্রকৌশলী আশরাফুল আলম বলেন, ¯্রােতের তীব্রতা এবং মাটির স্বল্পতার কারনে বাঁধ আটকাতে বেগ পেতে হচ্ছে। তবে বৃহস্পতিবার রাতের মধ্যে বাঁধ আটকানো সম্ভব হবে বলে তিনি আশা করছেন। উপজেলা প্রশাসন দূর্গত ১৬০ পরিবারের মাঝে শুকনো খাবার এবং ১২০ পরিবারের মাঝে চাউল ডাউল তৈল লবন হলুদ ও মসলার ত্রানের প্যাকেজ বিতরন করেছেন বলে জানিয়েছেন।