সাইফুর রহমান শামীম, কুড়িগ্রাম:
ভারতীয় সীমান্ত লাগোয়া কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার পাথরডুবি ইউনিয়নের ঝাকুয়াটারী সীমান্তে বাঘ আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটছে সীমান্তবাসী মানুষের। আতঙ্কগ্রস্ত স্থানীয়রা লাঠি হাতে রাত জেগে পাহারা দিচ্ছেন।
রোববার (২৭ মার্চ) উপজেলা বনবিভাগ কর্মকর্তা দক্ষিণ বাঁশজানী গ্রামের ঝাকুয়াটারী সীমান্ত গ্রাম পরিদর্শন করেছেন। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্যরা রাতে সীমান্ত পাহারা দেওয়ার পাশাপাশি সীমান্তবাসী যাতে ভয় না পায় সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখছেন।
সীমান্তবাসী সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার (২৫ মার্চ) দিনগত গভীর রাতে দক্ষিণ বাঁশজানী গ্রামের ঝাকুয়াটারী সীমান্ত গ্রামের বাসিন্দা কফিল উদ্দিন ও তার পরিবারের সদস্যরা বাড়ির গেটে দুটি বাঘ দেখতে পান। পরে বিষয়টি তারা সীমান্তবাসীকে অবহিত করলে পুরো এলাকাজুড়ে বাঘ আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
প্রত্যক্ষদর্শী ঝাকুয়াটারী গ্রামের বাসিন্দা কফিল উদ্দিন জানান, গভীর রাতে বাঘের গোঙানির শব্দ পেয়ে আমার স্ত্রী আমাকে ঘুম থেকে ডেকে তোলার পর দুইজনে জানালা খুলে বাড়ির গেটে দুটি বাঘ দেখতে পাই। স্থানীয়রা আমার কথা শুনে প্রথমে বিশ্বাস না করলেও শনিবার (২৬ মার্চ) বিকেলে একটি বাঁশঝাড়ে প্রাণী দুটিকে তারা নিজ চোখে দেখার পর পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। এরপর থেকে লাঠি হাতে রাত জেগে পাহারা দিচ্ছেন সীমান্তবাসীরা।
মইদাম দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষক আনোয়ার হোসেন জানান, শনিবার বাদ মাগরিব তার বাড়ির পেছনের বাগানে কালো ডোরাকাটা চিতাবাঘ সদৃশ্য দুটি প্রাণী দেখতে পাই। তবে, প্রাণী দুটি চিতাবাঘ অথবা অন্য কোনো প্রাণী কিনা সে বিষয়ে আমি নিশ্চিত হতে পারিনি।
ভূরুঙ্গামারী উপজেলার পাথরডুবি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আব্দুস সবুর বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, আমি ঘটনাটি শুনেছি। তবে, এলাকাবাসীর মধ্যে ভীতি ছড়িয়ে পড়ায় শনিবার রাতেই বিষয়টি থানা পুলিশকে অবহিত করা হয়েছে। সীমান্তবাসী ও বিজিবি সদস্যরা দিনে রাতে ওই সীমান্ত এলাকা পাহার দেওয়ার পাশাপাশি সজাগ দৃষ্টি রাখছে।
ভুরুঙ্গামারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর হোসেন জানান, এলাকাবাসী আমাকে বিষয়টি জানিয়েছে। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বনবিভাগকে অবহিত করা হয়েছে। তবে, এলাকাটি ভারতীয় সীমান্ত ঘেঁষা হওয়ায় অনেক সময় মেছো বাঘ ঢুকতেও পারে। তাই প্রাণী দুটিকে হত্যা না করে আটক করে বনবিভাগে হস্তান্তর করার জন্য সীমান্তবাসীর প্রতি আহবান জানিয়েছেন তিনি।
ভূরুঙ্গামারী উপজেলা বন বিভাগের কর্মকর্তা নবির উদ্দিন জানান, আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলেছি। তবে, ওই প্রাণী দুটি বাঘ কিনা সেটি এখনো নিশ্চিত হতে পারিনি। বাঘের অস্তিত্ব নিশ্চিত হলেই ঢাকা থেকে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এসে বাঘ দুটিকে উদ্ধার করবে।